পেয়ারুল ইসলাম চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের নতুন চেয়ারম্যান

প্রাপ্তভোট ২৫৬৭

নিজস্ব প্রতিবেদক »

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এটিএম পেয়ারুল ইসলাম। গতকাল সোমবার অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনে ২৫৬৭ ভোট পেয়ে তিনি বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নারায়ণ রক্ষিত পেয়েছেন ১২৪ ভোট।

সোমবার ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান। তিনি বলেন, ১৫টি কেন্দ্রে ২ হাজার ৭৩০ ভোটারের মধ্যে ২ হাজার ৬৯৬ জন ভোট দিয়েছেন। যা ৯৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এর মধ্যে আনারস প্রতীক নিয়ে এটিএম পেয়ারুল ইসলাম ২ হাজার ৫৬৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে নারায়ণ রক্ষিত পেয়েছেন ১২৪ ভোট।

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম ১৯৬০ সালের ১০ আগস্ট ফটিকছড়ি উপজেলার নানুপুর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৩০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েশন করা সরকারি কর্মকর্তা মরহুম আবুল ফজল বি.এ ও আমেনা বেগমের সন্তান তিনি।

তাঁর দাদা তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী ছিলেন ব্রিটিশ আমলের আইনজীবী, সমাজসেবক ও শিক্ষাবিদ। নানা প্রখ্যাত জমিদার মোখলেছুর রহমান চৌধুরী ও মামা বিশিষ্ট সমাজসেবক, শিক্ষানুরাগী ও দানবীর আদালত খান। সাবেক এমপি ও রাষ্ট্রদূত নুরুল আলম চৌধুরী, রাজনীতিবিদ ও ভাষা সৈনিক অ্যাডভোকেট এমদাদুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট রফিকুল আলম ও ন্যাপ নেতা এমএম শহীদুল্লাহর খালাতো ভাই তিনি। তাঁর শ্বশুর বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল (অব.) আবু তাহের সালাহউদ্দীন, বীর প্রতীক। এটিএম পেয়ারুল ইসলাম দুই পুত্রসন্তানের জনক। জ্যেষ্ঠ সন্তান ও পুত্রবধূ সরকারের পদস্থ কর্মকর্তা। ছোট ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি সফল ব্যবসায়ী ও শিল্প উদ্যোক্তা। এটিএম পেয়ারুল ইসলাম ২০১৪ সালে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন। তিনি প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের (গাড়ি তৈরির কারখানা) পরিচালকের দায়িত্ব পালনকালে দুর্বল প্রতিষ্ঠানটিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপাস্তরিত করেন।

এটিএম পেয়ারুল ইসলাম ১৯৭৪ সালে মাইজভা-ার আহমদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের স্কুল-ছাত্র সংসদে নির্বাচিত জিএস হিসেবে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। ১৯৭৯ সালে নির্বাচিত হন নাজিরহাট কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি। তিনি ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং বাংলাদেশ ‘ল’ স্টুডেন্টস ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাচিত সভাপতি। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক, নব্বইয়ের ছাত্র গণ-আন্দোলনের ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন। ১৯৯০ সালে ফটিকছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ঢাকাস্থ চট্টগ্রাম সমিতির নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক এবং ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন।

বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফটিকছড়ি সংসদীয় আসন থেকে তিনি মহাজোটের প্রার্থী ছিলেন। আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে তিনি বারে বারে কারা নির্যাতিত ও একাধিকবার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েও প্রাণে বেঁচে যান।