সুপ্রভাত ডেস্ক »
সরকারি সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাই প্রধানমন্ত্রী শ্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে আগামী বুধবার থাইল্যান্ডে যাচ্ছেন। ২৪ থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত ছয়দিনের এই সফরে দেশটির সঙ্গে সহযোগিতা প্রসারে এ সফরে দু’দেশের মধ্যে একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক ও একটি লেটার অব ইন্টেন্ট স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সফরে প্রধানমন্ত্রী ইউনাইটেড নেশনস ইকনোমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিকের (ইউএনএসকাপ) ৮০তম অধিবেশনে যোগদান করবেন।
আজ (সোমবার, ২২ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ সফরের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরে এসব তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘২৬ এপ্রিল থাইল্যান্ডের গভর্নমেন্ট হাউজে দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। একই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সৌজন্যে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন। দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি সংক্রান্ত চুক্তির পাশাপশি জ্বালানি, পর্যটন ও শুল্ক সংক্রান্ত পারস্পরিক সহযোগিতা বিষয়ক তিনটি সমঝোতা স্মারক এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা শুরুর জন্য একটি লেটার অব ইন্টেন্ট স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে।’
সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের রাজপ্রাসাদে রাজা মহা ভাজিরা লংকর্ন ফ্রা ভাজিরা ক্লাচাও উহুয়া এবং রাণী সুধিদা বজ্রসুধা বিমলা লক্ষণের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ সফরের মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি পর্যালোচনার পাশাপাশি অন্যান্য অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় বিশেষত বিনিয়োগ, পর্যটন, জ্বালানি, স্থল এবং সমুদ্র সংযোগ, উন্নয়ন প্রভৃতি খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড পর্যটন খাতের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে মানব সম্পদ উন্নয়ন, বৌদ্ধ সার্কিট পর্যটন প্রচারণা, পর্যটন অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগ প্রভৃতি ক্ষেত্রে যৌথ কার্যক্রম ও দক্ষতা বিনিময়ের মাধ্যমে পারস্পরিক সুবিধা অর্জন করতে পারবে বলে আশাপ্রকাশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘পর্যটন শিল্পে এই সহযোগিতার ফলে উভয় দেশে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়া বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি করা হলে উভয় দেশের সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে যোগাযোগ সহজতর হবে এবং বিভিন্ন সভা-সেমিনার ও প্রশিক্ষণে সরকারি কর্মকর্তারা সময়মত যোগদান করতে পারবেন।’
প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার মর্যাদালাভে বাংলাদেশের আবেদনের বিষয়ে আরও জোরালোভাবে অনুরোধ করা এবং রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসন ও মিয়ানমারে চলমান সংঘাত নিরসনে থাইল্যান্ডসহ আসিয়ান সদস্যরাষ্ট্রগুলোকে অধিকতর সক্রিয় ও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানানো হবে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
তিনি জানান, ব্যাংককে জাতিসংঘ সম্মেলন কেন্দ্রে ২৫ এপ্রিল এশীয় প্রশান্ত অঞ্চলের জন্য জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসকাপ) ৮০তম অধিবেশনে জাতিসংঘের এজেন্ডা ২০৩০ ও টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ বক্তব্য দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
একই দিন প্রধানমন্ত্রীর সাথে ইউএনএসক্যাপের নির্বাহী সচিব সৌজন্য সাক্ষাতেরও কথা রয়েছে।
