প্রেগন্যান্ট নন কিন্তু দীর্ঘদিন পিরিয়ড বন্ধ, মেনোপজ নয় তো? 

সুপ্রভাত ডেস্ক  »

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিটা মহিলার সেক্স হরমোন কমে যেতে থাকে। একটা সময় ওভারি আর ডিম তৈরি করে না, ফলে আর পিরিয়ড হয় না। এই সময় আপনি আর প্রেগন্যান্ট হতে পারবেন না। পিরিয়ড বন্ধ হওয়াও খুব স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া। একটা বয়সের পর স্বাভাবিক ঋতুচক্র ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায়। একে বলে মেনোপজ। ৪০ থেকে ৪৫-এর পর থেকেই মহিলাদের শরীরে ধীরে ধীরে নানা বদল আসতে শুরু করে। শরীরের অন্যান্য পরিবর্তন যেমন স্তন বৃদ্ধি, চুলের বিকাশ হওয়া শুরু হয়। পিরিয়ড হবার সঠিক সময় হল ১৩ বছর। কিন্তু ৯ থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত যে-কোনও মেয়েরই ঋতুস্রাব শুরু হতে পারে এবং এটা খুব স্বাভাবিক।

৫০ বছর বয়স মেনোপজের সঠিক বয়স। কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রেই মেনোপজের সময়ের হেরফের হতে পারে। মেনোপজের সময় হরমোনের হঠাৎ পরিবর্তনে শারীরিক, মানসিক ভারসাম্য বিঘ্নিত হয় অনেক মহিলারই। এই সময়ে কেউ একটু বেশিই খিটখিটে হয়ে পড়েন। আবার কারও আচমকা অনেকটা ওজন বেড়ে যায়। মেনোপজের সময় নারী শরীরে কী কী প্রভাব পড়ে? কী কী শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে জেনে নিন।

শরীরে এস্ট্রোজেন কমে যাওয়া মানে হার্টের অসুখের ঝুঁকি বাড়া। এস্ট্রোজেন কমে গেলে কোলেস্টেরলের মাত্রাও বাড়তে পারে, ফলে স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও বাড়ে। মেজাজ বিগড়ে যেতে পারে। একদিন হয়তো আপনি খুব খুব খুশি থাকবেন, চারপাশে সবকিছু খুব ভাল লাগবে, পরের দিন-ই দেখবেন, অবসাদ গ্রাস করেছে। মুড সুইং হতে পারে। যদি দেখেন এক সপ্তাহের বেশি অবসাদগ্রস্ত হয়ে রয়েছেন, চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।ঘুমের মধ্যে সারা শরীর দিয়ে যেন তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। সারা শরীর জ্বালা করতে থাকে, অস্বাভাবিক ঘামও হতে পারে। একেই বলে হটফ্লাশ, যা হয় এস্ট্রোজেন-এর অভাবে। দিনে বা রাতে যে-কোনও সময়ে হতে পারে হটফ্লাশ। ওজন বাড়তে পারে। মেনোপজ মানেই শরীর বেশি এনার্জি জমা করছে। যার অর্থ আপনি আর তাড়াতাড়ি ক্যালরি কমাতে পারবেন না। ফলে ওজন বাড়তে থাকে।

প্রায়শই মহিলাদের দেহেই নানা পুষ্টির অভাব দেখা দেয়। তাই বয়স ৩০ হোক বা ৪০, পাতে স্বাস্থ্যকর খাবার রাখা জরুরি। তাজা শাকসবজি, ফলমূল, বাদাম-বীজ, দানাশস্য, দুগ্ধজাত পণ্য, মাছ, মাংস, ডিম সবই খাওয়া দরকার। একটি ব্যালেন্স ডায়েট মেনে চলুন। যাতে দেহে পুষ্টির ঘাটতি না তৈরি হয়। চিনি ও ক্যালোরি যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। এতে ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্যও ভাল থাকবে‌।

মেনোপজের পর শরীরের নীচের অংশ ভারী হতে থাকে। তখনই আবার দেখা দেয় হাড়ের ক্ষয়, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপের মতো নানা সমস্যা। এই কারণে দেহের ওজনকে ঠিক রাখা দরকার। প্রথম থেকেই শরীরচর্চা, যোগব্যায়াম করলে ৫০-এর পর খুব বেশি ঝক্কি পোহাতে হবে না। দিনে ৭-৮ ঘণ্টার ঘুম স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। ঘুমের পরিমাণ কম হলে কিংবা অনিদ্রায় ভুগলে এখান থেকে একাধিক শারীরিক সমস্যা জাঁকিয়ে বসবে।

মেনোপজের মতো অনেকেই যোনি এলাকায় শুষ্কভাব, সঙ্গমে অনীহা, সেক্সের সময় ব্যথা অনুভব করার মতো একাধিক সমস্যায় মুখোমুখি হন। এসব সমস্যা এড়াতে চাইলে নিয়মিত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন। মূলত হরমোনের তারতম্যের জেরে যৌনাঙ্গের স্বাস্থ্য বিঘ্নিত হয়ে যায়। তাই নিজের খেয়াল রাখা জরুরি। সূত্র: আজকাল