নিজস্ব প্রতিবেদক »
চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেন আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থী নোমান আল মাহমুদ। ১৯০টি ভোট কেন্দ্রের ফলাফলে নিকটতম প্রার্থীর তুলনায় ৬২ হাজার ১১৮ ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, এ উপ-নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ৫ লাখ ১৭ হাজার ৬৫২ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৬৩ হাজার ৫৪৩ জন ও নারী ভোটার ২ লাখ ৫৪ হাজার ১০৯ জন। বোয়ালখালী অংশে ৭৮টি ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন অংশে ১১২টি কেন্দ্র মিলে মোট ১৯০টি ভোটকেন্দ্রের ১ হাজার ৪১৪টি কক্ষে ভোটগ্রহণ হয়। ৭৬টি কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে পুলিশ সদস্য মোতায়েন করে নির্বাচন কমিশন। এছাড়া ভোটকেন্দ্রের বাইরেও পর্যাপ্ত সংখ্যক আইন-শৃংখলাবাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেছেন।
নোমান আল মাহমুদ গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় নগরের বহদ্দারহাট এখলাসুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট প্রদান করেন। ভোট প্রদান শেষে নির্বাচনের সার্বিক পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘ভোটারদের উৎসাহ লক্ষ করা যাচ্ছে। ভোটগ্রহণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি।’
বিকেল ৪টায় ভোট গ্রহণ কার্যক্রম শেষ হবার পর সন্ধ্যা ছয়টায় নগরের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়ামে ভোট গণনা শুরু হয়। গণনা শেষে রাত ৮টা ১২ মিনিটে নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হয়। ১৯০ কেন্দ্রের প্রাপ্ত ফলাফলে ৬৭ হাজার ২০৫ টি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন নৌকার প্রার্থী নোমান আল মাহমুদ। এছাড়া মোমবাতি প্রতীকে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের সেহাব উদ্দিন মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ ৫ হাজার ৮৭, চেয়ার প্রতীকে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের সৈয়দ মুহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন ১ হাজার ৮৬০ এবং আম প্রতীকে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) কামাল পাশা পেয়েছেন ৬৭৩ ভোট। এ উপ-নির্বাচনে সবচেয়ে কম ভোট পেয়েছেন একতারা প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মীর মোহাম্মদ রমজান আলী। তিনি পেয়েছেন ৪৮০ ভোট।
ফলাফল ঘোষণা শেষে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ, গণনা ও ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। পাঁচ লাখ ১৭ হাজার ৬৫২ জন ভোটারের মধ্যে ৭৫ হাজার ৩০৫ জন ভোটার অংশগ্রহণ করেছেন। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা পাঁচজন প্রার্থীর মধ্যে জয়ী হয়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নোমান আল মাহমুদ। তিনি ৬৭ হাজার ২০৫ ভোট পেয়েছেন।’
বিজয়ী নোমান আল মাহমুদ বলেন, ‘জয়ী হয়ে আমি খুবই আনন্দিত। এ জয় আওয়ামী লীগ পরিবারের জয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উন্নয়নে যে স্বপ্ন দেখছেন, আমি সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়ে নিজেকে খুব গৌরবান্বিত বোধ করছি। তবে এটা ঠিক আশানুরূপ ভোটার ভোট দিতে আসেনি। এর অন্যতম কারণ হলো- রমজানের ঈদের যে লম্বা ছুটি, তাতে অধিকাংশ মানুষ তাদের নিজ বাড়িতে চলে গেছে। এছাড়া তীব্র রোদ ও গরমের কারণে অনেকে আসেননি।’
প্রথম কোন কাজে হাত দিবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের এই আসনের প্রয়াত সাংসদ মঈনউদ্দীন খান বাদল ও মোছলেম উদ্দীন আহমেদের যেসব উন্নয়নমূলক অসমাপ্ত কাজ আছে, সেগুলো প্রধান্য দিয়ে আমি কাজ শুরু করবো।’
উল্লেখ্য, গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদের মৃত্যু হলে আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। জাতীয় নির্বাচনের আট মাস আগে উপ-নির্বাচন আহবান করে নির্বাচন কমিশন। এতে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলের ৪ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করেন।