সুপ্রভাত ডেস্ক
চট্টগ্রামে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকা- ও বিষ্ফোরণে নিহতদের মধ্যে ২৬ জনের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া লাশের মধ্যে বাকি ১৫ জনের পরিচয় শনাক্তে দ্বিতীয় দিনের মতো ডিএনএ’র নমুনা সংগ্রহ হয়েছে। এই পর্যন্ত ৪১টি লাশ উদ্ধারের কথা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হলেও আরও কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম জানান, নিখোঁজ ২২ জনের বিপরীতে দুই দিনে ৩৯ জন স্বজনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
‘যাদের মধ্যে প্রথম দিন ২১টি লাশের বিপরীতে ৩৭ জনের ও দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার এক জনের বিপরীতে দুই জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।’
সংগ্রহ করা নমুনা ঢাকায় সিআইডি ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হচ্ছে বলে জানান তিনি।
নমুনা সংগ্রহকারী সিআইডি ফরেনসিক দলের সদস্যরা জানান, প্রতিটি লাশের দুটি করে প্রোফাইল তৈরি করা হবে। যার একটি ‘ক্রাইম সিনের’ অপরটি ‘রেফারেন্সের’। সব মিলিয়ে এর ফলাফল আসতে অন্তত মাসখানেক সময় লাগতে পারে।
চট্টগ্রাম শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে সীতাকু-ের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আগুন লাগে। সেখানে থাকা রাসায়নিকের কন্টেইনারে একের পর এক বিকট বিস্ফোরণ ঘটতে থাকলে আগুন ভয়ঙ্কর মাত্রা পায়। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত সেই আগুন পুরোপুরি নেভেনি।
নিহতদের মধ্যে ২৬টি লাশের পরিচয় শনাক্তের পর ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
৪১ জনের মৃত্যুর খবর সোমবার নিশ্চিত পর মঙ্গলবার সকালে দুটি দেহাবশেষ উদ্ধারের কথা জানানো হয়।
পরিচয়হীন লাশগুলোর বেশির ভাগ পুড়ে বিকৃত হয়ে যাওয়ায় তাদের পরিচয় শনাক্তে প্রয়োজন পড়ে ডিএনএ পরীক্ষার। সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবের একটি দল ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে এসে সোমবার সকাল থেকে স্বজনদের ডিএনএ’র নমুনা সংগ্রহ শুরু করেছে।
এদিকে পরিচয়হীন লাশগুলো হাসপাতালের হিমাগারে সংরক্ষণ করা হয়েছে বলে জানান চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান।
মঙ্গলবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, রক্ত থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করতে পারলে দ্রুত হতে পারত। কিন্তু এখানে নমুনাগুলো সংগ্রহ করা হচ্ছে চুল, দাঁত থেকে।
গত শনিবার রাতে সীতাকু-ের বিএম ডিপোতে অগ্নিকা- ও বিষ্ফোরণে আহতদের মধ্যে ২৩০ জন চমেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন বলেও জানান হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম।
তিনি জানান, মঙ্গলবার চিকিৎসা নিতে আসাদের মধ্যে চমেক হাসপাতালসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে ৯০ জন চিকিৎসাধীন আছে।
যাদের মধ্যে চমেকে ৬৩ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ১৪ জন, বেসরকারি পার্কভিউ হাসপাতালে আইসিইউ’তে এক জনসহ ১২ জন, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে এক জন চিকিৎসাধীন আছেন।
এছাড়া ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আরও ১৪ জন চিকিৎসাধীন আছেন।
চমেক হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়াদের মধ্যে চক্ষু ওয়ার্ডে ১১ জন ও বার্ন ইউনিটে ২৪, আইসিইউ’তে দুজন রয়েছেন। বাকিরা অন্যান্য ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন বলে জানান পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম।