নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, ‘নির্যাতনে ভুক্তভোগী নারীদেরকে সহায়তা করার জন্য সরকারিভাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি এ ব্যাপারে পরিবারকেও সচেতন হতে হবে। পরিবারকে অবশ্যই কন্যা সন্তানদের কথা শুনতে হবে। ধমকের সুরে নয়, বন্ধুত্বসুলভ আচরণে কন্যা সন্তানদের সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে।’
তিনি রোববার সকালে নগরের জামালখান প্রেস ক্লাব ভবনের সুপ্রভাত বাংলাদেশ মিলনায়তনে আয়োজিত ‘নির্যাতনের শিকার নারীদের মনোস্বাস্থ্য ও গণমাধ্যমের ভূমিকা’ বিষয়ক এক গোলটেবিল আলোচনায় এসব কথা বলেন।
এ গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে ডাটাফুল, দৈনিক সংবাদ, সুপ্রভাত বাংলাদেশ ও ইউনাইট থিয়েটার ফর সোশ্যাল অ্যাকশন (উৎস)।
সুপ্রভাত বাংলাদেশের সহযোগী সম্পাদক কামরুল হাসান বাদলের সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন উৎসের নির্বাহী পরিচালক মোস্তফা কামাল যাত্রা। সভায় ধারণাপত্র পাঠ করেন উৎসের প্রোগ্রাম অফিসার রিপা পালিত।
সভায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট আশরাফি বিন্তে মোতালেব, শিক্ষাবিদ ও প্রাবন্ধিক ড. আনোয়ারা আলম, মানবাধিকারকর্মী জেসমিন সুলতানা পারু, সাংবাদিক ডেইজি মউদুদ, কবি-সাংবাদিক ওমর কায়সার, চট্টগ্রাম ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির (সিআইইউ) রেজিস্ট্রার আনজুমান বানু লিমা, চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ইরা আহমেদ, উৎসের নির্বাহী সদস্য জোবায়দুর রশীদ, ইপসার ডেপুটি ডিরেক্টর মো. শহীদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মিসকাতুল মমতাজ মুমু, নারী যোগাযোগ কেন্দ্র চট্টগ্রাম মহানগরের আহবায়ক সালমা জাহান মিলি, উৎসের নির্বাহী সদস্য সৈয়দা সৈয়েদুর নেছা প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সুপ্রভাত বাংলাদেশের প্রধান প্রতিবেদক নিজাম সিদ্দিকী।
স্বাগত বক্তব্যে মোস্তফা কামাল যাত্রা বলেন, ‘নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা কেবল ব্যক্তির ক্ষতি নয়, তা সমাজের সামগ্রিক অগ্রগতির জন্যেও প্রতিবন্ধক। মনোসামাজিক সেবা নীতিমালায় নারীবান্ধব ও সহজলভ্য সেবা নিশ্চি করতে হবে।’
সভায় বক্তারা বলেন, সংবেদনশীল রিপোর্টিং ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গী নারীদের মনোবল বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। গণমাধ্যমকে হতে হবে নারী সহিংসতার বিরুদ্ধে পরিবর্তনের শক্তি। তারা নির্যাতনের শিকার নারীদের জন্যে দ্রুত মনোসামাজিক সেবা ও আইনি সহায়তার সংযোগ প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দেন।
সভাপতির বক্তব্যে সুপ্রভাত বাংলাদেশের সহযোগী সম্পাদক কামরুল হাসান বাদল বলেন, ‘নারীর প্রতি সহিংসতা রোধের জন্য নারীকে নিজের অবস্থান সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। কোন নারী নিজেকে পূর্ণ মানুষ মনে না করলে তার অধিকার সম্পর্কে সচেতনতাবোধ গড়ে উঠবে না। নারীর সামাজিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত না হলে সহিংসতার হার কমবে না।’
গোলটেবিল আলোচনার সমাপ্তি ঘোষণা করা হয় নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ ও নির্যাতনের শিকার নারীদের জন্যে দ্রুত, সম্মানজনক ও সংবেদনশীল সহায়তা নিশ্চিত করার দৃঢ় অঙ্গীকারের মাধ্যমে।