নিজস্ব প্রতিবেদক »
সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, প্রকৃতিকে ভালোবাসতে না পারলে প্রকৃতি আমাদের সঙ্গে বৈরী আচরণ করবে। পৃথিবীতে প্রকৃতি বিরূপ প্রভাব বিস্তার করছে, এর কারণ আমরাই প্রকৃতি ধ্বংস করছি। অনাদিকাল থেকে বৃক্ষের সাথে মানুষ ও প্রকৃতির নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান।
গতকাল শনিবার বিকেলে সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে তিলোত্তমা চট্টগ্রামের সহযোগিতায় আয়োজিত প্যারেড ময়দানে সাত দিনব্যাপী নান্দনিক চট্টগ্রাম মেয়র অ্যাওয়ার্ড ও সবুজমেলা-২০২২’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মেয়র আরও বলেন, ছাদ বাগান করছেন, বেশ ভালো কথা। তবে এ বাগানের জন্য যেন ভোগান্তি পোহাতে না হয় সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। কারণ ছাদ বাগানের টবে প্রচুর পানি জমে থাকে। সে পানিতে জন্ম নেয় এডিশ মশা। ফলে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ে। তাই গাছ লাগিয়ে নিয়মিত পরিচর্যা করতে হবে।
মেয়র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একসময় চট্টগ্রাম ছিল সবুজের সমারোহ। সাগর-পাহাড়-নদীবেষ্টিত এই নগরীর সৌন্দর্য দেখার জন্য অনেক পর্যটক আসতো এখানে। আমরা সেই পাহাড়গুলো কেটে প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট করেছি। তিনি বলেন, কর্ণফুলী নদী বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণ, এই কর্ণফুলী নদীতে ৮ হতে ১০ ফুট পলিথিনের স্তূপ জমে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। এতে চট্টগ্রাম বন্দর অচল হওয়ার সম্মুখীন। এখনই আমাদের সচেতন হতে হবে। যাতে পরিবেশ রক্ষা করা যায়।
সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন চসিক পরিবেশ স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন, কাউন্সিলর মো. শহিদুল আলম, নুর মোস্তফা টিনু, হাসান মুরাদ বিপ্লব, শাহেদ ইকবাল বাবু, চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, স্থাপতি আশিক ইমরান, তিলোত্তমা চট্টগ্রামের কর্ণধার সাহেলা আবেদীন, নার্সারি মালিক সমিতির পক্ষে হাজী জসিম উদ্দিন প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম বলেছেন, সবুজ মেলা একটি ধারবাহিক প্রক্রিয়া। এই নগরীর পরিবেশ রক্ষায় ও সবুজায়নের লক্ষ্যে বিগত সময়ে প্রাক্তন মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সময় থেকে নগরীতে বৃক্ষমেলা হয়ে আসছে। সেটাই এখন সবুজ মেলা। তিনি বলেন, আমাদের ঐতিহ্যময় গাছগুলো এখন বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এ প্রজন্মের কাছে এখন নতুন নামে নতুন গাছ। এক সময়ে ঐতিহ্যময় গাছে ফল ধরত, আর সেই ফল খেতে গাছে পাখি আসত। পাখির কিচির মিচির শব্দে বাংলার সেই শাশ্বত ঐতিহ্যের পরিবেশ মানুষকে মুগ্ধ করত। তিনি চট্টগ্রাম নগরীকে পরিবেশবান্ধব ও সবুজ নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী ও অতিথিবৃন্দ বেলুন উড়িয়ে সবুজ মেলার উদ্বোধন করেন। মেলায় ৬০টি নার্সারি, জৈবসারসহ বিভিন্ন স্টল রয়েছে। সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠানে থাকছে ৯-১৩ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টায় সবুজায়নে আলোচনা, ১১-১৩ অক্টোবর সকাল ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত ছাদ বাগান প্রশিক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ, ১৩ অক্টোবর বিকাল ৩টা চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, ১০-১৪ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ১৪ অক্টোবর বিকাল ৫টায় পুরস্কার বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠান।