প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে অনিন্দ্য ব্যানার্জী
নিজস্ব প্রতিবেদক :
‘বাংলাদেশের উন্নয়ন এখন বিশ্বে উদাহরণ। অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে উন্নতির পেছনে মূল চালিকাশক্তি হলো এই দেশের পরিশ্রমী জনগণ। বাংলাদেশের এই অগ্রগতিতে ভারতবাসী আনন্দিত।’
ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে সহকারী হাই কমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জী একথা বলেন। গতকাল সন্ধ্যায় নগরের র্যাডিসন ব্লু তে এই অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অংশ নেন।
চট্টগ্রামে তিন বছরের দায়িত্ব পূর্ণ করার কথা উল্লেখ করে অনিন্দ্য ব্যানার্জী বলেন, ভিসা প্রক্রিয়া এখন অনেক সহজ করা হয়েছে। ২০১৯ সালে চট্টগ্রাম থেকে ২ লাখ ৩০ হাজার জনকে ভিসা দেয়া হয়েছে। যা একটি রেকর্ড। ভারতীয় ভিসার ক্ষেত্রে বিশ্বে ঢাকার পরে দ্বিতীয় বৃহত্তম ভিসা প্রদানকারী কেন্দ্র হচ্ছে চট্টগ্রাম। প্রান্তিক ও দূরবর্তী এলাকার নাগরিকদের ভিসা প্রদানে আমরা কুমিল্লা, নোয়াখালী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিনটি ভিসা আবেদনকেন্দ্র চালু করেছি।
শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে ভারত সাধ্যমত সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে উল্লেখ করে অনিন্দ্য ব্যানার্জী বলেন, প্রতিবছর ভারত সরকার ২০০ বাংলাদেশি ছাত্র-ছাত্রীকে বৃত্তি প্রদান করছে। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা উত্তরাধিকারীদের উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে বৃত্তি প্রদান করে থাকে।
প্রতিবেশী সম্পর্কে ভারতের নীতি উল্লেখ করে অনিন্দ্য ব্যানার্জী বলেন, ভারত একসাথে সবার উন্নতি অনুসরণ করে। আমাদের কাছে প্রতিবেশী প্রথমে এবং প্রতিবেশীদের মধ্যে বাংলাদেশ সবার আগে। দুই দেশের অর্থনীতি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক যেকোন সময়ের চেয়ে ভালো। ভারত সরকার উপহার হিসেবে বাংলাদেশকে ২০ লাখ ডোজ টিকা দিয়েছে। এছাড়া ইতিমধ্যে ভারত-বাংলাদেশ পণ্য পরিবহন শুরু হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের পাশে প্রতিবেশী ভারতের জনগণ দাঁড়িয়েছিল উল্লেখ করে অনিন্দ্য ব্যানার্জী বলেন, বাংলাদেশের এককোটি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছিল ভারত। এছাড়া আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জোরালো কূটনীতি, স্বাধীনতার স্বীকৃতি প্রদান এবং নানা দেশের সমর্থন আদায়ে প্রয়াস ছিল ভারতের।
ভারতবর্ষের আধুনিক গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠায় অবদান ছিল চট্টগ্রামের বীর স্বাধীনতাপ্রেমী মানুষ মাস্টারদা সূর্য সেন, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, যাত্রামোহন সেনগুপ্ত, যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত। তাঁদের জন্মভূমি ও কর্মভূমি এই দুটোতেই আমি যেতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি।
প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি বলেন, মুুক্তিযুদ্ধে ভারত ও বাংলাদেশের একত্রিত যৌথ বাহিনী মাত্র ১৩ দিনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনেছে। এটা একটি বিশ্ব রেকর্ড। ভারত শুধু আমাদের জনগণকে আশ্রয় দেয়নি, মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রশিক্ষণও দিয়েছে। অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপি।
অন্যানের মধ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, আবু রেজা মোহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী, মোছলেম উদ্দীন আহমদ, খাদিজাতুল আনোয়ার, জাফর আলম ও কানিজ ফাতেমা আহমেদ প্রমুখ।