প্যারাবনে নিয়ে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ

সড়কে বিক্ষুব্ধ জনতার বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিনিধি, চকরিয়া »

চকরিয়ায় সিএনজি অটোরিকশা থেকে নামিয়ে প্যারাবনে নিয়ে গিয়ে ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে। ৭/৮ জনের বখাটে সন্ত্রাসী জড়ো হয়ে রোববার রাত ১০টার দিকে উপজেলার উপকূলীয় বদরখালী মহেশখালী সেতুর পাশে প্যারাবনের ভেতরে ঘটেছে এ ঘটনা।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ভিকটিম কিশোরী জানান, রোববার রাতে বাঁশখালী বোনের বাড়িতে বেড়ানো শেষে তিনি মহেশখালী নিজের বাড়ি যাচ্ছিলেন। রাত ১০ টার দিকে তিনি বদরখালী ফেরীঘাট থেকে মহেশখালীগামী একই সিএনজি অটোরিকশায় উঠে। পরে সেতুর উপর গিয়ে গাড়ি নষ্ট হওয়ার অযুহাত দেখিয়ে চালক সিএনজি অটোরিকশার স্ট্রাট বন্ধ করে দেয়।
এ সময় কিছু বুঝার আগে চার যুবক এগিয়ে এসে মুখ চেপে ধরে ভয় দেখিয়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে সড়কের পাশে বেড়িবাঁধ সংলগ্ন প্যারাবনে নিয়ে যায়। পরে পর্যায়ক্রমে প্রথমে দুইজন, পরে আরও দুইজন মিলে আমাকে ধর্ষণ করে। এরপর আরও কয়েকজন ধর্ষণ করেছে।
ভিকটিম কিশোরী জানান, ঘটনার একপর্যায়ে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। পরে জ্ঞান ফিরলে আমি সড়কে এসে চিৎকার চেচামেচি করি, এ সময় আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে আমাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: মনজুর কাদের ভূইয়া বলেন, রোববার দিবাগত রাত ১ টার দিকে বদরখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থা থেকে ওই কিশোরীকে চকরিয়া উপজেলা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ওসি আরও বলেন, রাতে ঘটনাটি শুনা মাত্র সহকারী পুলিশ সুপার (চকরিয়া সার্কেল) রাকিব উর রাজা সহ আমি ঘটনাস্থলে যাই। ঘটনাস্থল থেকে ধর্ষণের কিছু আলামত পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং তাদের গ্রেফতারে পুলিশের চিরুনি অভিযান চলছে।
এদিকে কিশোরীকে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় সম্পৃক্ত বখাটে সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা গতকাল সোমবার দুপুর ১২টার দিকে চকরিয়া উপজেলার বদরখালী-মহেশখালী ব্রিজ এলাকায় সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচল বন্ধ দেয়। এতে দুর্ভোগে পড়ে হাজার হাজার যাত্রী। খবর পেয়ে চকরিয়া থানার ওসি মো. মঞ্জুর কাদের ভূঁইয়া ঘটনাস্থলে গিয়ে জড়িতদের গ্রেপ্তারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দেওয়ার আশ্বাস দিলে সড়ক থেকে ব্যারিকেড তুলে নেয় ছাত্র-জনতা।
স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, ভিকটিম ওই কিশোরীকে বহন করা সিএনজির চালকের নাম সায়মন। এ ঘটনায় ওই সিএনজি চালক জড়িত থাকার দাবি করেছেন স্থানীয়রা। তাদের দাবি, বদরখালী এলাকায় বখাটে সন্ত্রাসীদের একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট রয়েছে। কয়েকজন যুবক এ সিন্ডিকেটের সদস্য। তারা দীর্ঘদিন ধরে রাত বাড়ার সাথে সাথে এ ধরনের অপরাধ করে থাকেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় অনেক জনপ্রতিনিধি ও সচেতন মহল।