সুপ্রভাত ডেস্ক »
রাজনৈতিক অস্তিরতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ও দেশের মানুষের প্রতি পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’ থাকার কথা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং দেশ ছাড়ার পর এই কথা জানালো সংস্থাটি। এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর মঙ্গলবার সংসদ ভেঙ্গে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। হাসিনার পদত্যাগ দেশে নতুন নির্বাচনের পথ পরিষ্কার করেছে। এই আন্দোলনে শত শত মানুষ নিহত হয়েছেন।
উদীয়মান বাজার–বিশেষজ্ঞ টেলিমারের তথ্যানুসারে, আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক থেকে পাওয়া দীর্ঘমেয়াদি ঋণ বাংলাদেশের মোট জিডিপির প্রায় এক–চতুর্থাংশ। তাই দেশের অর্থনীতির জন্য এই প্রতিষ্ঠানগুলোর সমর্থন গুরুত্বপূর্ণ।
গত বছরের জানুয়ারিতে আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের একটি ঋণ অনুমোদন করে। সংস্থাটির এক মুখপাত্র বলেছেন, বাংলাদেশের ঘটনাবলির দিকে নজর রাখছে আইএমএফ। দেশে সংঘটিত ‘প্রাণহাণি ও হতাহতের ঘটনায়’ গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
ই–মেইলে পাঠানো একটি বিবৃতিতে ওই মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ ও দেশটির জনগণের প্রতি পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির চেষ্টাকে আমরা সমর্থন করি।’
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি ঋণের ওপর কী প্রভাব ফেলতে পারে তা খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সোমবার এই কথা জানায় প্রতিষ্ঠানটি। এসময় বাংলাদেশের উন্নয়নে তাদের অঙ্গীকার আগের মতোই আছে বলে নিশ্চিত করে। চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশকে ২৮৫ কোটি ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিশ্বব্যাংক।
বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার কোনও বন্ড নেই এবং দেশের স্বল্পমেয়াদি ঋণ জিডিপির মাত্র ৫ শতাংশ। তাই আর্থিক বাজারে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব সম্পর্কে সীমিতই ধারণা পাওয়া যায়।
তবে সাম্প্রতিক আন্দোলনের পেছনে বাংলাদেশের স্থবির অর্থনীতি ভূমিকা রেখেছে। দেশের ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে ৩ কোটি ২০ লাখ যুবক কর্মহীন অথবা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। এখানে মূল্যস্ফীতি প্রায় ১০ শতাংশের কাছাকাছি। আর দেশে মাত্র তিন মাসের আমদানি খরচ মেটানোর মতো রিজার্ভ রয়েছে।
খবরে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সরকার ও সামরিক বাহিনীর পরবর্তী পদক্ষেপগুলো ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করবে বহুপাক্ষিক ঋণদাতারা।
টেলিমারের হাসনাইন মালিক বলেছেন, ‘আইনি পরিপ্রেক্ষিতে একটি সামরিক অভ্যুত্থান দেশটির বাইরের বহুপাক্ষিক নতুন সার্বভৌম ঋণ পাওয়ার সম্ভাবনাকে ঝুঁকিতে ফেলবে।’