সুপ্রভাত বিনোদন ডেস্ক »
সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য কাজী নওশাবার মন বরাবরই উতলা। সুযোগ পেলেই তিনি ছুটে যান চা-অঞ্চলে। এই তো কিছুদিন আগেও একমাত্র কন্যা প্রকৃতির জন্মদিন করলেন সিলেট অঞ্চলে গিয়ে, চা-বাগানের শিশুদের সঙ্গে।
মূলত তখনই ঐ শিশুরা একটা আবদার করে তাদের প্রিয় বন্ধু নওশাবার কাছে। আর সেটি রক্ষা করতে গিয়ে এই অভিনেত্রী এবার টানা ১৮ ঘণ্টা ছিলেন নেটওয়ার্কের বাইরে!
শুক্রবার রাত ১১টা নাগাদ নেটওয়ার্কে ফিরে নওশাবা কথা বলেন বাংলা ট্রিবিউন-এর সঙ্গে। জানান, এবার তিনি পূজা উৎসব করতে ঢাকা থেকে ছুটে যান শ্রীমঙ্গলের গভীরে। এতোটাই গভীর, মোবাইল নেটওয়ার্কও নেই। প্রায় ১৮ ঘণ্টা ছিলেন সেখানে। বললেন, ‘এর আগে আমার মেয়ে প্রকৃতির জন্মদিনটা এখানকার বাচ্চাদের সঙ্গে পালন করি। তখনই বাচ্চারা বায়না করলো, এবারের পুজোটা তাদের সঙ্গে থাকতে। তো আমিও ঢাকায় বসে ওদেরকে একটা সারপ্রাইজ দেওয়ার পরিকল্পনা করি। অবশেষে সেটি সফলভাবে শেষ করতে পেরে কি যে আনন্দ লাগছে, বুঝাতে পারবো না।’
কাজী নওশাবা পূজার অষ্টমীর দিন কোরিওগ্রাফার আলিফকে নিয়ে ঢাকা থেকে যান শ্রীমঙ্গলের নিঝুম ঐ চা বাগানে। প্রাসঙ্গিক কারণেই বাগানের নাম/ঠিকানা বলতে চাইছেন না নওশাবা। তো সেখানকার ১০/১২ জন শিশু-কিশোরদের নিয়ে নওশাবা-আলিফ নাচের প্র্যাকটিস করার সুযোগ পান মাত্র ২/৩ ঘণ্টা। এটা ১৩ অক্টোবরের খবর। এরপর ১৪ অক্টোবর নবমীর দিন স্থানীয় পূজা মণ্ডপে সেই নাচ পরিবেশন করেন তারা। নওশাবা ও আলিফ ঢাকায় ফিরে আসেন ১৫ অক্টোবর রাতে।
নওশাবা বলেন, ‘চা বাগানের শিশুদের সাথে প্রায়ই আমি সময় কাটাই। অনেকেই সেটা জানেন। তো এবার যখন প্ল্যান করলাম পূজায় ওখানে যাবো, তখন সিদ্ধান্ত নিলাম নাচের। কোরিওগ্রাফার আলিফের সঙ্গে আলাপ করলাম। বললাম, ওরা আসাম-ত্রিপুরার মানুষ। ওদের রক্তে নাচ আর তাল বহমান। আমরা নাচ শেখালে ওরা সবচেয়ে আনন্দ পাবে। যেমনটা ভেবেছি, তাই হলো। শিশুরা তো নাচলোই, ওদের বাবা-মা’রাও আমাদের নাচের তালে মিশে গেল। নবমীর রাতে আমরা সবাই মিলে মণ্ডপে নাচলাম। সেটা আমার জন্য স্বর্গীয় সুখের মতো ছিলো।’
পূজা উৎসবকে ঘিরে সাম্প্রতিক নেতিবাচক কিছু ঘটনার প্রতি দৃষ্টি রেখে নওশাবা বলতে চাইলেন, ‘শ্রীমঙ্গলে যে কাজটি করলাম, সেটাই আসলে আসল বাংলাদেশ। সেটাই সম্প্রীতির বাংলাদেশ। ধর্ম-বর্ণ ভেদ করে আমাদের মিশে যেতে হবে, এভাবেই। হারাতে হবে নেটওয়ার্কের বাইরে।’