সুপ্রভাত ডেস্ক »
পশ্চিমা দুনিয়ার মতো বাংলাদেশে দারুণ জনপ্রিয় ফেসবুক-ইউটিউব৷ তবে চীনে এগুলো নিষিদ্ধ৷ তারা গড়ে তুলেছে নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম৷ নিজস্ব সামাজিক মাধ্যম আছে দক্ষিণ কোরিয়ায়ও৷ বিকল্প প্ল্যাটফর্ম গড়ার দিকে হাঁটছে বাংলাদেশও।
সাম্প্রতিক অতীতে বাংলাদেশে তথ্য প্রযুক্তি খাতে দোয়েল ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ উৎপাদন বা পিপীলিকা নামে গুগলের মতো একটি সার্চ ইঞ্জিন তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। এই দুটির কোনোটির অভিজ্ঞতাই সুখকর নয়৷ এখন আবার ফেসবুকের বিকল্প তৈরির উচ্চাভিলাষী পদক্ষেপের দিকে এগোচ্ছে সরকার।
অবশ্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলছেন, তারা তৈরি করবেন কমিউনিকেশন অ্যাপ্লিকেশন, এমনকি নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেমও।
জুমের বিকল্প হিসাবে বৈঠক নামে একটি ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম ইতিমধ্যে তৈরি হয়ে গেছে বলেও উল্লেখ করেন পলক৷ তিনি জানান, সরকারি নানা মিটিং এখন তারা সারছেন এই প্ল্যাটফর্মে৷ কিছু ডেভেলপমেন্টের কাজ শেষে এটা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।
ফেসবুকের বিকল্প নিয়ে তোড়জোড়
সম্প্রতি বাংলাদেশে ফেসবুকের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ভ্যাট আদায়ের উদ্যোগ নেয় সরকার৷ সরকারের যুক্তি ছিল, ফেসবুক হাজার কোটি টাকা এই দেশ থেকে আয় করে, কিন্তু তারা সরকারি ট্যাক্স দেয় না, এই অবস্থার পরিবর্তন হতে হবে৷ অফিস-আদালত ঘুরে এনবিআরের সাম্প্রতিক এক নির্দেশনার পর ফেসবুক বাংলাদেশে ভ্যাট নিবন্ধন নিয়েছে, ভ্যাট দেয়াও শুরু করেছে তারা।
বাংলাদেশ থেকে ফেসবুকের এই বিপুল আয়ের বিষয়টি আবারো সামনে এনে এবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক দাবি করছেন, তারা এই মাধ্যমটির বিকল্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গড়ে তুলতে চান।
শিগগিরই এটি শুরু করলেও এটিকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে তিন বছর সময় চান পলক।
তিনি বলছেন, বাংলাদেশের বিক্রেতারা বাংলাদেশের ক্রেতাদের কাছে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে বিদেশি একটা মাধ্যম ব্যবহার করে৷ এতে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে চলে যাচ্ছে৷ এখানে একটা বড় ধরনের বিসনেস মডেল দাঁড় করনো সম্ভব। দেশের তথ্যের নিরাপত্তা, সংকটকালীন পরিস্থিতি সামাল দিতে এমন উদ্যোগ প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘বলা হয়, ‘‘তথ্যই সবচেয়ে দামী, এমনকি তেলের চেয়েও দামী।’’
তিনি বলছেন, দেশে বিদেশে থাকা বাংলাদেশিদের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ-আসাম-ত্রিপুরার অধিবাসী এবং ওইসব এলাকার মানুষরা এই উদ্যোগের টার্গেট অর্ডিয়েন্স।
তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক এবং যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ফাহমিদুল হকের মতে, এরকম উদ্যোগ সফল হবার সম্ভাবনা কম৷ কারণ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জনপ্রিয় হবার জন্য যে রকম স্বাধীন সত্তা প্রয়োজন, বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের সেরকম স্বায়ত্তশাসন দেবার সামর্থ্য নেই।
‘‘যে সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করতে পারে, তাদের হাত দিয়ে সামাজিক মাধ্যমের মতো জনমুখী প্ল্যাটফর্ম তৈরি হতে পারে না৷ তবে বিটিভি ও সংসদ টিভির যেমন জনপ্রিয়তা, তেমন কিছু হতেই পারে৷ অর্থাৎ, সমর্থকদের মাধ্যম হবে। সামাজিক মাধ্যম যেমন খুব গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম, একটা সরকারের মাউথপিস হিসেবে সেরকম কিছু চালু করার মধ্যে আমি দোষের কিছু দেখি না।’’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একে জনপ্রিয় করানোর পথে প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো, এটা যে সরকার চালু করেছে, এটা ব্যবহারকারীদের যেন মাথায় না থাকে৷ তা কত দ্রুত মানুষ ভুলে যেতে পারে, সেটার ওপর এর জনপ্রিয়তা নির্ভর করবে।
‘‘তবে হ্যাঁ, বিদ্যমান সামাজিক মাধ্যমের চাইতে আকর্ষণীয় কিছু ফিচার চালু করতে পারলে কিছু ব্যবহারকারী আকৃষ্ট হতেও পারে৷ সরকারের হাত দিয়ে বাংলা সার্চ ইঞ্জিন পিপীলিকা চালু হয়েছিল একবার, সেটা কিন্তু স্থায়ী হয়নি৷ এ ধরনের উদ্ভাবনী বস্তুর জন্য যে ‘নো-হাউ’ দরকার, তার সক্ষমতা সরকারের আছে কিনা সেটা নিয়েই আমার সন্দেহ রয়েছে।’’
কোভিডকালে একদিনেরও ল্যাপটপ বিক্রি করতে পারেনি দোয়েল
স্বল্প মূল্যে মানসম্পন্ন ল্যাপটপ দেয়ার অঙ্গীকার নিয়ে ২০১১ সালে দোয়েল ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ তৈরি শুরু করে বাংলাদেশ টেলিফোন শিল্প সংস্থা- টেশিস৷ তখন এ প্রকল্পে সহায়তা করেছিল বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), মালয়েশিয়ার প্রতিষ্ঠান ‘থিম ফিল্ম ট্রান্সমিশন’ (টিএফটি) এবং কয়েকজন বিদেশি বিশেষজ্ঞ৷ সেই সময় বলা হয়েছিল, ল্যাপটপের মাদার বোর্ডসহ শতকরা ৬০ ভাগ যন্ত্রাংশ তৈরি করা হচ্ছে দেশেই।
২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে এই ল্যাপটপের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দাম কম হওয়ার কারণে এটি বাজারে এক ধরনের আকর্ষণ তৈরি করেছিল৷ কিন্তু খুব দ্রুতই মানের ক্ষেত্রে খারাপ খবর আসতে শুরু করে৷ যতটা আশা নিয়ে এই ল্যাপটপ এসেছিল, তত দ্রুত যেন সেই আশা মিইয়ে যায়৷ গত ১০ বছরে এই ব্র্যান্ডটি ৮০ হাজার ল্যাপটপ বিক্রি বা সরবরাহ করেছে৷ এর মধ্যে করোনাভাইরাস আসার পর থেকে এ পর্যন্ত হয়েছে মাত্র ৭০০ থেকে ৮০০।
বিপরীতে প্রতি মাসেই দেশে হাজার হাজার ল্যাপটপের চাহিদা রয়েছে, যদিও চাহিদার পরিমাণের সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায় না৷ অনেকে অপারেটিং সিস্টেম চালু হওয়ার দিক থেকে ল্যাপটপের বাজার হিসাব করেন৷ এসব হিসাব বলছে, প্রতি মাসে এই চাহিদা ২০ হাজারের মতো।
২০১৯ সালে এক অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছিলেন, দেশে পাঁচ কোটি ল্যাপটপের চাহিদা রয়েছে।
তাহলে কি টেশিস (টেলিফোন শিল্প সংস্থা) এর উৎপাদন সামর্থ্য নেই? এ প্রসঙ্গে এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফখরুল হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘‘প্রতিষ্ঠানটা আসলে ভেরি মাচ ক্যাপাবল।’’
তিনি বলেন, ‘‘এখানে ৫-৬টা প্ল্যান্ট আছে৷ প্রতিদিন এখানে এক শিফটে ৫০০ তৈরির সামর্থ্য রয়েছে৷ দুই শিফটেও আমরা কাজ করেছিলাম, তখন দ্বিগুণ হয়ে যাবে৷ ট্যাবের ক্ষেত্রে সামর্থ্য আরো বেশি।’’
তাহলে একদিনের লক্ষ্যমাত্রার ল্যাপটপ পুরো কোভিডকালেও বিক্রি হয়নি- এই তথ্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘‘এটা নানা কারণে সম্ভব হয়নি৷’’ তিনি আরো বলেন, ‘‘আমরা এখন উত্তরণের পর্যায়ে আছি।’’
টিভিসহ নানা নতুন পণ্যে দোয়েল বাজারে ভালোভাবে ফিরে আসবে বলেও আশা প্রকাশ করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
তিনি বলেন, ‘‘শুরুর দিকে সার্ভিস সেন্টার ছিল না৷ একজন ল্যাপটপ কিনে দূরে দূরে চলে গেছে, সামান্য সমস্যাতেও তারা স্থানীয়ভাবে সার্ভিস পায় নাই৷ এ রকম সব কিছুই আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি।’’
এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘‘দোয়েল ব্যর্থ হলেও আমাদের অন্য দুইটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ল্যাপটপ রপ্তানিও করছে।’’
যেভাবে আছে পিপীলিকা
দোয়েলের মতো এত ঢাকঢোল না পেটালেও তথ্য প্রযুক্তি খাতের আরেকটি প্রকল্প ২০১৩ সালে বড় স্বপ্ন দেখিয়ে বাজারে এসেছিল৷ সেটি হচ্ছে প্রথম বাংলাদেশি সার্চ ইঞ্জিন পিপীলিকা। এর প্রকল্প পরিচালক ছিলেন খ্যাতিমান বিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগের তৎকালীন অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
এর মুখ্য গবেষক ও টিম লিডার হিসেবে কাজ করেছেন মো. রুহুল আমীন সজিব৷ এর আগেও সার্চ ইঞ্জিন তৈরি করেছেন তিনি।
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে তৈরি হওয়া এই উদ্যোগটি একটি প্রতিষ্ঠানকে পার্টনার হিসাবে গ্রহণ করেছিল। ডেভেলপমেন্টসহ অন্যান্য কাজ করতে একদল তরুণকে নিয়োগ দিয়েছিল।
এখন ড. জাফর ইকবাল অবসরে। শাহজালালের চাকরি ছেড়ে বিদেশে চলে গেছেন রুহুল আমিন সজিবও। ভেঙে গেছে তরুণদের সেই টিম৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কিছু তরুণ এর দায়িত্ব গ্রহণ করলেও পিপীলিকার অনেক সার্ভিস এখন আর পাওয়া যায় না।
উদ্যোগটির এই অবস্থার হওয়ার সম্ভাব্য কারণ জানতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের ফোর্ডহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার ও তথ্য বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুহুল আমিন সজিব বলেন, ‘‘নানা বিষয়ে সিদ্ধান্তহীনতা এর জন্য দায়ী৷এমনকি আমার সাথে এই প্রকল্পের কী সম্পর্ক হবে-এই সিদ্ধান্তটিই বিশ্ববিদ্যালয় নিতে পারেনি।’’
তার মতে, ‘‘তাদের স্বপ্ন ছিল অনেক বড়৷ বর্তমান বাজার বিবেচনায় ধাপে ধাপে সেটি স্বপ্নে পৌঁছানোর মতো বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনাও তাদের ছিল৷ এটাকে ব্যবসায়িকভাবে টেকসই করার পরিকল্পনাও সেখানে ছিল।’’
তিনি বলেন, ‘‘গুগল যেসব সার্ভিস অন্য দেশে দেয়, কিন্তু আমাদের দেশে দেয় না; যেসব সার্ভিস তারা দেয়, সেগুলো কম মূল্যে কীভাবে আমরা দিতে পারি বা এমন কিছু সার্ভিস, আমাদের দেশে যেটার উপযোগিতা রয়েছে-এ রকম নানা কিছু চিন্তা করে আমরা পরিকল্পনা সাজিয়েছিলাম।’’
তিনি মনে করেন, বাংলা ভাষার সাথে শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মিয়ানমারসহ ভারতীয় বিভিন্ন ভাষার অনেক মিল রয়েছে৷ অল্প কিছু বিষয়ে কাজ করে সেসব ভাষায়ও সার্চ চালু করার পরিকল্পনা তাদের ছিল।
তিনি বলেন, ‘‘মনে করেন, যখন আমাদের দৈনিক ভিজিটর এক লাখে পৌঁছালো তখন উচিত আমাদের লোকবল বাড়ানো, সামর্থ্য বাড়ানো। সেটা তখন আরো কমে গেছে৷ এরকম একটা খাতে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ ও পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন৷ সেটাই আমরা পাইনি।”
তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী পলকের সঙ্গে পিপীলিকার প্রসঙ্গ তুলতেই উঠে আসে সজিবের দেশত্যাগ এবং প্রকল্প থেকে চলে যাওয়ার বিষয়টিও। তবে মন্ত্রী বলেন, ‘‘সজিব প্রকল্পে আছে এবং থাকবে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘পিপীলিকায় সামান্য পরিমাণ অর্থ দেয়া হয়েছিল৷ এটুআইয়ের পক্ষ থেকে৷ আমি পরশু দিনও বসেছিলাম, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের টিমের সঙ্গে৷ সেখানে বলেছি, পিপীলিকা নিয়ে আমরা বিব্রত হচ্ছি৷ এটার কারেন্ট স্ট্যাটাস আমরা জানতে চাই। তারা বলেছেন, আরো কিছু গবেষণার অর্থ প্রয়োজন৷ আমরা সেটা বিশ্ববিদ্যালয়কে দেবো।’’
‘‘আমরা কিন্তু সবই ইউনিভার্সিটিতে সেট-আপ করেছি৷ এটা যে একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প সেটা আমাদেরকে মনে রাখতে হবে৷’’
‘‘গুগলের বিকল্প পিপীলিকা কালকেই হবে না। কিন্তু আমরা আজকে দাঁড়িয়ে আমাদের বর্তমান প্রজন্ম বা আগামী প্রজন্মকে এই সাহস দিতে চাই যে, আগামী দিনে গুগল-ফেসবুকের মতো কোনো উদ্যোগ বা আরো নতুন কোনো সিস্টেম আমাদের ছেলে-মেয়েরা যেন করতে পারে।”
কেন, কীভাবে হবে এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম
নতুন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য এক বছরের মধ্যে বেটা ভার্সন করা, দুই বছরের মধ্যে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন মেটানো, তিন বছরের মধ্যে আন্তর্জাতিক মানের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তৈরি করা।’’
তিনি জানান, সরকার এটা করলে হয়ত সকল ব্যবহারকারী এটা করতে আগ্রহবোধ করবে না, সে কারণেই সরকারের ভূমিকা এখানে প্রকল্প গড়ে তোলার সহায়তায় সীমিত থাকবে৷
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘‘সরকার থেকে প্রাথমিক বিনিয়োগ করে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক, প্রোগ্রামারদের দিয়ে একটা টিম গঠন করে দেবে৷ যখন এটা ব্যবসা-সফল হওয়ার মতো জায়গায় যাবে, তখন প্রাইভেট সেক্টরের মাধ্যমেই এটা পরিচালনা করবো।’’ কেবল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নয়, সার্চ ইঞ্জিন, ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম, কমিউনিকেশন অ্যাপ্লিকেশন, এমনকি নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম তৈরিতেও কাজ চলছে বলে জানান তিনি৷
তিনি দাবি করেন, এর মধ্যে বৈঠক নামে একটি ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়ে গেছে৷ এটার সীমিত পরিসরে ব্যবহারও চলছে৷ আপগ্রেডেশনের কাজ শেষ হলে এটা মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে৷
পলক বলেন, ‘‘সাম্প্রতিক সময়ের যে বাণিজ্যযুদ্ধ আমরা পর্যবেক্ষণ করেছি, সেখানে দেখা যাচ্ছে, প্রত্যেকটা জায়গায় আমাদের আত্মনির্ভরশীল হওয়া প্রয়োজন৷ না হলে কোনো একটা দেশ কোনো একটা সময় যদি তাদের কোনো সিস্টেম কোনো একটা দেশ বা প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করতে না দেয়, তাতে দেশের পুরো জাতীয় যোগাযোগ ব্যবস্থা, ডিজিটাল বিসনেস-এডুকেশন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে৷ সেটা যাতে না হয়, সে জন্য আত্মনির্ভরশীল ডিজিটাল বাংলাদেশে নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করছি আমরা৷ যাতে করে নিজেদের যে কোনো ক্রাইসিসে আমাদের সবকিছু বন্ধ হয়ে না পড়ে।’’
টার্গেট অডিয়েন্স হিসাবে তিনি বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গ-আসাম-ত্রিপুরা এবং এসব এলাকার প্রবাসী মানুষদের কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘‘সব মিলিয়ে প্রায় ৩৫-৪০ কোটি বাংলাভাষী রয়েছে৷ দেশের নিজস্ব চাহিদা রয়েছে। পাশাপাশি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা মানুষরা এটার টার্গেট অডিয়েন্স। প্রতিমন্ত্রী জানান কিছু উদ্যোগ ব্যর্থ হতে পারে ধরে নিয়েই এগোচ্ছেন তারা, ‘‘সিলিকন ভ্যালির অভিজ্ঞতা বলে ১০০টা স্টার্ট আপের মধ্যে ১০টা সফল হয়, কিন্তু সফল ১০টার সাফল্যের ফল বাকি ব্যর্থ ৯০টাকে ছাড়িয়ে যায়৷ তাই আমরা ১০টা উদ্যোগ নিচ্ছি, ১-২টা সফল হলেও হবে৷।’’
সূত্র : ডয়চে ভেলে