একটা সময় ছিল যখন খেলোয়াড়দের পদভারে মুখর থাকতো ঐতিহ্যবাহী পলোগ্রাউন্ড মাঠ। অনেক দল একই সঙ্গে এখানে অনুশীলন করতে পারতো। আসলে ব্রিটিশরা মাঠটি তৈরিই করেছিল খেলার জন্য। নগরে এরচেয়ে বড় মাঠ আর নেই।
একটি সময় ছিল যখন খেলোয়াড়দের পদভারে মুখর থাকতো এই মাঠ। চট্টগ্রামের অনেক দল এই মাঠে অনুশীলন করতো । কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই মাঠ থেকে হারিয়ে যায় খেলাধুলা। এই স্থান দখল করে মেলা আর নানামুখী বাণিজ্যিক অনুষ্ঠান। ফলে গত প্রায় দুই দশক ধরে এই মাঠে খেলাধুলার চাইতে মেলা হয়েছে বেশি।
বছরে অন্তত তিনটি মেলা হতো এই মাঠে। এ মেলাগুলো দখল করে রাখতো বছরের অধিকাংশ সময়। আর মেলা শেষে মাঠটি হয়ে পড়তো খেলার অনুপযোগী। মেলার প্যাভেলিয়ন আর স্টল নির্মাণের কারণে মাঠ হয়ে পড়ত ক্ষতবিক্ষত। ফলে এই মাঠে খেলা হয়ে পড়তো একরকম অসম্ভব।
অন্যদিকে গত প্রায় দুই দশকে এই মাঠে বড় কোনো টুর্নামেন্টও আয়োজিত হয়নি। অথচ এক সময় অনেক টুর্নামেন্ট হতো এখানে। এই মাঠকে কীভাবে খেলাধুলার উপযোগী রাখা যায় তা নিয়ে একটি পরিকল্পনাও গ্রহণ করতে চেয়েছিল জেলা ক্রীড়া সংস্থা এবং তৎকালীন রেল মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান। কিন্তু রেলওয়ের কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বাধায় সেটাও আলোর মুখে দেখেনি।
এমনিতেই চট্টগ্রামে মাঠের বেশ সংকট। যে সমস্ত ক্লাব জেলা ক্রীড়া সংস্থায় খেলে আর যারা জেলা ক্রীড়া সংস্থার বাইরে রয়েছে তাদের অনুশীলনের জন্য পর্যাপ্ত কোনো মাঠ নেই। রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ড মাঠে একসাথে অন্তত তিন থেকে চারটি দল অনুশীলন করতে পারে। তাই এই মাঠটি যদি সত্যিকার অর্থে খেলাধুলার জন্য উন্মুক্ত হয় তাহলে সেটা হবে চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনের জন্য বড় একটি সুখবর হবে। এই ব্যাপারে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ড মাঠে কোনো মেলা চলবে না। শুধু খেলার জন্য সংরক্ষিত থাকবে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। রেলওয়ের এমন সিদ্ধান্তে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেক ক্রীড়ামোদীরা। তাদের প্রত্যাশা এবার অন্তত মাঠটাকে খেলাধুলার উপযোগী করে দেবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
‘খেলার মাঠে মেলা নয়’- বলে গতবছর একুশের বইমেলা করতে দেওয়া হয়নি জিমনেসিয়াম মাঠে। তড়িঘড়ি করে সে মেলা সিআরবিতে করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল আয়োজকদের। কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে সে বইমেলা চলাকালীন পলোগ্রাউন্ড মাঠে বাণিজ্যমেলা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
চট্টগ্রামে একটি প্রশংসনীয় কাজ করেছেন বর্তমান জেলা প্রশাসক। তিনি আউটার স্টেডিয়ামকে দখল ও মেলামুক্ত করে খেলার উপযোগী করে তুলেছেন।
আমরা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে বলতে চাই খেলার মাঠে আর কখনও যেন মেলা না হয়।