নিজস্ব প্রতিবেদক
কথায় আছে মানুষের অন্তরে পৌঁছাতে না পারলে নেতা হওয়া যায় না। দীর্ঘদিন যাবত সেই প্রচেষ্টাই করে যাচ্ছেন জামালখান ২১ নম্বর ওর্য়াডের কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন। তার হাত ধরে জামালখান ইতোমধ্যে একটি নান্দনিক এলাকায় পরিণত হয়েছে। এবারে তিনি পরিবার-পরিজন,আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের সহযোগিতায় হাতে নিয়েছেন একটি মহৎ উদ্যোগ। সেটি হলো, জামালখানসহ আশপাশের এলাকার ২০০ জন ভাসমান মানুষের মধ্যে প্রতি শুক্রবার জামালখান মোড়ে দুপুরের খাবার বিতরণ করা। যার নাম দেয়া হয়েছে ‘শৈবালের মেহমানখানা’। এ মেহমানখানার স্লোগান হলো, ‘পেটভরে ভাত খাবো।’
শৈবালের মেহমানখানা সম্পর্কে জানা যায়, প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজের পর দুপুর ২টা থেকে খাবার বিতরণ শুরু হবে। শুরুতে ২০০ জনের মধ্যে খাবার বিতরণ করার পরিকল্পনা হাতে নেয়া হলেও আগামীতে সেটি ৩০০ জন পর্যন্ত গড়াতে পারে। খাবার গ্রহণের পূর্বে সকলকে টোকেন প্রদান করা হবে। ২০০ জনের খাবার প্রস্তুতের পরিকল্পনা গ্রহণ করায় যারা টোকেন নেবেন কেবল তাদেরই খাবার প্রদান করা হবে। মেন্যুতে থাকছে পোলাও, মুরগি ও সবজি। উদ্যোক্তাদের ২৫জনের গ্রুপটির একজন করে সদস্য প্রতি শুক্রবারে খাবারের দায়িত্ব নেবেন। প্রতি শুক্রবার খাবারের জন্য সদস্য প্রতি বরাদ্দ করা হচ্ছে ১০-১৫ হাজার টাকা। শৈবালের মেহমানখানার উদ্যোক্তাদের মধ্যে আত্মীয়-পরিজন ও বন্ধুবান্ধব ছাড়াও শৈবাল দাশ সুমনের বড়ভাই সুজয় দাশও সদস্য হিসেবে এ দায়িত্ব পালন করবেন।
উদ্যোক্তাদের একজন অঞ্জন কান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘আসলে উদ্যোগটা বন্ধু শৈবালেরই। সে যখন তার এ চিন্তাটা আমাদের সাথে শেয়ার করলো, আমরা সকলে সাধুবাদ জানালাম। কারণ, এটা একটা মহৎ কাজ। কেউ উদ্যোগ না নিলে এ ধরনের কাজ হয় না। আমরা চিন্তা করলাম, আমরা যদি ২০ থেকে ২৫ জনের একটা গ্রুপ হই, তাহলে কারো একার ওপর চাপ হলো না। আবার সেবাটাও নিশ্চিত করতে পারলাম। তাহলে একদিনের দায়িত্ব নেওয়ার পর আমি প্রায় ২৫ সপ্তাহ সময় পাচ্ছি। আমাদের ইচ্ছে আছে জাতীয় দিবসগুলোতে দুস্থদের জন্য এর চেয়ে বিশেষ কিছু করার। আমাদের উদ্যোগটি যেন ফলপ্রসূ ও র্দীঘস্থায়ী করতে পারি, সকলের কাছে দোয়া চাই।’
উদ্যোগটি সম্পর্কে কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন বলেন, ‘আমাদের পরিচিত অনেক ভাসমান মানুষ আছেন। যারা ভিক্ষা করে খান। প্রায়ই ভালো খেতে পান না। যেমন শাহ আনিস মসজিদ, লিচুবাগান, কদমমোবারকসহ আরো কিছু জায়গায় তারা অবস্থান করেন। আমাদের স্বেচ্ছাসেবক ছোটোভাইদের দিয়ে তাদের এ ব্যাপারে পূর্বে জানিয়েছি , টোকেন প্রদান করেছি। বয়স্ক ছাড়াও নারী-শিশুরাও এখানে খেতে আসছেন। তবে আমরা যেহেতু আপাতত একটা র্নিদিষ্ট সংখ্যা বেঁধে দিয়েছি তাই টোকেন ছাড়া কাউকে দিতে পারছি না। সংখ্যাটা সময়ের সাথে বাড়লে নিশ্চয়ই বাকিরাও খেতে পাবে। তাদের সপ্তাহে অন্তত একটি দিন পেটপুরে ভাত খাওয়ানোর দায়িত্ব নিতে পেরে আমরা আনন্দিত। আমাকে আমার পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবেরা স্বতঃর্স্ফূতভাবে সহযোগিতা করেছে। তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’