সুপ্রভাত ডেস্ক »
জীবনের বেশীর ভাগ সময়ই কাটিয়েছেন এফডিসিতে, সোমবার দুপুরেও এলেন; তবে এবার প্রবীর মিত্র এলেন একেবারে ভিন্ন চেহেরায়, ভিন্ন পরিস্থিতিতে এবং জীবনে শেষ বারের মতো।
তাঁর অপেক্ষায় ছিলেন সহকর্মীরা। এফডিসিতে উপস্থিত ছিলেন চিত্রনায়ক আলমগীর, উজ্জ্বল, ইলিয়াস কাঞ্চন, শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর, নির্মাতা ছটকু আহমেদ, খোরশেদ আলম খসরু সহ অনেক অভিনেতা অভিনেত্রী ও এফডিসির কর্মকর্তা কর্মচারিরা।
প্রবীর মিত্রের মরদেহ সামনে রেখে এসময় তার উদ্দেশ্যে শোক প্রকাশ করেন উপস্থিত সহকর্মী অভিনেতা অভিনেত্রীরা। পরে সেখানেই হয় প্রথম নামাজে জানাজা। গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সিক্ত হন প্রবীর মিত্র। এফডিসিতে প্রথম জানাজা শেষে অভিনেতার মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি রওনা হয় চ্যানেল আইয়ের উদ্দেশে।
চ্যানেল আই চত্বরে হবে অভিনেতা প্রবীর মিত্রের দ্বিতীয় নামাজে জানাজা। সেখান থেকে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে আজিমবুর কবরস্থানে। সেখানেই চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন বহু কালজয়ী সিনেমার এই গুণী অভিনেতা।
প্রবীর মিত্রের মৃত্যু হয় রোববার (৫ জানুয়ারি) রাত ১০টা ১০ মিনিটে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় । নানা শারীরিক জটিলতা নিয়ে গেল ২২ ডিসেম্বর থেকে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন প্রবীর মিত্র।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রবীর মিত্র ‘লালকুটি’ থিয়েটার গ্রুপে অভিনয়ের মাধ্যমে তাঁর অভিনয় জীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে পরিচালক এইচ আকবরের হাত ধরে ‘জলছবি’ শিরোনামে সিনেমার মধ্য দিয়েছে বড়পর্দায় তাঁর অভিষেক হয়। ক্যারিয়ারের শুরুতে নায়ক চরিত্রে দেখা গেলেও বেশির ভাগ সিনেমায় চরিত্রাভিনেতা হিসেবে দেখা মিলেছে তাঁর। অভিনয়ের বাইরে প্রবীর মিত্র ষাটের দশকে ঢাকা ফার্স্ট ডিভিশন ক্রিকেট খেলেছেন, ছিলেন অধিনায়ক। একই সময় তিনি ফার্স্ট ডিভিশন হকি খেলেছেন ফায়ার সার্ভিসের হয়ে। এ ছাড়া কামাল স্পোর্টিংয়ের হয়ে সেকেন্ড ডিভিশন ফুটবলও খেলেছেন।
সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় অভিনয় শুরু করেন প্রবীর মিত্র। এইচ আকবর পরিচালত ‘জলছবি’ ছবিতে চিকিৎসকের চরিত্রের মধ্যে দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রে সূচনা হয় তাঁর। এরপর একই পরিচালকের ‘জীবন তৃষ্ণা’ ছবিতে মূল চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। নায়ক চরিত্রে অভিনয় করেছে ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘চাবুক’, ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’সহ বেশ কিছু চলচ্চিত্রে। প্রবীর মিত্রের স্ত্রী অজন্তা মিত্র ২০০০ সালে মারা গেছেন। প্রবীর মিত্রের এক মেয়ে ও তিন ছেলে।