এবারের বন্যার সম্পূর্ণ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত হয়নি। ফসলের সঙ্গে মানুষের বাড়িঘর, পুকুরের মাছ, গবাদিপশুসহ অনেককিছুর ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে সড়ক যোগাযোগও একটি। চট্টগ্রাম জেলায় বন্যার কারণে ফটিকছড়ি উপজেলার ১৪টি সড়কের ১৯৭ কিলোমিটার অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙেছে ৪৫টি সেতু ও কালভার্ট। টাকার হিসাবে প্রায় দুশ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
গত আগস্টে পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, রাউজান, হাটহাজারী, বোয়ালখালীসহ বিভিন্ন উপজেলা। বন্যায় তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, ফসলি জমি। ফটিকছড়ির পর মিরসরাই উপজেলার রাস্তাঘাট বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই উপজেলায় ৯২টি সড়কের ১৮০ কিলোমিটার ও দুটি কালভার্ট ভেঙে গেছে। কোনো কোনো সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ৫৬ কোটি ৯৮ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার শান্তিরহাট থেকে আবুরহাট যাওয়ার প্রায় ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটিতে গাড়ি আর পথচারী পাশাপাশি চলতে পারছে না। সড়কজুড়ে বড় বড় গর্ত। কোনো কোনো গর্তে এখনো পানি জমে আছে। শান্তিরহাটের বাসিন্দা গোপাল কান্তি দাশ প্রথম আলোকে বলেন, মিঠাছড়া বাজার থেকে দারোগাহাট, কাটাছড়া, ঝুলনপুর ও ইছাখালী পর্যন্ত যাওয়ার সড়কটি বেহাল হয়ে গেছে। সড়কের বিভিন্ন অংশে গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন চলাচলে সমস্যা ক্ষতবিক্ষত নারায়ণহাট-নেপচুন চা-বাগান সড়কের বিভিন্ন অংশ। কোথাও কোথাও তৈরি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত।
এলজিইডি চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসান আলীর মতে, বন্যায় চট্টগ্রাম জেলার ৪৩৩টি সড়কের ৮৩৪ কিলোমিটার ও ৭৩টি সেতু-কালভার্ট ভেঙে গেছে। এতে প্রায় ৬২৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে।
ফটিকছড়ি ও মিরসরাই উপজেলার পর সবচেয়ে বেশি সড়ক ভেঙেছে বোয়ালখালীতে। এই উপজেলায় ১০৭ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি ছয়টি কালভার্টও ভেঙেছে। এ ছাড়া হাটহাজারীতে ৫৭ কিলোমিটার, সন্দ্বীপে ৫৫. বাঁশখালীতে ৪৬, রাঙ্গুনিয়ায় ৩০, রাউজানে ২৬, আনোয়ারায় ২৪, সীতাকুণ্ডে ২৩, চন্দনাইশে ২২. পটিয়ায় ২২, সাতকানিয়ায় ১৯ ও লোহাগাড়ায় ১৮ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করার অন্যতম উপায় হলো সর্বাগ্রে সড়ক মেরামতে মনোযোগ দেওয়া। এই বন্যায় বিপুল পরিমাণ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একেতো নিম্নমানের সামগ্রীর ব্যবহার অন্যদিকে বর্ষার কারণে দেশের সড়কগুলোর স্থায়িত্ব কম। কাজেই জনগণকে ভোগান্তি লাঘবে সরকার সড়ক সংস্কারে হাত দেবে বলে আশা করি।
এ মুহূর্তের সংবাদ