জঙ্গল সলিমপুরে জায়গা উদ্ধার
নিজস্ব প্রতিবেদক »
জঙ্গল সলিমপুরের জায়গা উদ্ধারে আবারো মাঠে গেলেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। জনপ্রতিনিধিদের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে জেলা প্রশাসন গতকাল বিকেলে বিশাল শোডাউন দিয়েছে। মূলত দুর্গম এই জায়গার ভৌগোলিক অবস্থা বুঝতে এবং পরবর্তীতে অবৈধ দখল উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার দিকনির্দেশনাও হতে পারে এই শোডাউন। এর আগে কয়েক দফায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল এই এলাকায়। কিন্তু উচ্ছেদের পর আবারো স্থাপনা নির্মাণ করে স্থানীয়রা।
সীতাকুণ্ড আসনের সংসদ সদস্য দিদারুল আলম ছাড়াও স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান, জেলা প্রশাসক, র্যাব-৭ এর প্রধান, পুলিশের ডিআইজি, মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার, পুলিশ সুপার, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে হিজরাদেরও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল গতকালের শোডাউনে।
জঙ্গল সলিমপুর আলী নগরে উচ্ছেদ অভিযানে গেলে স্থানীয়রা নারী ও শিশুদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। শুক্রবার সলিমপুরের মাস্টারপ্ল্যান বিষয়ক মতবিনিময় সভায় এই বিষয়টি উত্থাপন হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহৃত নারী ও শিশুদের প্রতিহত করার কৌশল হিসাবে হিজরাদের নেয়া হয়েছিল।
এদিকে জঙ্গল সলিমপুরে প্রবেশের ছয়টি পথ কেটে দিয়েছিল অবৈধ দখলদাররা। এগুলো মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে। গতকালের শোডাউন প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন সংবাদকর্মীদের বলেন, কিভাবে পাহাড় কেটে এলাকাটি গড়ে তোলা হয়েছে তা সরেজমিনে দেখার জন্য আমরা পরিদর্শনে এসেছি। এলাকাটির ভৌগোলিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করলাম।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় বলেন, জঙ্গল সলিমপুর নিয়ে জেলা প্রশাসন মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের কাজ করছে। জেলা প্রশাসনকে সহযোগিতা করছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও জনপ্রতিনিধিগণ। আমরা আজ এলাকাটি দেখতে এলাম। সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে আমরা বদ্ধপরিকর।
এদিকে জঙ্গল সলিমপুর নিয়ে সরকার যে পরিকল্পনা নিয়েছে সে অবস্থান থেকে কোনোভাবেই পিছু হটা যাবে না বলে শুক্রবারের সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আর তা বাস্তবায়ন করতে প্রশাসনকে সব ধরনের সহযোগিতা করা এবং অবৈধ বসতি উচ্ছেদে কর্মপরিকল্পনা তৈরির কথাও বলা হয়। সভায় উল্লেখ করা হয়, সবার আগে অবৈধ বসতি উচ্ছেদ করতে হবে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমান বলেন, জঙ্গল সলিমপুরের সকল খাস জায়গা উদ্ধার করা হবে। একইসাথে সকল অবৈধ বসতি উচ্ছেদ করা হবে। মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন এবং সেই অনুযায়ী উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে সরকার বদ্ধপরিকর।
উল্লেখ্য, সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরে ছিন্ন মূল ও আলীনগর এলাকায় ইয়াছিন আলী নামে একজনের দৌরাত্ম্য চলছে। ইয়াছিন আলী পুলিশের হাতে আটক হয়ে বর্তমানে কারাগারে থাকলেও তার অনুসারীরা সেখানে প্রতিরোধ গড়ে থাকে। প্রশাসনের লোকদের প্রবেশ নিরাপদ নয়, সেজন্য পর্যাপ্ত ফোর্স নিয়ে যেতে হয়। সরকারের পক্ষ থেকে অবৈধ এসব বসতি উচ্ছেদে কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করা হচ্ছে।