নিজস্ব প্রতিবেদক »
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, ‘জায়গা-জমি নিয়ে আইনগত বেশকিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। প্রকৃত মালিকদের যেন কোনো ধরনের ক্ষতি না হয়, সেসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আইনগুলো করা হয়েছে। এখন ভূমিকর আদায় করতে সরকার সহজ ব্যবস্থা করেছে। ভূমি মালিকরা ঘরে বসেই ভূমির বকেয়া দেখতে পারবেন। ঘরে বসেই বকেয়া বিল পরিশোধ করতে পারবেন। আগামী পহেলা বৈশাখ থেকে ভূমিকর সম্পূর্ণ অনলাইনে আদায় করা হবে।’
গতকাল বৃহস্পতিবার হোটেল রেডিসন ব্লু চট্টগ্রামের মোহনা হলে আয়োজিত রিহ্যাব ফেয়ার ২০২৩ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিল্ডিং কোড মানার ব্যাপারে সিডিএকে আরও তদারকি বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘আবাসন কোম্পানিগুলো উন্নয়ন করছে। বানাচ্ছে সুউচ্চ বিল্ডিং। কিন্তু বিল্ডিং কোড কয়জন মানছে? এ ব্যাপারে সিডিএর দৃষ্টি রাখা উচিত। ডেভেলপারদের প্রতি অনুরোধ, সঠিক মাপের ফ্ল্যাট গ্রাহকদের বুঝিয়ে দিতে হবে। কমন এরিয়ার নামে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কেড়ে নিচ্ছে অনেক আবাসন প্রতিষ্ঠান, যা অনৈতিক। এ ধরনের কর্মকা- থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ডেভেলপারদের আরও সৃজনশীলতার পরিচয় দিতে হবে। ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে মানুষের রিফ্রেশমেন্টের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। খোলামেলা মাঠ ও পর্যাপ্ত হাঁটা-চলার ব্যবস্থা রাখা প্রয়োজন। তিনি বলেন, ব্যক্তি জীবনে আমি একজন ব্যবসায়ী। নির্মাণসামগ্রীর দাম বাড়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সিমেন্টের কথা যদি বলি, সিমেন্টের দাম বাড়িয়েও ব্যবসায়ীরা লসে (লোকসানে) আছে। তবে এ মন্দাভাব বেশিদিন থাকবে না। কেটে উঠবে।’
রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চট্টগ্রাম রিজিওনাল কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুল কৈয়ূম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মাহবুবুল আলম ও রিহ্যাবের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট কামাল মাহমুদ।
চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘ডেভেলপারের হাতে জমি দেওয়ার পর চুক্তির মেয়াদ শেষেও তা হস্তান্তর করতে পারে না অনেক প্রতিষ্ঠান। এতে ডেভেলপারের দুর্নাম হচ্ছে। রিহ্যাবের এ ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। যারা রিহ্যাবের মেম্বার হবে না, তারা যেন আবাসন ব্যবসায় জড়িত হতে না পারেন। মানুষের ভোগান্তি লাঘবে মেয়র হিসেবে আমার প্রতিষ্ঠান একটি কাজ করতে পারে। তা হলো ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া বন্ধ করা। তবে এ প্রস্তাব রিহ্যাবের কাছ থেকে আসতে হবে।
রিহ্যাবের চট্টগ্রাম রিজিওনাল কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুল কৈয়ূম চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামে একটি মাস্টারপ্ল্যান করা হচ্ছে। এমন কোনও মাস্টার প্ল্যান যেন তৈরি না হয় যা নিয়ে সবার প্রশ্ন থাকে। অতীতের মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে অনেক সমস্যা ছিল। ফ্ল্যাট কেনা- বেচার ক্ষেত্রে সেকেন্ডারি মার্কেট তৈরি করা ও ভূমির রেজিস্ট্রেশন ফি সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসার প্রয়োজন বলে মনে করি।’
প্রসঙ্গত, বিগত সময়ে চট্টগ্রামে ১৪টি ফেয়ার সফলভাবে সম্পন্ন করেছে রিহ্যাব। একই ধারাবাহিকতায় এবারও আবাসন নিয়ে নগরবাসীকে একটি মেলা উপহার দিচ্ছে। এবারের ফেয়ারে গোল্ড স্পন্সর হিসেবে ২টি প্রতিষ্ঠান, কো স্পন্সর হিসেবে ১৭টি প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ৬টি, বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস প্রতিষ্ঠান ৫টিসহ মোট ৪৮টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে।