ফার্নিচার শিল্প রফতানি খাতে আমূল পরিবর্তন করতে পারে

১৪তম চট্টগ্রাম ফার্নিচার মেলা

ফার্নিচার মেলায় আগত দর্শনার্থীরা পছন্দের আসবাব যাচাই বাছাই করছেন-সুপ্রভাত

নিজস্ব প্রতিবেদক »

‘ফার্নিচার শিল্প একটি শ্রমঘন শিল্প। পোশাকশিল্প খাতের মতো এটিও দেশের রফতানি খাতে আমুল পরিবর্তন করতে পারে। এখানেও অনেকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে।’

এভাবেই বলছিলেন ঢাকার ‘আয়োতো’ ফার্নিচারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেওয়ান আতিফ রশীদ।

নগরীর জিইসি কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত ‘১৪তম ফার্নিচার মেলা’র তৃতীয় দিনে গতকাল সন্ধ্যায় কথা হয় তাঁর সঙ্গে।

দেশের ফার্নিচার শিল্পের সম্ভাবনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে দেশে ফার্নিচার শিল্পের যথেষ্ট বিকাশ ঘটেছে। আমাদের প্রতিবেশি দেশ ভারতেও এভাবে এ শিল্পের বিকাশ ঘটেনি। সেখানে নিজস্ব ফ্যাক্টরির  সংখ্যা কম। কিন্তু অন্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশের ফার্নিচারের দাম বেশি পড়ে যায়। কারণ এ শিল্পের বিভিন্ন উপকরনের আমদানি খরচ অনেক বেশি। এ কারণেই সরকারের কাছে আমাদের আবেদন থাকবে এখাতের এক্সেসরিজ ডিউটি চার্জ কমানোর। তাহলে আগামীতে পোশাকশিল্প খাতের মতো ফার্নিচার শিল্পও দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারবে।

রাজধানী ঢাকার কেরানীগঞ্জে আয়োতোর ফ্যাক্টরি। ফ্যাক্টরি গড়ার পরিকল্পনার কথা জানাতে গিয়ে দেওয়ান আতিফ রশীদ বলেন, ‘এটা ২০২২ সালের শেষের দিকের কথা। কোভিডের মধ্যেই আমি ফ্যাক্টরিটি গড়ে তুলি। যদিও এর আগে আমি দেশের ফার্নিচার সেক্টরের বেশ কয়েকটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করেছি। তাই ওই সময়ে আমার মনে হয়েছে, একটা মডেল ফ্যাক্টরি গড়ে তুলবো। আর আমি যখন ফ্যাক্টরিটা করি, আমার প্রথম ছয় মাসের প্রডাকশনে এক্সপোটে যেতে পেরেছি।’

দেওয়ান আতিফ রশীদ ডিজাইন অ্যান্ড টেকনোলজি সেন্টার নামে একটি ডিজাইন ফার্মেরও ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার ডিজাইন ফার্মের ক্লায়েন্ট হাতিল, ব্রাদার্স, নাদিয়া, অটোবি, পারটেক্স প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান।’

মেলায় তিনি ভালোই সাড়া  পেয়েছেন বলে জানিয়ে বলেন, ‘প্রথমবারের মতো মেলায় অংশ নিয়ে আমি বেশ আশাবাদী। কিছু অর্ডারও পেয়েছি। আগামী কয়েকদিনে আরো ভালো সাড়া পাবো আশা করছি।’

আগামী মে মাসে দুবাইতে অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক ফার্নিচার মেলায় ‘আয়োতো’র অংশগ্রহণের কথা জানিয়েছেন  তিনি।

নগরীর আগ্রাবাদ থেকে মেলায় আসা আসিফ আহমেদ জানান, মেলায় বেশ কিছু নতুন ডিজাইনের ফার্নিচার দেখেছেন। তবে দাম বেশি বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

তবে পছন্দের ফার্নিচার অর্ডার  দেওয়ার কথা বলেছেন ষোলশহর থেকে আসা রাজিব হোসেন। আগামী মাসে মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে মেলা থেকে ফার্নিচার কেনার জন্যে আসেন তিনি।

গত ৪ ডিসেস্বর থেকে মেলা শুরু হয়েছে। আগামী ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে এ মেলা। বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতি চট্টগ্রাম বিভাগ এ মেলার আয়োজন করেছে।

মেলা প্রতিদিন চলছে সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।

এবারের ফার্নিচার মেলায় মোট ২৮টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। এতে কো-স্পন্সর হয়েছে ১৪টি প্রতিষ্ঠান। মেলার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব রয়েছে চিটাগাং ইভেন্টস।

গত ৪ ডিসেম্বর মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।

মেলার উদ্বোধক ছিলেন বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতির চেয়ারম্যান সেলিম এইচ রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন সমিতির মহাসচিব মো. ইলিয়াস সরকার, সমিতির চট্টগ্রাম বিভাগের সদ্য সাবেক সভাপতি সৈয়দ এ এস এম নূরউদ্দীন।