সুপ্রভাত ডেস্ক »
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেনীর তিনটি সংসদীয় আসনের মধ্যে একটিতে নতুন মুখ ও ২টিতে বর্তমান সংসদ সদস্যরা বহাল রয়েছেন।
গত রোববার (৭ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে ৩৯৯টি কেন্দ্রের ২ হাজার ৫৯৪টি কক্ষে ব্যালট পেপারে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এরপর ভোট গণনা শেষে রাতে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তারা ফলাফল ঘোষণা করেন।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কার্যালয়ের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, ফেনীর তিনটি আসনের মধ্যে ফেনী-১ আসনে ৫৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ, ফেনী-২ আসনে ৬৮ শতাংশ ও ফেনী-৩ আসনে ৩৬ দশমিক ২ শতাংশ ভোটগ্রহণ হয়েছে।
নির্বাচনে ফেনী-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী প্রধানমন্ত্রীর সাবেক প্রটোকল অফিসার আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন।
ফেনী-১ আসনে মোট ভোটার ছিল ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৩১৫ জন। তাদের মধ্যে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৩৭ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এই আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম ১ লাখ ৮২ হাজার ৭৬০ ভোট পেয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির শাহরিয়ার ইকবাল লাঙ্গল প্রতীকে ৪ হাজার ১৯৫ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল হাসেম চৌধুরী ঈগল প্রতীকে ৩২৪ ভোট, তৃণমূল বিএনপির মো. শাহজাহান শাজু সোনালী আঁশ প্রতীকে ১ হাজার ৪ ভোট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদশে প্রার্থী কাজী মো. নুরুল আলম মোমবাতি প্রতীকে ২ হাজার ৫৬৪ ভোট ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের মাহবুব মোর্শেদ মজুমদার ছড়ি প্রতীকে ৭৮৮ ভোট পান।
আলাউদ্দিন নাসিম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের প্রাক্তন সভাপতি ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। বিসিএস প্রশাসন সার্ভিসে ৮৬ সালে যোগ দেন। ৯৬ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রটোকল অফিসার হিসেবে নিযুক্ত হয়ে ২০০১ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালের পর সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনার এপিএস হিসেবে তিনি কাজ শুরু করেন। এই দায়িত্বে তিনি ২০০৮ সালের নির্বাচন পর্যন্ত ছিলেন।
২০০৯ সালে উপসচিব হিসেবে তিনি প্রশাসন ক্যাডার থেকে পদত্যাগ করে অবসরে যান। সরকারি চাকরি ছাড়ার পর তিনি দীর্ঘদিন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করছেন। ২০১২ সালে তিনি আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন।
ফেনী-২ আসনে বিজয়ী হন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী । এর আগেও তিনি এই আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফেনী-২ আসনে মোট ভোটার ছিল ৪ লাখ ১০ হাজার ৭২১ জন। তারমধ্যে বৈধ ভোট পড়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার ১৩৫টি। ঘোষিত ফলাফলে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নিজাম উদ্দিন হাজারী ২ লাখ ৩৬ হাজার ৫৯৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির খোন্দকার নজরুল ইসলাম লাঙ্গল প্রতীকে ৪ হাজার ৮৫৮ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী এএসএম আনোয়ারুল করিম ঈগল প্রতীকে ৪ হাজার ৪৮ ভোট পান।
ফেনী-৩ আসনে জয়লাভ করেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা জাতীয় পার্টির লেফট্যানেন্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী। তিনিও এর আগে এই আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফেনী-৩ আসনে মোট ভোটার ছিল ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৩৫২ জন। তাদের মধ্যে ১ লাখ ৭১ হাজার ২৭৫ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এ আসনে জাতীয় পার্টির লেফট্যানেন্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী লাঙ্গল প্রতীকে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৭৬০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী হাজী রহিম উল্যাহ ঈগল প্রতীকে ৯ হাজার ৬২৬ ভোট, তৃণমূল বিএনপির আজিম উদ্দিন আহমেদ সোনালী আঁশ প্রতীকে ১ হাজার ৯৫৯ ভোট, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির তবারক হোসেন একতারা প্রতীকে ৭৮৯ ভোট, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের আবু নাসির চেয়ার প্রতীকে ৯৬৩ ভোট, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের নিজাম উদ্দিন মোমবাতি প্রতীকে ৫০৫ ভোট, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের জোবায়ের ইবনে সুফিয়ান ছড়ি প্রতীকে ১৬০ ভোট, আবুল কাশেম আজাদ ট্রাক প্রতীকে ৪ হাজার ৯২০ ভোট, ইঞ্জিনিয়ার ইশতিয়াক আহম্মেদ সৈকত কাঁচি প্রতীকে ৭১০ ভোট ও আনোয়ারুল কবীর (রিন্টু আনোয়ার) বাঁশি প্রতীকে ১৭৩ ভোট পান।
জেলার তিনটি আসনে মোট ভোটারের সংখ্যা ছিল ১২ লাখ ৪০ হাজার ৫৫৭ জন। তারমধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ লাখ ৩৮ হাজার ২৮৫ জন, নারী ভোটার ৬ লাখ ২ হাজার ৪৭১ জন। এছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছে ৩ জন।
এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনটি আসনে ২৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে। তারমধ্যে ফেনী-১ আসনে ৬ জন, ফেনী-২ আসনে ৮ জন এবং ফেনী-৩ আসনে ১০ জন প্রার্থী।