কাজ চলছে দ্রুতগতিতে : বেজার চেয়ারম্যান
নিজস্ব প্রতিনিধি, টেকনাফ »
কক্সবাজার-টেকনাফ ৮২ কিলোমিটার মেরিনড্রাইভ সড়কের শেষ প্রান্তে সাবরাং জিরো পয়েন্টের পাশে ট্যুরিজম পার্কের নির্মাণকাজ দ্রুতগতিতে চলছে। দৃশ্যমান সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক খুব শিগগিরই দেখা যাবে বলে জানিয়েছেন বেজার চেয়ারম্যান।
জানা গেছে, সমুদ্রজলের নীল রং ধরা দেয় টেকনাফের সাবরাং জিরো পয়েন্টে। দৃষ্টির সীমান্তে থাকে সাম্পানের উথাল নাচন। এখানে চোখ জুড়ানো প্রকৃতির মায়ায় ছুটে আসেন অনেক দেশি-বিদেশি পর্যটক। কোলাহলমুক্ত বালু বিচে আছড়ে পড়া ঢেউয়ের তুখোড় উত্তেজনা উপেক্ষা করা তাদের জন্য কঠিন।
কিন্তু বিশেষায়িত সৈকত ভিত্তিক টেকনাফের সাবরাং পার্কের উন্নয়নের কাজ শেষ হলে এই এলাকার মানুষের ভাগ্য পাল্টে যেতে পারে। পরিকল্পনা অনুযায়ী তৈরি হবে প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম বিনোদনের আকর্ষণীয় অঞ্চল। থাকবে এক হাজার একরের বিশেষায়িত জোন। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি অবসর যাপনে বৈচিত্র্য আনতে এই পার্কে থাকবে কৃত্রিম লেক, ঝাউবন রিসোর্টসহ নানা অনুষঙ্গ। পার্কের ভবন প্রকল্প কার্যালয় উদ্বোধন হয়েছে গেল বছরের ১৩ জানুয়ারি। এছাড়া সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে, তাও ঢিমেতালে। প্রকল্পে কোন ধরনের অগ্রগতি না হলেও সীমানা ঘিরে হোটেল মোটেলের জমি দখলের গতি ঢের বেশি। নামে বেনামে গড়ে উঠছে অপরিকল্পিত স্থাপনা। আরো আগে কাজ শুরু করার কথা থাকলেও পানি এবং পাথরের কারণে কিছু সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। তবে নীল জলরাশী এ অঞ্চল দৃশ্যমান হলে বাংলাদেশে নতুন ঠিকানা পাবে পর্যটকরা। যেখানে পর্যটনবান্ধব পরিবেশ থাকবে।
বেজা সূত্রে জানা গেছে, টেকনাফ-কক্সবাজার মেরিনড্রাইভ সড়কের জিরো পয়েন্টের পাশে সমুদ্র সৈকতের পাড়ে অবস্থিত সাবরাং ট্যুরিজম পার্কটির আয়তন ১০৪৭ একরের। শুরুতে এ অঞ্চলে গ্রেট আউটডোর অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার লিমিটেড, গ্রিন অরচার্ড হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস লিমিটেড এবং সানসেট বে লিমিটেড এই তিন প্রতিষ্ঠান ৫.৫ একর জমিতে ৩২.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে পাঁচ তারকা ও তিন তারকা মানের হোটেলসহ পর্যটনবান্ধব বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৫৭ কোটি টাকা।
এছাড়া ৯টি পর্যটনবান্ধব প্রতিষ্ঠান আরো ২১২.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করার কথা রয়েছে। এই বিনিয়োগকারীর তালিকায় নেদারল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরের দুটি প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে সাবরাং ট্যুরিজম পার্কে প্রতিদিন দেশি-বিদেশি ৩৯ হাজার পর্যটক উপভোগ করতে পারবে।
বেজার চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, ‘সাবরাং ট্যুরিজম পার্কে পর্যটন শিল্প গড়তে মাস্টারপ্ল্যানের মাধ্যমে উন্নয়ন কাজ চলছে। যা অন্য জায়গার চেয়ে আলাদা হবে। এখানে ঘিঞ্জি পরিবেশ এবং ভীড় থাকবে না। পাশাপাশি এই অঞ্চলের প্রকৃতি ও জীব-বৈচিত্র্য সংরক্ষণ রেখে পাঁচ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকত পর্যটকদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে এবং ইতিমধ্যে এখানকার রাস্তা ও সীমানার কাজ শেষ পর্যায়ে।
তবে পর্যটন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্থায়ী পর্যটনের প্রধান শর্ত পরিকল্পিত ও স্থানীয় জীবনধারার সংমিশ্রণ। এবং পর্যটন মানে স্থানীয় জনজীবন বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। বরং টেকসই পর্যটন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে স্থানীয় ঐতিহ্য ও জীবন সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন দরকার।