একটি পরিকল্পিত নগর গড়ে তোলার লক্ষ্যে ১৯৫৯ সালে গঠন করা হয় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা সিডিএ। প্রতিষ্ঠার ৬৪ বছর পার হলেও সিডিএ’র সফলতার গল্প খুব বেশি নেই। প্রতিষ্ঠার পর সিডিএ জোর দেয় আবাসিক প্রকল্প গড়ে তোলার দিকে। কয়েকটি আবাসিক এলাকা গড়ে তুললেও সে সবকে এককথায় মানসম্পন্ন বলার জো নেই।
এই দীর্ঘ সময়ে ১২টি আবাসন প্রকল্পে পাঁচ হাজারের বেশি প্লট বরাদ্দ দেয় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। এর সবগুলোই করা হয়েছে উচ্চ ও উচ্চ মধ্যবিত্তদের জন্য। এর কোনোটিতে ঠাঁই হয়নি নি¤œ ও স্বল্প আয়ের মানুষের। দেশের ছিন্নমূল মানুষের আবাসনের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা বলা হলেও সেক্ষেত্রে সিডিএ কোনো ভূমিকা রাখেনি।
২০০৭ সালে সিডিএ সর্বশেষ আবাসিক এলাকা নির্মাণ করে। এক হাজার ৫২১টি প্লট নিয়ে এই অনন্যা আবাসিক এলাকা বাস্তবায়ন করে সিডিএ। এরপর থেকে আর কোন আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেনি এই সংস্থা। শোনা গিয়েছিল অনন্যা-২ নামে আরেকটি আবাসন প্রকল্প করতে যাচ্ছে সিডিএ। কিন্তু এখন পর্যন্ত সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। উপরন্তু অন্যন্যা আবাসিক এলাকায় বাড়ি করার মতো অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত না করায় অধিকাংশ প্লট এখনো খালি পড়ে আছে। অন্যদিকে, সিডিএ নতুন করে আবাসন প্রকল্প না নিলেও বিগত কয়েক বছরে দুটি ফ্ল্যাট প্রকল্প নির্মাণ করেছে এবং বর্তমানে আরও একটি ফ্ল্যাট প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে।
গত ১৬ বছরে সিডিএ নতুন কোনো আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন না করায় নাগরিকরা সহনীয়মূল্যে আবাসন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে । বেসরকারি ফ্ল্যাট কিনতে গিয়ে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। যদিও বর্তমান সময়ে সিডিএ হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। সেখানে নগরবাসীর আবাসন সুবিধার কথা ভাবা হচ্ছে না। পরিকল্পিত নগরী গড়তে হলে পরিকল্পিত আবাসন ব্যবস্থাও গড়ে তুলতে হবে।
তিন দশক আগে কর্ণফুলীর ও পাড়ে একটি আবাসিক প্রকল্প গড়ে তুলেছিল সংস্থাটি। পরে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের আপত্তির কারণে সে প্রকল্প সে অবস্থায় পড়ে থাকে। এখন সিডিএ’র জন্য সম্ভাবনার নতুন দুয়ার খুলে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু টানেল চালু হলে ওয়ান সিটি টু টাউনের সুবিধা কাজে লাগিয়ে নদীর দক্ষিণ অংশে নতুন নতুন আবাসিক এলাকা গড়ে তুলতে পারে। সেখানে নি¤œবিত্তের জন্যও আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ নিতে পারে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।
এ মুহূর্তের সংবাদ