পটিয়া উপজেলার হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়নের নন্দীর খালে সরকারি অর্থে নির্মিত একটি সেতু অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। কারণ সেতুটির সঙ্গে সড়কের কোন সংযোগ নেই। যে কারণে সেতুটি নির্মাণের পরও কোনা কাজে আসছে না জনগণের। ফলে ওই এলাকায় মানুষের দুর্ভোগও শেষ হচ্ছে না।
উপজেলার হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নন্দীর খালে দীর্ঘদিন একটি বাঁশের সাঁকো ছিল। ওই সাঁকো দিয়ে লোকজন চলাচল করত। খালের পশ্চিম পাড়ে রয়েছে হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির বাড়ি। সেতু এলাকায় সড়কটির কোন অস্থিত্ব ছিল না। কর্মসৃজন প্রকল্পের অর্থে হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাস্তার কাজ করেন। বর্তমানে রাস্তার দু’পাশে ঝোপঝাড়ে ভরে গেছে। ৩ বছর আগে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস ২৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় সেতুর টেন্ডার করে। টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ পায় মিহাদ ট্রেডিং নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। মিহাদ ট্রেডিং কাজটি পেলেও কার্যাদেশের দুই বছর পর ঠিকাদারের সাব কন্ট্রাক্টর কাজটি শুরু করেন। সেতুটির কাজ শেষ হলেও সংযোগ সড়কের কাজ শেষ করা হয়নি। ফলে সরকারি অর্থে প্রায় ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি এখন ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, জনস্বার্থে সেতু এলাকায় একটি রাস্তা নির্মাণ করা হয়। অথচ সেতুটি নির্মাণের পর সংযোগ সড়কের কাজ শেষ করা হয়নি। উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় আগামীতে বিষয়টি উত্থাপন করা হবে। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মিহাদ ট্রেডিং এর সাব কন্ট্রাক্টর জানিয়েছেন, অস্তিত্ববিহীন একটি রাস্তার মাঝামাঝিতে খালের ওপর যে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। বিভিন্ন কারণে সেতুর সংযোগ সড়কের কাজ শেষ করতে পারেন নি। যে কোন সময় সংযোগ সড়কের কাজ শেষ করা হবে।
আমাদের দেশে টেকসই উন্নয়নের বড় বাধা সমন্বয়হীন উন্নয়ন পরিকল্পনা। ২৬ লাখ টাকা দিয়ে একটি সেতু নির্মাণ করা হলো অথচ সেতুর সঙ্গে সংযোগ সড়ক নির্মিত হলো না তাহলে আর সেতু নির্মাণের ফল কী হলো ? কেউ কেউ দাবি করছেন এটি অস্তিত্বহীন সড়ক। মেনে নিলাম একটি নতুন সড়ক নির্মাণ করা হলো কিন্তু সেতুর প্রয়োজন যেহেতু আছে সেহেতু সেতুর সঙ্গে সংযোগ সড়ক কেন নির্মিত হলো না? না কি পুরো প্রকল্পটিরই কোনো প্রয়োজন নেই। বিভিন্ন সময়ে আমরা এমনও দেখেছি কোনো প্রয়োজন ছাড়াই শুধু সরকারি অর্থের শ্রাদ্ধ করতে অনেক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। অনেক সময় অস্তিত্বহীন প্রকল্পের নামে সরকারি টাকার ভাগবাটোয়ারা হয়। নদী, খাল সড়ক ছাড়া সেতু নির্মাণ করা হয়েছে এমন দৃশ্যও আমরা দেখেছি। কাজেই উন্নয়ন পরিকল্পনা করার সময় সরকারের অর্থের সঠিক ব্যবহার হচ্ছে কি না সে বিষয়ে খেয়াল রাখা দরকার । সরকারের টাকা মানে জনগণের টাকা আর জনগণের টাকা নয়-ছয় করার অধিকার কারো নেই ।