মো. আবু মনসুর, ফটিকছড়ি »
ফটিকছড়িতে আগাম শীতকালীন সবজি ও রবি শস্য চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন ফটিকছড়ির চাষিরা। এ বছরও আগাম সবজি চাষ করতে পিছপা হননি সবজি চাষিরা। তবে এবার অতি ঝড়-বৃষ্টি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে এ সবজি চাষে খরচ বেশি হচ্ছে বলে জানান তারা। কোদাল, পাচুন, মাথল, লাঙল-গরুসহ আনুষাঙ্গিক কৃষি সরঞ্জামাদি নিয়ে কুয়াশা ঢাকা ভোরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন কৃষকরা।
এরপর ক্ষেতে গিয়ে যে যার মতো কাজে নেমে পড়েন। কেউ দাঁড়িয়ে বা কোমর বাঁকিয়ে কোদাল মারতে থাকেন। আবার কেউবা গাছ ঠিকঠাক রেখে চারপাশ দিয়ে পাচুন চালাতে থাকেন অবিরাম। কেউ কেউ জমি প্রস্তুতির কাজের লাঙল-গরু দিয়ে হালচাষের কাজ করছেন। যদিও যান্ত্রিকতায় আধুনিকতার ছোঁয়ায় কালের আবর্তে গরু দিয়ে হালচাষ পদ্ধতি হারিয়ে যেতে বসেছে। সবুজ কচি চারায় ভরে উঠেছে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। শোভা পাচ্ছে ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, শিম, বেগুন, মূলা, করলা, পটল, পালং ও লাল শাকসহ রকমারি শীতের সবজি। উপজেলার কাঞ্চননগর, পাইন্দং, খিরাম, সুয়াবিল, নাজিরহাট, হারুয়ালছড়ি, ভুজপুর ও নারায়ণহাটসহ একাধিক গ্রাম ঘুরে আগাম সবজি চাষে কৃষকদের কর্মব্যস্ততার এমন দৃশ্য দেখা যায়।
উত্তর চট্টগ্রামের বৃহত্তর সবজির মাঠ পাইন্দং বেড়াজালী মুজরির চরের সবজির চাষি ইরফান বলেন, দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আগাম সবজি চাষে বিলম্ব হচ্ছে। আগাম সবজি চাষ করার জন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ঝড়-বৃষ্টির সঙ্গে যুদ্ধ করতে হচ্ছে। এর পরেও থেমে নেই আমরা। বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নানা প্রতিকূলতার মাঝেও আগাম সবজির চাষ করছি আমরা।
কাঞ্চন নগর ইউনিয়নের সবজি চাষি আলমগীর সহ বেশ কয়েকজন কৃষক জানান,এই বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আগাম সবজি চাষ করতে পারছিনা আমরা। এছাড়াও শ্রমিক সংকটতো বড় সমস্যা। আমাদের ঠিক সেভাবেই আগাম সবজি চাষ করার জন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ঝড়-বৃষ্টি সঙ্গে যুদ্ধ করতে হচ্ছে।
ফটিকছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ হাসানুজ্জামান জানান, ২৪-২৫ অর্থ বছরে উপজেলায় আটহাজার তিনশো ৪০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার মধ্যে কাঞ্চননগর, দৌলতপুর, পাইন্দং ও রোসাংগিরিতে জমিতে আগাম লালশাক, মুলাশাক ও বেগুন চাষাবাদ শুরু হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদেরকে বিভিন্ন রকমের পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।