অতি সম্প্রতি পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর গত এক বছরে চট্টগ্রামে পোশাক, ইস্পাতসহ বিভিন্ন খাতের ৫০টি কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। অস্থায়ীভাবে বন্ধ আছে আরও ৬৭টি কারখানা।
শিল্প পুলিশের তালিকায় বলা হয়েছে, স্থায়ীভাবে বন্ধ হওয়া ৫০টি কারখানার শ্রমিক সংখ্যা ৮ হাজার ৭৪৩ জন। অস্থায়ীভাবে বন্ধ থাকা ৬৭টি কারখানার শ্রমিক সংখ্যা প্রায় ৪৩ হাজার। সবমিলিয়ে ১১৭ কারখানার কারণে ৫১ হাজার শ্রমিক বেকার হয়েছেন।
শুধু কারখানা বন্ধ নয়, গত এক বছরে ৭০টি কারখানায় ৩১৫ বার শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সর্বশেষ ১৪ ও ১৫ অক্টোবর প্যাসিফিক গ্রুপের কয়েকটি কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষের কারণে কারখানাগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে গত বৃহস্পতিবার থেকে সেগুলো পুনরায় সচল হয়েছে।
শিল্প পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, আর্থিক সংকট, ঋণের পরিমাণ বেশি থাকা, ব্যাংক থেকে নতুন ঋণ না পাওয়া, এলসি জটিলতা এবং কাজের অর্ডারের অভাব—এসব কারণে কারখানাগুলো বন্ধ হয়েছে।
অন্যদিকে গতবছরের আগস্ট থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত চট্টগ্রামে ২২টি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়েছে। এর মধ্যে চলতি বছরের ১০ মাসে ১১টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। একই সময়ে ১৩টি শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড, স্টিলমিল এবং প্যাকেজিং কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়েছে।
শিল্প পুলিশের তালিকায় উল্লেখ আছে, কাজের অর্ডার না থাকা এবং মালিকপক্ষের আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে এসব কারখানা বন্ধ হয়েছে।
বিজিএমইএ’র পরিচালক রাকিবুল আলম চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, “বর্তমান বিশ্ব প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন। স্ট্রং কমপ্লায়েন্স ফ্যাক্টরি না হলে ব্যবসা চালানো কষ্টসাধ্য। মার্কিন ট্যারিফ ঘোষণার পর অর্ডার ও দাম কমেছে। ব্যাংকগুলোতে এলসি খোলা কঠিন হয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে অনেক মালিক বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পেরে ব্যবসা বন্ধ করেছেন।”
আমরা মনে করি এ ক্ষেত্রে সরকারের আন্তরিক ও কার্যকর ভূমিকা পালন করা দরকার। সরকার পরিবর্তনের পর অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যে ধস নেমেছে তা কাটিয়ে তুলতে না পারলে জনজীবনে স্বস্তি ফিরে আসবে না।
যে চিত্রটি আমরা পেয়েছি তা শুধু চট্টগ্রামের। সারা বাংলাদেশের চিত্র নিশ্চয়ই এর চেয়ে ভালো হবে না। সবার আগে দেশের অর্থনীতির দিকে যথাযথ নজর দিলে হয়তো বা এ পরিস্থিতি দেখতে হতো না।
এ মুহূর্তের সংবাদ




















































