দেশের দক্ষিণাংশের বিশাল একটি এলাকা সমুদ্রতীরবর্তী। কাজেই এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আমরা নানাভাবে উপকৃত হতে পারি। সে লক্ষ্য থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন সমুদ্রবন্দরে জেটি নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ জন্য সম্ভাব্যতা যাচাই করতে বলেছেন তিনি।
২৭ নভেম্বর রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পরে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের সমুদ্রবন্দরগুলোতে টার্মিনাল বা জেটি তৈরি করার কথা বলেছেন এবং দ্রুতই এর জন্য উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন তিনি। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বলেন, আমাদের সমুদ্র তীর থাকলেও ডেক বা জেটি নেই। অনেক দেশেই সমুদ্রবন্দরে একটি জেটি থাকে, যেটি টার্মিনালের মতো। সেখানে জাহাজগুলো থাকে এবং যাত্রী নেয়। সমুদ্র ভ্রমণ শেষে আবার সেখানেই যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। প্রধানমন্ত্রী দ্রুত সমীক্ষা করে ঠিক এ ধরনেরই জেটি বা টার্মিনাল নির্মাণ করতে বলেছেন । এ ছাড়াও সভায় বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নীতিমালার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সভায় ‘জাতীয় স্বেচ্ছাসেবা নীতিমালা, ২০২৩’র খসড়াও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এটি এতদিন ছিল না। যদিও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের কৃতিত্ব বিশ্বে প্রশংসিত। স্বেচ্ছাসেবা দেশে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। দেশের যে কোন ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলায় স্বেচ্ছাসেবীরা দৃষ্টান্তমূলক ভূমিকা পালন করে । তাদের কাজকে সহজ ও স্বেচ্ছাসেবাকে উৎসাহিত করতে এই নীতিমালা করা হচ্ছে।
এই নীতিমালা অনুযায়ী স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, ছবিসহ তাদের কার্ড থাকবে, শারীরিকভাবে তাদের সুরক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে এবং আইনগত ভাবেও তাদের সহযোগিতা করা হবে।
সারা পৃথিবীতে স্বেচ্ছাসেবীদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। জানা গেছে তারা যাতে বিদেশেও স্বেচ্ছাসেবা দিতে পারে, সে ব্যবস্থাও এই নীতিমালায় থাকবে। এছাড়াও বিএনসিসি, রোভার স্কাউটসহ অন্য সকল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীদের কাজেরও স্বীকৃতি দেওয়া হবে।
এই নীতিমালা গৃহীত হলে মানুষের মধ্যে সেবার মনোভাব বৃদ্ধি পাবে। দেশের তরুণ সমাজ স্বেচ্ছাসেবায় আগ্রহের সঙ্গে এগিয়ে আসবে। যেকোনো সময় কাজের স্বীকৃতি মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে। দেশে যেহেতু প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা বেশি সেহেতু স্বেচ্ছাসেবকদের প্রয়োজনও অনেক বেশি।
বন্দরকে বহুমুখীকরণের যে প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী করেছেন তাকে এক কথায় বলতে হবে সময়োপযোগী। এমন সিদ্ধান্ত আরও আগে নিলে এতদিনে তার সুফল ভোগ করতো দেশ। যাহোক না হওয়ার চেয়ে দেরিতে হওয়াও ভালো।
এ মুহূর্তের সংবাদ