‘আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হবে’
নিজস্ব প্রতিবেদক »
চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ থেকে পণ্য খালাস হলেও সেই পণ্য গন্তব্যে যাচ্ছে না। ধর্মঘটে অচলের পথে পণ্য পরিবহন। আবার রপ্তানিমুখী পণ্যও বন্দরে প্রবেশ করছে না। এতে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য চরম অচলাবস্থার দিকে এগোচ্ছে। চট্টগ্রামসহ সারাদেশে ট্রাক, কভার্ডভ্যান ও প্রাইম মুভার শ্রমিকদের ১৫ দফা দাবিতে ৭২ ঘণ্টার ধর্মঘট চলছে শ্রমিকদের।
কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে ধর্মঘট চলার কথা জানিয়ে চট্টগ্রাম প্রাইম মুভার শ্রমিক ইউনিয়নের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সেলিম খান বলেন, ১৫ দফা দাবিতে ৭২ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছি। মঙ্গলবার দিনভর আন্দোলন সফল হয়েছে এবং দাবি না মানা পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।
কিন্তু এতে তো দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হুমকির মুখে পড়বে। এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এজন্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথে মালিক সমিতি ও সরকারের বিভিন্ন সংস্থার আলোচনা চলছে। যদি দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস পাওয়া যায় তাহলে হয়তো ধর্মঘট কর্মসূচি স্থগিত হতে পারে। এখনো এমন কোনো নির্দেশনা আসেনি।
তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রামে প্রায় দেড় লাখ শ্রমিক রয়েছে। মঙ্গলবার দিনভর কেউ গাড়ি চালায়নি। এতে বন্দর থেকে কোনো পণ্য যেমন বের হয়নি তেমনি বন্দরে কোনো পণ্যও প্রবেশ করেনি।
শ্রমিকদের দাবির যৌক্তিকতার কথা স্বীকার করে প্রাইম মুভার মালিক অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘শ্রমিকদের দাবি দাওয়াগুলো ন্যায্য। কিন্তু দাবি নিয়ে এভাবে জিম্মি করা যাবে না। দাবি মেনে নেওয়ার বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও মালিক নেতৃবৃন্দও কাজ করছে।’
জানা গেছে, বন্দরে চালক-শ্রমিকদের হয়রানি বন্ধ, ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-প্রাইম মুভারের (ট্রেইলর) আয়কর বৃদ্ধি স্থগিত করতে হবে, ১০ বছর ধরে ট্রাক, প্রাইম মুভার শ্রমিকদের লাইসেন্স প্রদান বন্ধ রয়েছে তা চালু করাসহ ১৫ দফা দাবিতে ৭২ ঘণ্টা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
ধর্মঘটের কারণে সকাল থেকে বন্দরের ভেতরে পণ্যবাহী যানবাহন ঢুকতে পারেনি। এতে বন্দরের জেটিতে অবস্থানরত জাহাজ থেকে পণ্যবাহী কন্টেইনার খালাস করা হলেও সেগুলো বন্দরেই থেকে যাচ্ছে। এতে দেশের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কোভিড পরিস্থিতির পর দেশের অর্থনীতি যখন চাঙ্গা হওয়ার পথে তখন এধরনের ধর্মঘট দেশের অর্থনীতিকে পেছনের দিকে টেনে ধরবে বলে আমদানি ও রপ্তানি ব্যবসায় জড়িত ব্যবসায়ীদের মত।
এসব দাবির কারণে বন্দরে পণ্যজট যেমন বাড়বে অফডক কিংবা কারখানা থেকে রপ্তানিমুখী পণ্য বন্দরে প্রবেশ করতে না পারলে সমস্যার কথা জানিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, ‘এই সমস্যাগুলো এককভাবে চট্টগ্রাম বন্দরের নয়। এসব সমস্যা নিরসনে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা যেমন রয়েছে তেমনিভাবে বিভিন্ন নেতৃবৃন্দও কাজ করছেন। এতে হয়তো শিগগিরই অচলাবস্থার অবসান হবে।’
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দেশের ৯৩ শতাংশ আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সম্পাদিত হয়।