পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশের ইতিহাস

বাংলাদেশ দলের সিরিজ উদযাপন। ছবি: এএফপি

সুপ্রভাত স্পোর্টস ডেস্ক »

আবহাওয়া পূর্বাভাসকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছে রাওয়ালপিন্ডির আকাশ। প্রস্তুত ছিল ইতিহাসের পট। রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানকে টানা দুই টেস্ট হারিয়ে ইতিহাস গড়ে ফেলল বাংলাদেশ দল। পাকিস্তানকে হারিয়েছে ৬ উইকেটে। পাকিস্তানকে তাদেরই মাটিতে ‘বাংলাওয়াশ’ করে ইতিহাস গড়েছে  লাল-সবুজের বাংলাদেশ।

রাওয়ালপিন্ডিতে সিরিজের প্রথম টেস্টে ১০ উইকেটে জিতে ইতিহাস গড়েছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় টেস্টে জিতে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছেন নাজমুল শান্ত-লিটন দাস-মেহেদী মিরাজরা। এ নিয়ে টেস্টে বাংলাদেশ চতুর্থবার প্রতিপক্ষকে ওয়াইটওয়াশ করল।

রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামের বড় পর্দায় লেখা উঠছে—জয়ের জন্য বাংলাদেশের দরকার ১২ রান। রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়ামের ডিজে ঠিক সে সময়ে সাউন্ডবক্সে বললেন— ‘জিতেগা ভাই জিতেগা!’। ডিজের কথার সঙ্গে মিল রেখে দর্শকেরা বলছিলেন, ‘বাংলাদেশ জিতেগা!’

ক্রিজে থাকা সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম দুটি সিঙ্গেল ও এক বাউন্ডারিতে সংখ্যাটাকে কমিয়ে আনেন ৬-এ, এরপর ৪-এ। সেই কাঙ্ক্ষিত ৪ রান আসে সাকিবের ব্যাট থেকে। ৫৬তম ওভারে আবরার আহমেদের বল কাভারে ঠেলে দিয়ে বাউন্ডারি তুলে নিলেই ইতিহাসের জন্ম দেয় বাংলাদেশ।

ইতিহাস গড়ার মঞ্চটা গতকালই গড়ে বাংলাদেশ। প্রথমে হাসান মাহমুদ ও নাহিদ রানার আগুনে বোলিং, পরে জাকির হাসানের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট থেকে প্রায় ছিটকে পড়ে পাকিস্তান। চতুর্থ ইনিংসে পাকিস্তানের ১৮৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে কাল বিকেলে ৭ ওভারে ৪২ রান তুলে ফেলে বাংলাদেশ। পঞ্চম দিন জয়ের জন্য বাংলাদেশের দরকার ছিল ১৪৩ রান। আজ ৪ উইকেট হারিয়েই বাংলাদেশ সেই লক্ষ্যে পৌঁছেছে।

নাটকীয়তায় ভরা টেস্টে প্রথম ইনিংসে ২৭৪ রান করেছিল স্বাগতিকরা। জবাব দিতে নেমে প্রথম ইনিংসে ২৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে চরম বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। ওই অবস্থা থেকে লিটন দাস ও মেহেদী হাসান মিরাজের বিশ্ব রেকর্ড গড়া ১৬৫ রানের জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায়। লিটনের অনবদ্য ১৩৮ রানে ২৬২ রান তুলে ফেরে লড়াইয়ে। এরপর বোলারদের পালা।  দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তানকে ১৭২ রানে আটকে দিতে বাংলাদেশের তিন পেসার মিলে নেন ১০ উইকেট। টেস্টে এই কৃতি বাংলাদেশের প্রথম। এরমধ্যে হাসান মাহমুদ নেন ইনিংসে পাঁচ উইকেট।

লিটন-মিরাজের ব্যাটিং বীরত্বের পর দ্বিতীয় ইনিংসের বোলিং দুর্দান্ত এক জয়ের পরিস্থিতি তৈরি করে দেয়। সেখানে হাসানের পাশাপাশি বড় ভূমিকা তরুণ পেসার নাহিদ রানার।

এই সিরিজের আগে এমন ফলের প্রত্যাশা খুব বেশি কেউ করেননি। তবে দারুণ প্রস্তুতি নিয়ে পরিকল্পিত ক্রিকেট আর নিখুঁত প্রয়োগে এসেছে অবিশ্বাস্য এক ফল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

পাকিস্তান: ২৭৪ ও ১৭২

বাংলাদেশ: ২৬২ ও ১৮৫/৪

ফল: বাংলাদেশ ৬ উইকেটে জয়ী।