নিজস্ব প্রতিবেদক :
নগরীর ৭টি হাটে পশুতে ভরপুর থাকলেও এখনো পুরোদমে বেচাকেনা জমে উঠেনি। পশুর দাম শুনেই সরে যাচ্ছেন ক্রেতারা। তারা বলছেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে এমনিতেই এবার আয় উপার্জন কম। এই আর্থিক সংকটময় পরিস্থিতিতে হাটে কোরবানির পশুর চড়া দাম হাঁকা হচ্ছে। তবে বিক্রেতারা দাবি করছেন, ক্রেতারা দামের তুলনায় অর্ধেক বলছেন।
হাটের ইজারাদাররা বলছেন, নগরীতে কোরবানিদাতারা প্রতি বছর ঈদের দুই-এক দিন আগে পশু ক্রয় করেন। কারণ বাসা বাড়িতে ৪-৫ দিন ধরে পশু রাখার সুযোগ নেই তাদের। তাই আমরা আশা করছি, বৃহস্পতিবার থেকে বেচাকেনা পুরোদমে জমবে।
বগুড়া থেকে নগরীর বৃহত্তম সাগরিকা পশুর হাটে ফিজিয়ান জাতের আটটি গরু নিয়ে এসেছেন আতাউর রহমান। আকৃতিভেদে এসব গরুর দাম ৮০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা চাইছেন তিনি।
ক্রেতাদের বিষয়ে তিনি বলেন, ক্রেতারা ৮০ হাজার টাকার গরুর দাম বলছেন ৫০ হাজার টাকা। ক্রেতারা দাম জিজ্ঞাসা করে চলে যাচ্ছে। গরু কেনাতে কারো মধ্যে আগ্রহ দেখছি না।
নগরীর হালিশহর সবুজবাগ এলাকা থেকে সাগরিকায় পশু কিনতে গিয়েছিলেন শাহ আলম। কিন্তু পশু না কিনে ফিরে আসেন তিনি। সুপ্রভাতকে তিনি বলেন, বিক্রেতারা এবার গরুর দাম বেশি হাঁকাচ্ছে। ৫০ হাজার টাকা দামের গরু ৮০ হাজার টাকা বলছে। এতো বেশি দামে কীভাবে গরু কিনবো। হাটে যেহেতু পশু ভরপুর তাই আশা করছি, ঈদের দুই-এক দিন আগে দাম পড়ে যাবে।
সাগরিকা হাটের ইজারাদার সাইফুল হুদা জাহাঙ্গীর সুপ্রভাতকে বলেন, বেচাকেনা এখনো তেমন জমেনি। হাটে ২৫ হাজার পশুর মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত মাত্র ৮০০টির মতো পশু বিক্রি হয়েছে। বিক্রেতারা পশুর দাম চড়া বলছে, তাই ক্রেতারা দাম শুনে সরে যাচ্ছে। ক্রেতা-বিক্রেতা যার যার অবস্থানে অনড়। তবে হাটে যেহেতু পশুর সরবরাহ বেশি, তাই মনে হচ্ছে বৃহস্পতিবার থেকে বিক্রেতারা দাম কমিয়ে আনতে বাধ্য হবে।
নগরীর ৭টি হাটে বৃহস্পতিবার থেকে পশু বেচাকেনা শুরু হয়েছে। কিন্তু গত পাঁচ দিনে হাটে বেচাকেনা জমেনি।
নগরীর ষোলশহর বিবিরহাটের ইজারাদার আরিফুল ইসলাম বলেন, পশুর দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে বনিবনা হচ্ছে না। তাই বেচাকেনা এখনো পুরোদমে জমে উঠেনি। বিক্রেতারা বেশি লাভের আশায় দাম ছাড়ছেন না। অন্যদিকে ক্রেতারা এবার আর্থিক সংকটের কারণে কম দামে পশু কিনতে চাইছেন। হয়তো বৃহস্পতিবার থেকে পশুর দাম পড়ে যাবে।
নগরীর কর্ণফুলী নূর নগর হাউজিং এস্টেট বাজারে ৬ হাজার পশু রয়েছে বলে জানিয়েছেন ইজারাদার আবদুর রহিম সওদাগর।কিন্তু মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৫০টি পশু বিক্রি হয়েছে বলে তিনি জানান।
নগরীর পতেঙ্গা কমল মহাজন হাটে ৩ হাজারের মতো পশু রয়েছে বলে জানিয়েছেন ইজারাদার মমতাজ উদ্দিন। কিন্তু মঙ্গলবার পর্যন্ত ১৩০টি পশু বিক্রি হয়েছে বলে তিনি জানান।
দেওয়ানহাট পোস্তারপাড় ছাগলের বাজারে ১ হাজারের মতো ছাগল রয়েছে বলে জানিয়েছেন ইজারাদার খোরশিদ আলম। মঙ্গলবার পর্যন্ত ২০০টি ছাগল বিক্রি হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
জানা গেছে, নগরীর পশুর হাটগুলো ঈদের দিন পর্যন্ত চালু থাকবে।