সিএমপি
নিজস্ব প্রতিবেদক
মাদকাসক্ত পুলিশ সদস্যদের ‘ডোপ টেস্ট’ করা হবে’। ২০১৯ সালের ২৮ নভেম্বর মাসিক অপরাধ বিষয়ক ও কল্যাণ সভায় এমনটা ঘোষণা দিয়েছিলেন চট্টগ্রাম মহানগরের সাবেক পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুবর রহমান। কিন্তু তার এ ঘোষণা বাস্তবায়ন হয়নি প্রায় দশ মাসেও। গত শনিবার ‘ডোপ টেস্টে’ মাদক গ্রহণের প্রমাণ পাওয়ায় ঢাকা মহানগর পুলিশের ২৬ জন সদস্যকে চাকরিচ্যূত করার ঘোষণা দেন ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম।
তার (ডিএমপি কমিশনার) এ ঘোষণার পর নড়েচড়ে বসেন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশও। তবে নগর পুলিশ কমিশনার সালেহ মো. তানভীরের দাবি এক সপ্তাহ আগে থেকেই সন্দেহভাজন কিংবা অভিযোগ উঠা পুলিশ সদস্যদের ‘ডোপ টেস্ট‘ শুরু করেছেন তিনি।
গত শনিবার বেলা ৩টায় তার কার্যালয়ে পুলিশ কমিশনার এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমি এক সপ্তাহ আগে থেকে পুলিশ সদস্যদের ডোপ টেস্ট শুরু করেছি। মাদকের সাথে কোন পুলিশ সদস্যের সম্পর্ক থাকলে তাকে ছাড় দেয়া হবে না। পরীক্ষায় যাদের ‘পজিটিভ’ আসবে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হবে। পরবর্তীতে চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করার মতো কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
গত এক সপ্তাহের ডোপ টেস্টে কতজন পুলিশ সদস্য’র পজিটিভ পাওয়া গেছে, এমন প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গিয়ে পুলিশ কমিশনার সালেহ মো. তানভীর সুপ্রভাতকে বলেন, ‘আমরা একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি।’ এছাড়া সিএমপির মাদকাসক্ত পুলিশ সদস্যদের একটি তালিকা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়ে সিএমপির এ শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ডোপ টেস্টে যদি মাদক গ্রহণের প্রমাণ মিলে তাহলে কোন অজুহাত আর তদবিরেই চাকরি রক্ষা করা যাবে না। এর আগে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে সাবেক পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুবর রহমান ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘কোনো পুলিশ সদস্য যদি মাদকের কারবারে জড়ায় তাহলে তাদের হাতে হাতকড়া পড়ানো হবে।’ দামপড়া পুলিশ লাইনস্থ মাল্টিপারপাস শেডে পুলিশের মাসিক অপরাধ সভা ও মাসিক কল্যাণ সভায় এ ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি।
জানা গেছে, ইতিমধ্যে ডিএমপির শতাধিক পুলিশ সদস্যের ডোপ টেস্ট করা হয়েছে। এরমধ্যে ২৬ জন পুলিশ সদস্য মাদকাসক্ত বলে প্রমাণ পেয়েছে। এতে রয়েছেন একজন পুলিশ সার্জেন্ট, চারজন এসআই, তিনজন এএসআই, একজন নায়েক ও ১৭ জন কনস্টেবল।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর ডোপ টেস্ট’র পরিপত্র জারি করে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। এর আগে ২০১৮ সালের ৫ ডিসেম্বর সরকারি চাকরিতে যোগ দেয়ার আগে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়। ডোপ টেস্টে মুখের লালা পরীক্ষার মাধ্যমে শেষ সাতদিন, রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে শেষ দুই মাস, চুল পরীক্ষার মাধ্যমে শেষ ১২ মাস এবং স্প্যাইনাল ফ্লুইড পরীক্ষার মাধ্যমে গত পাঁচ বছরের মধ্যে কেউ মাদক গ্রহণ করলেও তা ধরা পড়বে। বর্তমানে শুধু প্রশ্রাব (মূত্র) পরীক্ষার মাধ্যমে ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে। এ পরীক্ষার মাধ্যমে কোন ব্যক্তি শেষ ১০ দিনের ভেতর কোন মাদক গ্রহণ করলে তা ধরা পড়বে।