বজ্রপাতে ছয়জনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক >>
বজ্রপাতে বিভিন্ন উপজেলায় ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বজ্রপাতের বিকট শব্দে মারা গেছেন এক ব্যবসায়ী।

ফটিকছড়ি
ফটিকছড়িতে কৃষি জমিতে কাজ করতে গিয়ে বজ্রপাতে দুই মহিলার মৃত্যু হয়েছে। এসময় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও দুইজন। গতকাল রোববার সকাল ৯টায় উপজেলার কাঞ্চননগর ইউপির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মানিকপুর ডলুপাড়া নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে।
ফটিকছড়িতে বজ্রপাতের ঘটনায় নিহতরা হলেন- বানুশ্বর দাশের স্ত্রী লাকি দাশ (৩৮) ও একই গ্রামের মৃত যোগেন্দ্র শীলের স্ত্রী ভানু শীল (৪০)। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন মালতী রানী দাশ (৫০) ও শোভা রানী দে (৪৫) নামে আরও দুইজন।
স্থানীয়রা জানান, সকালে কৃষি জমিতে কাজ করতে গিয়ে তারা চারজন বজ্রপাতের কবলে পড়েন। বজ্রপাতে দুজন অজ্ঞান ও দুজন গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় আব্দুল মোনায়েম জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। বাকি দুজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেয়া হয়।ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে স্থানীয় কাঞ্চন নগর ইউপি সদস্য আফসার উদ্দিন।
মিরসরাই
মিরসরাইয়ে বজ্রপাতে এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ সময় তার পিতা আহত হয়েছেন। নিহতের নাম মো. সাজ্জাদ হোসেন (১৬)। রোববার সকাল ১০টায় উপজেলার সাহেরখালী ইউনিয়নের পূর্ব ডোমখালী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত সাজ্জাদ পূর্ব ডোমখালী গ্রামের মো. মোশারফ হোসেনের ছেলে।
নিহতের প্রতিবেশীরা জানান, গতকাল সকাল বেলা বাড়ির পাশের মাঠে বাবার সাথে জমিতে কাজ করছিলো সাজ্জাদ। সেই সময় মাঠে তীব্র শব্দে বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয় । বজ্রপাতে তার বাবা মোশারফ হোসেনও আহত হন। স্থানীয়রা তাকে মাঠ থেকে উদ্ধার করে সীতাকুণ্ড উপজেলার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়।
সাহেরখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুল হায়দার চৌধুরী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বাবার সাথে মাঠে কাজ করতে গিয়ে বজ্রপাতে সাজ্জাদ হোসেন নামে এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।
কক্সবাজার
কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীতে বজ্রপাতে এনামুল করিম নামের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। এই সময় নিহতের সাথে থাকা আরও একজন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
শনিবার রাত আনুমানিক ১১টার দিকে মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত এনামুল করিম উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের রাজুয়ার ঘোনা গ্রামের আবদুর রহিমের ছেলে।
নিহতের পরিবার জানায়, এনামুল হকসহ আরো তিন জন একসাথে মাছের প্রজেক্টে কাজ করছিল। হঠাৎ এমন সময় বজ্রপাতে এনামুল হকের মৃত্যু হয়।
এনামুল হকের সাথে থাকা অপর একজন আহত হন। তিনি মহেশখালী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বলে পারিবারিক সূত্রে জানা যায়।
বজ্রপাতের বিকট শব্দে প্রাণ গেল ব্যবসায়ীর
উপজেলার নাজিরহাট বজ্রপাতের বিকট শব্দে শফি সওদাগর (৫৫) নামে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। রোববার নাজিরহাট পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের এবিসি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত শফি ওই এলাকার আব্দুল হামিদ সর্দার বাড়ির মৃত আব্দুল আজিজের পুত্র।
জানা গেছে, এবিসি স্কুল সংলগ্নে শফি সওদাগরের একটি চায়ের দোকান রয়েছে। রোববার দুপুরে প্রাইমারি স্কুলের সামনের পুকুরে গোসল সেরে তিনি দোকানে ফিরছিলেন। ফেরার সময় বিকট শব্দে বজ্রপাত হলে দৌঁড়ে একটি দোকানে আশ্রয় নেন শফি। পরে বুকে ব্যথা শুরু হলে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। চট্টগ্রামে নেয়ার পথে তার মৃত্যু ঘটে। স্থানীয় কাউন্সিলর আবুল মনছুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বোয়ালখালী
লেবু বাগানে কাজ করার সময় বজ্রপাতে জাহাঙ্গীর নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। সকালে জৈষ্ঠ্যপুরা গরজংগিয়া পাহাড়ে লেবু বাগানে কাজ করতে গিয়েছিলেন জাহাঙ্গীর। এসময় বজ্রপাতে তিনি গুরুতর আহত হন। স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রতিবেদনটি তৈরিতে সহায়তা করেছেন কক্সবাজার প্রতিবেদক, ফটিকছড়ি, মিরসরাই প্রতিনিধিরা।