প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির অফিস ভাংচুর মামলার আসামি মুনির!

নাছিরাবাদ হাউজিং সোসাইটি নির্বাচন

নিজস্ব প্রতিবেদক »

আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য দি চিটাগাং কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচনে  প্রার্থী হয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির অফিসে হামলা ও ভাংচুর মামলার আসামি আ ল ম মিজবাহুল মুনির লুবাব। এই মামলায় কোতোয়ালী থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারের পর গত ২১ অক্টোবর আদালতে পাঠিয়েছিল। বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন।

চট্টগ্রামের ঐহিত্যবাহী এই হাউজিং সোসাইটির নির্বাচনে  মামলার আসামি প্রার্থী হওয়ায় ভোটাররা বিব্রত। তাছাড়া এ নিয়ে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিতর্ক এড়াতে তারা মুনিরকে প্যানেল থেকে বহিস্কারের দাবি তুলেছেন।

জানা যায়, অংকুর সোসাইটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট অনুষ্ঠিত হবে।

নির্বাচনে ৩ হাজার ৯৩৫ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন।

নির্বাচনে ১২টি পদের বিপরীতে তিনটি প্যানেলে ৩৪ জনসহ মোট ৩৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ¦ীতা করছেন। নির্বাচনে সবগুলো পদে প্রার্থী দিয়ে দুটি প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। আরেকটি প্যানেলে ১০ জন এবং বাকি চারজন স্বতন্ত্র নির্বাচন করছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত বছরের ১২ অক্টোবর নগরের নুর আহম্মদ সড়কের নাসিমন ভবনে অবস্থিত বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের কেয়ারটেকার কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার ৮৪ নম্বর এজহারভুক্ত আসামি পতিত স্বৈরাচারের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের ঘনিষ্ট সহচর আ ল ম মিজবাহুল মুনির। তিনি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালেরও ঘনিষ্ট বলে জানা গেছে।

অভিযোগ রয়েছে, স্বৈরাচার পতনে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে চরম বিরোধীতাকারী মুনির আন্দোলন দমনে পৃষ্ঠপোষতার পাশাপাশি নিজেও  সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন। এরই অংশ হিসাবে তিনি গত ৩ আগস্ট নগর বিএনপি কার্যালয় ভাংচুর করেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে নগরের পাঁচলাইশ থানায় দুটি মামলা রয়েছে। ২০২২ সালের ২০ জুন পেনাল কোডের ৫০০, ৫০৪, ৪২৭, ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে একটি মামলায়। এছাড়া যে হাউজিং সোসাইটির নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন মিজবাহুল মুনির নিজেই খোদ সেই অফিস ভাংচুর মামলার ২ নম্বর আসাসি। হাউজিংয়ের ম্যানেজার বাদি হয়ে গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর পাঁচলাইশ থানায় মামলা দায়ের করেন। এতে তার বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ১৪৩, ৪৪৮, ৩২৩, ৩৮০, ৩৮৪, ৪২৭, ৫০৬ অভিযোগ আনা হয়।

এদিকে, বিদেশে অবস্থান করে  মিজবাহুল মুনির কিভাবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তা চ্যালেঞ্জ করে তার প্রার্থীতা বাতিলের আপিল করেন একজন ভোটার। যদিও গত ৬ ফেব্রুয়ারি শুনানি শেষে জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মুসলেহ উদ্দিন তার প্রার্থীতা বৈধ ঘোষণা করেছিলেন। বিএনপি অফিস ভাংচুর মামলার আসামি বিদেশ থেকে কিভাবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবা্েব এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা আইনের মধ্যে থেকেই সবকিছু করেছি। তাই প্রার্থীতা বহাল রয়েছে।’ নগর বিএনপির অফিস ভাংচুর মামলার আসামি ও গ্রেপ্তারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আপিলকারী আমাকে এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ দেননি। বিষয়টি আমারও জানা ছিল না। তবে ওনারা সংক্ষুব্ধ হলে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন।’ সোসাইটি কার্যালয় ভাংচুর মামলার বিষয়েও তিনি অবগত ছিলেন না বলে জানান।