প্রভাবশালী হোক বা ছিন্নমূল আইন তার গতিতে যাবে

ফরিদা খানম

জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম

সুপ্রভাত : গত ৩ সেপ্টেম্বর পরিবেশ, বন ও জলবায়ুমন্ত্রণালয়  থেকে জেলাপ্রশাসন বরাবর পাহাড় দখল করে বসবাসকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করা হয়। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের কার্যক্রম কী?

জেলা প্রশাসক : মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আমাদের সর্বপ্রথম এজেন্ডা হচ্ছে পাহাড়রক্ষা। আমরা পাহাড় রক্ষার্থে নানা ব্যবস্থায় এগুচ্ছি। প্রথমত আমরা পাহাড়ে থাকা বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা বন্ধ করার কথা ভেবেছি। আমরা সাপ্তাহিক একটি প্ল্যানে অভিযান পরিচালনা করছি।

সুপ্রভাত : পাহাড়কাটা বা দখলের বিরুদ্ধে অভিযানে দেখা যায়, দখলদারদের নামমাত্রই অর্থদ- দিয়ে আবারও একই অপরাধে লিপ্ত হয়। বর্তমান জেলা প্রশাসন এ ধরনের অভিযানের ক্ষেত্রে নতুন কিছু ভাবছে কিনা?

জেলা প্রশাসক :পাহাড়ে যারা বসবাস করে সাধারণত এদের অনেকেই জানেন না পাহাড়ে বসবাস করা তাদের জন্য কতটা ঝুঁকিপূর্ণ। প্রতিবছরই কোথাও না কোথাও পাহাড় ধস হচ্ছে। তাই এই বিষয়টি তাদেরকে আগে সচেতন করতে হবে।তবে পাহাড়ে বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস বন্ধ থাকলে সহজেই তাদেরকে পাহাড় থেকে সরানো সম্ভব বলে মনেকরি।

সুপ্রভাত: অনেক সময় আমরা শুনি, জেলা প্রশাসন বা অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের কে নানাভাবে ম্যানেজ করে দখলদারেরা পাহাড়ে বসবাসের সুযোগ নেয়। এ বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখছেন?

জেলাপ্রশাসক: পাহাড় দখলদারেরা প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নানাভাবে ম্যানেজ করবে এটি অসম্ভব। এটি বিতর্কিত বিষয়।  জেলা প্রশাসনের কোনো কর্মকর্তা জড়িত আছে মনে করিনা। তবে অন্যায় কেউ করলে তার প্রতি আমরা কোনোভাবে সহানুভূতিশীল হবোনা। আমরা সুষ্ঠু তদন্তে প্রশাসনের যে-ই  হোক, তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবো।

সুপ্রভাত: বায়েজিদ, আকবরশাহসহ নগরীর বিভিন্ন পাহাড়গুলোতে আমরা দখলদার হিসেবে সমাজের প্রভাবশালীদের হাত থাকার অভিযোগ পাই। এসব প্রভাবশালীরা সামাজিকভাবে বেশ শক্তিশালী হওয়াতে প্রশাসন অনেকসময় এগুতে পারে না। বর্তমান জেলা প্রশাসন কি তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে  যেতে পারবে?

জেলা প্রশাসক: আপনাকে শুরুতেই বলেছি, বিদ্যুৎ, পানি যখন আমরা বন্ধ করে দেব তখন আর সহজেই জনবসতি গড়ে ওঠার পরিবেশ থাকবে না। আর প্রভাবশালী হোক বা ছিন্নমূল, অপরাধ মানেই অপরাধ। আইন তার গতিতে যাবে।

সুপ্রভাত: পরিবেশ রক্ষার্থে পাহাড় দখলকারী প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে তথ্য দিতে সাধারণ জনগণ ভয় পান। যদি  কোনো সচেতন ব্যক্তি তার নাগরিক দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে এভাবে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেন, তবে তার নিরাপত্তার বিষয়ে জেলা প্রশাসন কতটা ভাবছেন?

জেলাপ্রশাসক: আমাদের কাছে নঅনেকে যারা তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করছেন। এটি মানবিক কাজ। কেউ জনসচেতনতার জন্য আমাদেরকে সহযোগিতা করলে, আমরা তাদের পাশে অবশ্যই থাকবো।