নিজস্ব প্রতিনিধি, পটিয়া »
দীর্ঘ একযুগ ধরে চলছে দলীয় কোন্দল। এ কোন্দলের কারণে বর্তমানে পুনরায় অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে চট্টগ্রামের পটিয়ায় আওয়ামী লীগের মধ্যে একাধিক গ্রুপ মারমুখী। বর্তমান সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরীকে সরাতে দলের তৃণমূল নেতারা এক হয়েছেন। তাদের একটাই দাবি আগামী নির্বাচনে সামশুল হক চৌধুরীকে মনোনয়ন না দিয়ে দলের ত্যাগী ও পরিচ্ছন্ন নেতাদের মূল্যায়ন করা হয়।
বুধবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন (ইসি) তফসিল ঘোষণার পর পরেই আওয়ামী লীগের নেতারা আলাদাভাবে এলাকায় শোডাউন করেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা চলছে। তবে আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দলের কারণে কিছুটা বেকায়দায় পড়েছে পটিয়া থানা পুলিশ প্রশাসন। ইতোমধ্যে স্থানীয় এমপি ও বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম বদির অনুসারীদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনাও ঘটেছে। মূলত বর্তমান এমপি দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের কোণঠাসা করে বিএনপি থেকে অনুপ্রবেশকারী লোকজনকে সর্বক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়ার কারণে চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। আসন্ন নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে এক ডজনের অধিক প্রার্থী এবার নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন চাইবেন। ইতোমধ্যে তারা বিভিন্নভাবে লবিং শুরু করেছেন। দলীয় মনোয়ন ফরম সংগ্রহ করতে অনেকে ঢাকা দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান করছেন।
দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ আসনে ২০০৮ সাল থেকে একটানা তিনবার আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন সামশুল হক চৌধুরী। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর দলের দুঃসময়ের ত্যাগী নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন করেছেন। অনেক নেতাকর্মীকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করেছেন।
বর্তমান সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে এবার মনোয়ন চাইতে পারেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পটিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক মহিলা সংসদ সদস্য চেমন আরা তৈয়ব, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নাসির, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য ডক্টর জুলকারনাইন চৌধুরী, যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম বদি, মেজর জেনারেল (অব.) এমএ ওয়াদুদ, পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার সাবেক মেয়র অধ্যাপক হারুনুর রশিদ ও ক্রীড়া সংগঠক সত্যজিত দাশ রুপু।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য ড. জুলকারনাইন চৌধুরী জীবন আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেশে ফিরেছেন। তিনি রাজনীতির পাশাপাশি মানবিক সকল কাজ করছেন।
তিনি বলেন, গত এক যুগ ধরে বিভিন্ন কারণে পটিয়ায় আওয়ামী লীগের রাজনীতি নেই বললে চলে। এককভাবে কর্তৃত্ব খাটানোর কারণে বর্তমান এমপির বিরুদ্ধে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ। সবার একটাই দাবি আসন্ন নির্বাচনে যেন পরিচ্ছন্ন কাউকে নৌকার প্রার্থী করা হয়। অন্যথায় দলীয় কোন্দল বাড়ার শঙ্কা রয়েছে।