বিনোদন ডেস্ক »
হঠাৎ করেই সামাজিকমাধ্যমে অতীতের স্মৃতি স্মরণ করলেন প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের প্রথম স্ত্রী গুলতেকিন খান। নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত মঙ্গলবার পর পর চারটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি। শেয়ার করেছেন হুমায়ূন আহমেদের পাঠানো ডিভোর্স নোটিসও।
প্রথম স্ট্যাটাসে গুলতেকিন জানান, এই খামটির ভেতরে খুব যত্ন করে রাখা ছিলো আরেকটি খাম। আজ ট্যাক্সের জন্য কিছু কাগজ খুঁজতে গিয়ে এটি (ডিভোর্স নোটিশ) পেলাম।
এর পরে বিচ্ছেদ নোটিশের সেই চিঠির খাম ও নোটিশের ছবি ফেসবুকে শেয়ার করে তিনি। ক্যাপশনে জানান, এ ধরণের হলদে খামে চিঠি আসলে আমার মেয়ে শীলা বলতো, এগুলো তোমাকে লেখা প্রেমপত্র। শীলার বাবার লেখা আত্মজীবনীমূলক বই পড়ে অনেকেই আমাকে চিঠি লিখতো।
যোগ করে তিনি লেখেন, ২০০৪ সালের ৬ জুন, স্কুল থেকে ফিরতেই শীলা বললো, তোমার একটা প্রেমপত্র এসেছে। এরপর গুলতেকিন জানান, খাম খুলেই দেখতে তিনি পান হুমায়ূনের পাঠানো ডিভোর্স নোটিশ।
আরেকটি স্ট্যাটাসে মেয়ে শীলার কথা উল্লেখ করে গুলতেকিন লেখেন, আমি হাসতে হাসতে বললাম, শীলা বাবা, তোমার ড্যাডি তো আমাকে ডিভোর্স দিয়েছে। ডিভোর্স নোটিশে হুমায়ূন আহমেদ লিখেছিলেন, ‘বিবাহের পর থেকেই তাহার সহিত আমার কোনোমতেই বনিবনা হইতেছে না। ভবিষ্যতেও বনিবনা হইবার কোনোরূপ সম্ভাবনা না থাকায় আমি অপারগ’।
সবশেষ স্ট্যাটাসে গুলতেকিন লেখেন, আমি আমার তিন মেয়ে আর ছেলেকে নিয়ে খুবই চমৎকার জীবন কাটাচ্ছি। শুধু তারা নয়, আমি এখন সাতজনের ‘নানু/নিন্নাই’। আলহামদুলিল্লাহ। আমার নিজের ছোট একটি থাকার জায়গা আছে। আমি তিন বেলা ভালো খাই, ভালো পোষাক পরি। এরপর আর কিছু চাওয়া নেই জীবনের কাছে।
তিনি আরও লেখেন, দুঃখ ভাগ করলে মহান আল্লাহ, অসন্তুষ্ট হবেন আল্লাহ। এসব লিখে দুঃখ বিলাসের সময়, এখন নেই। এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এদেশের লক্ষ লক্ষ মেয়েরা একই ধরণের সমস্যা নিয়ে বেঁচে আছে। পার্থক্য হচ্ছে, আমি একজন বিখ্যাত মানুষের, এক সময়ের স্ত্রী ছিলাম, তাই আমাদের জীবনযাপন সম্পর্কে মানুষের অনেক কৌতূহল আছে। কিন্তু অন্যদের কথা আমরা জানি না। লক্ষ কোটি নারীরা জীবন সংগ্রাম করছে, শুধুমাত্র আমরা তাদের কথা জানি না।
গুলতেকিনের সঙ্গে হুমায়ূন আহমেদের বিয়ে হয় ১৯৭৩ সালে। তাদের সংসারে আসে এক ছেলে ও তিন মেয়ে। গুলতেকিনের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের দুই বছর পর ২০০৫ সালে হুমায়ূন আহমেদ বিয়ে করেন অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনকে। এরপর ২০১৯ সালে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আফতাব আহমদকে বিয়ে করেন গুলতেকিন। কিছুদিন আগেই আফতাব প্রয়াত হয়েছেন।