নিজস্ব প্রতিবেদক
‘নারীর প্রজনন স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস)। সরকারের পাশাপাশি বিএনপিএস যে কাজ করছে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরকার সারাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করেছে। সেখানে হেলথ প্রোভাইডার, চিকিৎসকসহ বিভিন্ন ধরনের সুবিধা আছে। কিন্তু গ্রামে এখনো ধাত্রী নির্ভরতা আছে। এখন সময় পাল্টেছে। আধুনিক বিশ্ব আগে এত সুযোগ সুবিধা ছিল না।’
রবিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাংসদ সামশুল হক চৌধুরী এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যসম্মত পদ্ধতি ব্যবহার না করায় অনেক ধরণের স্বাস্থ্য সমস্যা হত। নানা কুসংস্কার ছিল। নারীদের প্রজনন স্বাস্থ্যজনিত রোগের চিকিৎসা না করে মানুষ টোটকা চিকিৎসা করত। এতে মায়েরা মৃত্যুর মুখে ধাবিত হত। সরকার এখন অনেক উদ্যোগ নিয়েছে। নারী শিক্ষা প্রসারিত করতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অবকাঠামো, উপবৃত্তি প্রদানসহ সকল উদ্যোগ নিয়েছে। মেয়েরা আজ উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সাবলম্বী হচ্ছে। মেয়েদের লেখাপড়ার প্রবল ইচ্ছা আছে। কিন্তু পরিবারের চাপে অনেক সময় পারে না। তারা বাল্য বিবাহের শিকার হয়।’ এর আগে অনলাইনে যুক্ত হয়ে উদ্বোধন বক্তব্য দেন বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ’র (বিএনপিএস) নির্বাহী পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবীর।
সভা প্রধান বিএনপিএসের উপ-পরিচালক শাহনাজ সুমী বলেন, নতুন প্রজন্মকে যদি সুস্থ ভাবে গড়ে তুলতে না পারি তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎই ঝুঁকিতে পড়বে।
বিএনপিএসর কর্মকর্তা শরীফ চৌহানের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন বিএনপিএস এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক সঞ্জয় মজুমদার। উপস্থিত ছিলেন বিএনপিএস চট্টগ্রাম কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক ফেরদৌস আহমদ। উদ্বোধনী পর্বে ‘তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থা’র সদস্যরা বাল্য বিয়ে বিরোধী নাটিকা মঞ্চস্থ করেন। কনফারেন্স উপলক্ষ্যে ১০ উন্নয়ন সংস্থা শিল্পকলা প্রাঙ্গণে স্টল স্থাপন করেছে। উদ্বোধনী অধিবেশনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটির প্রোগ্রেসিভের নির্বাহী পরিচালক সুচরিতা চাকমা, হিল ফ্লাওয়ার এর নির্বাহী পরিচালক ডা. নিলু কুমার তঞ্চঙ্গ্যা, টংগ্যা’র এর নির্বাহী পরিচালক প্রাণজিত দেওয়ান ও উইভ এর নির্বাহী পরিচালক নাইইউ প্রু মারমা, বান্দরবানের অনন্যা কল্যাণ সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক ডনাই প্রু নেলী, গ্রাউস’র নির্বাহী পরিচালক চাই সিং মং ও তহ্জিংডং এর নির্বাহী পরিচালক চিং সিং পরু, এবং খাগড়াছড়ির জাবারাং কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিচালক মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা, তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থা এর নির্বাহী পরিচালক রিপন চাকমা ও খাগড়াপুর মহিলা কল্যাণ সমিতি এর নির্বাহী পরিচালক শেফালিকা ত্রিপুরা। অধিবেশনগুলোতে অংশ নেন স্বাস্থ্য বিভাগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ডা. মো. সাখাওয়াত উল্যাহ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক মোস্তফা কামাল যাত্রা, খাগড়াছবড়ির সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ছাবের, বান্দরবান পার্বত্য জেলার পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক ডা. অং চালু, খাগড়ছড়ির উপপরিচালক এমরান হোসেন চৌধুরী, রাঙামাটির সহকারী পরিচালক ডা. বেবী ত্রিপুরা, বান্দরবান সদর হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ (গাইনি বিভাগ) ডা. নাজনীন আহমেদ এবং রাঙামাটির মেডিকেল অফিসার এমরুল হোসেন।
আজ ‘মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা’ এবং ‘জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ’ বিষয়ক অধিবেশন পরিচালিত হবে। উল্লেখ্য, তিন পার্বত্য জেলার ১৭টি উপজেলার ৬১টি ইউনিয়নে উক্ত প্রকল্প বাস্তবাায়িত হচ্ছে।