পর্যটকদের জন্য খুলে দেয়া হচ্ছে রাঙামাটির দুয়ার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙামাটি »

টানা ২৪ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে আবারো পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত পর্যটন নগরী রাঙামাটির দ্বার। বুধবার দুপুরে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত পর্যটকদের জন্য রাঙামাটি জেলা উন্মুক্তকরণ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান জেলা প্রশাসক  মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান।

সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. শামীম হোসেনসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা ও সাংবাদিকরা।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান জানান, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ১ নভেম্বর থেকে রাঙামাটিতে পর্যটক ভ্রমণে সব ধরনের বিধি নিষেধ তুলে নেয়া হয়েছে। পর্যটকদের সব ধরনের নিরাপত্তা দেয়া হবে। রাঙামাটিতে পর্যটক ভ্রমণে বর্তমানে কোন সমস্যা নেই। তিনি পর্যটকদের রাঙামাটি ভ্রমণের আহ্বান জানান।

তিনি আরো বলেন, যেহেতু খাগড়াছড়িতে বিধিনিষেধ ৫ নভেম্বর  থেকে তুলে  নেয়া হবে, তাই ৫ নভেম্বর থেকে পর্যটকরা সাজেক ভ্রমণ করতে পারবেন।

এদিকে নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়াতে স্বস্তি প্রকাশ করেছে রাঙামাটির পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। রাঙামাটি হাউজ বোট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বাপ্পী তঞ্চঙ্গ্যা বলেন,  দেশের পট পরিবর্তন, রাঙামাটিতে নানান সংঘাতসহ বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘদিন রাঙামাটি পর্যটকশূন্য ছিল। এরমধ্যেই গত ৮ তারিখ থেকে পর্যটকদের রাঙামাটি ভ্রমণে জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়। এই নিষেধাজ্ঞার কারণে আর্থিক ক্ষতির চেয়েও রাঙামাটির পর্যটনের ইমেজের ক্ষতি বেশি হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এই নিষেধাজ্ঞায় রাঙামাটির পর্যটন খাতে প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবুও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করাতে আমরা খুশি। আশা করছি রাঙামাটির পর্যটনশিল্প আবারো আগের প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পাবে।

বেরান্নে রিসোর্টের সিইও হিল্লোল চাকমা বলেন, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের এই সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। বর্তমানে রাঙামাটি পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য শতভাগ নিরাপদ। আশা করবো পর্যটকরা আবারো রাঙামাটি ভ্রমণে আসতে শুরু করবেন।

রাঙামাটি ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস গাইডের সিইও বনকুমুস বড়ুয়া বাপ্পী বলেন, আমরা পর্যটক বরণে সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছি। রাঙামাটি এখন পর্যটকদের জন্য পুরোপুরি নিরাপদ। আমরা পর্যটকদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করবো।

রাঙামাটি ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সহসভাপতি মো. রমজান আলী বলেন, এমনিতেই পাহাড়ের পর্যটনে খরা চলছিল দীর্ঘদিন যাবৎ, তার ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আমাদেরকে চরম বিপদে ফেলে দিয়েছিল। ২৪ দিন পর হলেও এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হওয়াতে আমরা খুশি। আশা করছি আবার আগের মত পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠবে রাঙামাটি।

উল্লেখ্য, ৬ অক্টোবর রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে জেলা প্রশাসন। সেখানে অনিবার্য কারণবশত পর্যটকগণকে ৮ অক্টোবর হতে ৩১ অক্টোবর ২০২৪ পর্যন্ত রাঙামাটি পার্বত্য  জেলায় ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানানো হয়।