সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক :
ম্যাচ শেষে আজ রাতে ঘুমাতে পারবেন তো বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা? বল হাতে বা ফিল্ডিংয়ে এমন হতশ্রী পারফরম্যান্স হয়তো তাদের নিজেদের কল্পনাতেও ছিল না। তবে হয়েছে এমনই। সুযোগ কাজে লাগাতে ভোলেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশকে লজ্জায় ডুবিয়ে সিরিজের প্রথম টেস্ট তিন উইকেটে জিতেছে ক্যারিবীয়রা।
চট্টগ্রাম টেস্টের শেষ দিনে ম্যাচ জিততে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন ছিল ২৮৫ রান। ছিল না টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান। তবে সারাদিনে বল হাতে বাংলাদেশ শিকার করতে পেরেছে মাত্র চারটি উইকেট। এরপর যেটুকু আশা জেগেছিল, ক্যারিবীয়দের দৃঢ়তায় তা মিলিয়ে যেতেও খুব বেশি সময় লাগেনি।
মূলত দুই অভিষিক্ত ব্যাটসম্যান কাইল মেয়ার্স আর ক্রুমাহ বোনারের ২১৬ রানের জুটিই বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়েছে। আলাদাভাবে মেয়ার্সের কথা না বললেই নয়। অভিষেক টেস্টেই দ্বিশতক করে রেকর্ডের পাতায় নাম লিখে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন তিনি।
ব্যাটসম্যানদের নৈপুণ্যে বাংলাদেশের দেয়া ৩৯৫ রানের লক্ষ্য মাত্র ৬ উইকেট হারিয়েই পেরিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মেয়ার্স অপরাজিত থাকেন ২১০ রানে। সাজঘরে ফেরার আগে বোনার করেছিলেন ৮৬ রান। চতুর্থ দিন মিরাজের শিকার করা ৪ উইকেটই এই ইনিংসে টাইগারদের সেরা বোলিং ফিগার।
নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৪৩০ রান করেছিল বাংলাদেশ। জবাবে উইন্ডিজ ক্রিকেট দল অল আউট হয়েছিল ২৫৯ রানে। ১৭১ রানের বড় লিড নিয়ে ব্যাট করতে নেমে ২২৩ রানে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস ডিক্লেয়ার করেছিলেন মুমিনুল হক। সে সময় হয়তো মনে হয়েছিল এটাই ছিল সঠিক সিদ্ধান্ত। তবে বাংলাদেশের বোলিং ব্যর্থতা বা উইন্ডিজ ক্রিকেটারদের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে শেষ হাসি হেসেছে ক্যারিবীয়রাই।
নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জিতলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এর আগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২০০৩ সালে ৪১৮ রান তাড়া করে জিতেছিল তারা। সেটাই এখনো তাদের সর্বোচ্চ। ১৯৬৯ সালে নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডে ৩৪৮ রান তাড়া করে জয়কে গতকাল পেছনে ফেলেছে ক্যারিবীয়রা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় সারির দলের বিপক্ষে এমন পরাজয় মেনে নেয়া যেকোনো সমর্থকদের জন্যই কঠিন। তবে অভিষিক্ত ও আনকোরা ক্যারিবিয়রা যেন বাংলাদেশের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, টেস্ট এভাবেই খেলতে হয়। স্ট্যাটাস পাওয়ার দুই দশক পরও এমন দলের কাছে এভাবে হারা যেন সাদা পোশাকে বাংলাদেশের দৈন্যতাই তুলে ধরেছে।
এরপরও বাংলাদেশের লজ্জা হবে তো? নাকি এখনো শেখার পালা চলতেই থাকবে? উত্তরটা ভবিষ্যতের কাছেই তোলা থাক।



















































