চট্টগ্রামে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বরাদ্দ দেয়া বাদ্যযন্ত্র প্রশিক্ষিত শিক্ষক না থাকার কারণে কোন কাজে আসছেনা। বরং অব্যবহারে সেগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
একটি জাতীয় দৈনিকের রিপোর্ট থেকে জানা যায়, চট্টগ্রামের হালিশহরের আনন্দবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এধরনের চিত্র দেখা গেছে। ২০১১ সালে কোরিয়ার বুইয়ং কোম্পানি নামের একটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য পাঁচ হাজার পিয়ানো অনুদান দিয়েছিল। ওই সময় আনন্দবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বাদ্যযন্ত্রটি পায়। তবে পিয়ানো বাজাতে পারদর্শী শিক্ষক না থাকায় এটির ব্যবহার হয়নি। মাঝেমধ্যে পিয়ানোতে রেকর্ড করা গান বাজানো হতো। দেড় বছর আগে বাদ্যযন্ত্রটি একেবারেই নষ্ট হয়ে যায়।
অবশ্য শুধু আনন্দবাজার নয়, সে সময় বুইয়ং কোম্পানির দেওয়া পিয়ানো পেয়েছিল চট্টগ্রাম জেলার ২০৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়গুলোতে দুই ধাপে বাদ্যযন্ত্র দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে নগরের ৫০টি বিদ্যালয় ছিল। এই ৫০ বিদ্যালয়ের মধ্যে ২০টিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রশিক্ষিত শিক্ষকের অভাবে কোনো বিদ্যালয়েই পিয়ানো বাজানো হয় না। অন্তত ১০টি বিদ্যালয়ের পিয়ানো নষ্ট হয়ে গেছে।
একই অবস্থা ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন ও বিকাশ’ শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় ২০১০-১১ অর্থবছরে প্রতিটি উপজেলা ও থানা এলাকার বিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হারমোনিয়াম ও তবলারও। শুরুর দিকে কয়েক বছর ব্যবহার হলেও দীর্ঘদিন ধরে সংগীতের এসব সরঞ্জামে আর হাত পড়ে না।
শিক্ষকেরা বলছেন, প্রশিক্ষিত শিক্ষক নিয়োগ না দেওয়ার কারণে বাদ্যযন্ত্রগুলো কোনো কাজে আসেনি। শিক্ষার্থীরা কোনো কিছুই শিখতে পারেনি। আর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় কিংবা থানা শিক্ষা কর্মকর্তারাও তেমন তদারক করেননি। ফলে ব্যবহার না করতে করতে এগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলছেন, বাদ্যযন্ত্রগুলো ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রশিক্ষিত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার আলোচনা চলছে। খুব শিগগির শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে।
প্রাথমিক পর্যায়েই শিল্পচর্চা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় শিক্ষার্থীদের মস্তিষ্ক গড়ে ওঠে। এ জন্য প্রশিক্ষণ নয়; পিয়ানো, হারমোনিয়াম বা তবলা বাজাতে পারদর্শী এমন ব্যক্তিদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া দরকার। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল হিসেবে গড়ে তুলতে সংগীতচর্চার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।
এ মুহূর্তের সংবাদ