রাঙ্গুনিয়ায় নির্বাচনী জনসভায় তথ্যমন্ত্রী
সুপ্রভাত ডেস্ক
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি বলেছেন, নিজের নির্বাচনী এলাকা চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা পিছিয়ে পড়া জনপদ ছিল, ২০০৮ সালের আগে এই উপজেলায় চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক ছাড়া আর কোন রাস্তায় পিচঢালা করা ছিলনা, আর এখন রাঙ্গুনিয়ার কোন সড়কটি পিচঢালা কার্পেটিং করা হয়নি সেটি খোঁজ নিতে হয়। মাঝে মাঝে বিভিন্ন সড়ক দিয়ে আমি যাই, রাস্তায় কোন গর্ত হয়েছে কিনা দেখতে। এসব উন্নয়ন ও পরিবর্তন সম্ভবপর হয়েছে শেখ হাসিনার যাদুকরি নেতৃত্বের কারণে।
নিজের ইউনিয়ন পদুয়া প্রত্যন্ত জনপদ ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন পদুয়া একটি আধুনিক জনপদে রূপান্তরিত হয়েছে। শিলক খালের ওপর চারটি ব্রিজ হয়েছে। রাঙ্গুনিয়ার এমন কোন স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজ নেই যেখানে ভবন হয়নি। এখন প্রত্যেক ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ। গত ১৫টি বছর কে আওয়ামী লীগ, কে বিএনপি, কিংবা কে কোন দল করে, তা কখনো দেখিনি। আমার বিরুদ্ধে ধানের শীষের মাইকিং করেছে, এমন ছেলের চাকরিও আমার হাত দিয়ে হয়েছে। আপনাদের সন্তান হিসেবে আমি গত ১৫টি বছর চাকরের মতো করে খেটেছি।
শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। পদুয়া রাজারহাট হাসপাতাল মাঠে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামানের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি উপাধ্যক্ষ দুলাল কান্তি দাশ।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ঈদ, পূজা-পার্বণে ১৫টাকা দিয়ে চাল, দুই’শ টাকা দিয়ে ত্রিশ কেজি করে চালসহ সাধারণ মানুষের জন্য ১৮ প্রকার ভাতা দিচ্ছে। টিসিবি পণ্য, শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই প্রদানসহ প্রতি ইউনিয়নে হাজার হাজার মানুষ উপকারভোগী। এসব দেয়ার ক্ষেত্রে আমরা আওয়ামীলীগ-বিএনপি বাছাই করিনি। যার প্রয়োজন তাকেই উপকারভোগী হিসেবে সনাক্ত করা হয়েছে। আমরা বিনামূল্যে ভাতা দেবো, বিনামূল্যে বই দেবো, বিনামূল্যে চাল দেবো, রাস্তা-ঘাট বানাবো, মোবাইলে টাকা পাঠিয়ে দেবো তাহলে আমরা কি ভোটটা পাবো না ? তথ্যমন্ত্রীর এমন প্রশ্নে উপস্থিত হাজার হাজার জনতা হাত তুলে সমর্থন জানান।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান বলেন, আমাদের পারিবারিক দাতব্য প্রতিষ্ঠান এনএনকে ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে আমি গত ১৫ বছরে ২৪টি নতুন মসজিদ করেছি এই রাঙ্গুনিয়ায়। প্রত্যেকটি মসজিদ, মন্দির ও প্যাগোডা একাধিকবার উন্নয়ন বরাদ্দ পেয়েছে। করোনাকালে প্রায় দুই কোটি টাকার ত্রাণ সহায়তা দিয়েছি। উপজেলা সদরে একটি এতিমখানা করছি, ইতিমধ্যে চারতলা হয়ে গেছে, আরও দুইতলা হবে। এক কোটি টাকার ঢেউটিন ফ্রি দিয়েছি। সরকারের বাইরে আমি নিজস্ব উদ্যোগে ৫২টি নতুন ঘর করে দিয়েছি।
তিনি বলেন, আমি ইচ্ছে করে মাঝেমধ্যে রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন সড়ক দিয়ে যাই, সড়কে গর্ত হয়েছে কিনা দেখার জন্য। এখন দেশ পরিবর্তন হয়ে গেছে। রাঙ্গুনিয়ার গ্রাম গ্রামান্তরে এখন ৮-১০ তলা বিল্ডিং। এসব কোন যাদুর কারণে পরিবর্তন হয়নি। এসব সম্ভবপর হয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার যাদুকরি নেতৃত্বের কারণে।
নিজ গ্রামবাসীর উদ্দেশ্যে ড. হাছান বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে আপনারা আমাকে ভোট দিয়ে ঠেলে তুলে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যার হাতে, প্রধানমন্ত্রী আমাকে টেনে তুলে নিয়েছেন। আমি আপনাদের মুখ উজ্জ্বল করেছি দেশের মধ্যে। আপনাদের সন্তান হিসেবে আগামী ৭ জানুয়ারি নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে আবারো সেই ধারাবাহিকতা রক্ষার আবেদন জানাই। আমাদের ভুলত্রুটি থাকলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বজন কুমার তালুকদার, আবুল কাশেম চিশতি, ইউপি চেয়ারম্যান আবু জাফর, বেদারুল আলম চৌধুরী বেদার, আব্দুল মোনাফ সিকদার, ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার, জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার বাদশা, নুরুল আবছার তালুকদার, মো. শফিকুল ইসলাম, মুজিবুল ইসলাম সরফি, আরজু সিকদার, শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ।