নিলামে সাবেক ২৪ এমপি-মন্ত্রীর গাড়ি, আরাফাতসহ ৯ জনের গাড়িতে আগ্রহ দেখায়নি কেউ

সুপ্রভাত ডেস্ক »

সাবেক ২৪ এমপির বিলাসবহুল গাড়ির নিলাম গণমাধ্যমে প্রচার হলেও আশানুরূপ সাড়া মেলেনি। ১৫ এমপি-মন্ত্রীর গাড়ি দরপত্র পড়লেও, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী আরাফাতসহ ৯ সাবেক এমপির গাড়ির জন্য আগ্রহ দেখাননি কেউ। বিডারদের দাবি, সংরক্ষিত মূল্য বেশি ধরায় প্রথম নিলামে এমপিদের কোনো গাড়ি বিক্রি হয়নি।

৫ আগস্ট সরকারের পট পরিবর্তনে সংসদ ভেঙ্গে যাওয়ায় শুল্কমুক্ত সুবিধায় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি করা বিলাসবহুল গাড়ি খালাসের সুযোগ পাননি দ্বাদশ সংসদের ৩০ এমপি। নিয়ম অনুযায়ী, দুই দফা নোটিশ দেয়ার পরেও বন্দর থেকে গাড়ি খালাস না করায় সাবেক এমপিদের ২৪টি ব্র্যান্ড নিউ টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজারসহ মোট ৪৪টি গাড়ি গত ২৬ জানুয়ারি অনলাইনে নিলামে তোলে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস।

গত রোববার ছিল দরপত্র ও পে অর্ডার জমা দেয়ার শেষ দিন। সোমবার বিকালে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের নিলাম হলে খোলা হয় দু’টি দরপত্রের বাক্স। কর্তৃপক্ষ জানায়, ৪৪টি গাড়ির বিপরীতে দরপত্র জমা পড়েছে ১৪৩টি।

সাবেক ২৪ এমপির প্রতিটি ল্যান্ড ক্রুজারের ভিত্তিমূল্য ৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা ধরা হলেও গড়ে দর উঠেছে ২ থেকে আড়াই কোটি। খুলনা তিন আসনের সাবেক এমপি এস এম কামালের ল্যান্ড ক্রুজারের জন্য সর্বোচ্চ ৩ কোটি ১০ লাখ টাকা দর উঠেছে। বগুড়া-৫ আসনের এমপি মজিবুর রহমান মজনুর গাড়ি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দর উঠেছে ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা। অবাক করা বিষয় হলো সাবেক ৯ এমপির গাড়ির জন্য নিলামে আগ্রহ দেখায়নি কেউ।

এর মধ্যে আছেন সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আরাফাত, চট্টগ্রাম ১৫ আসনের সাবেক এমপি ও বনফুল গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেব, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক এমপি সানজিদা খানম, ময়মনসিংহ-১১ আসনের আব্দুল ওয়াহেদ, ব্রাক্ষণবাড়িয়া-১ আসনের এ এস কে একরামুজ্জামানসহ নয় এমপি। আর সাবেক তারকা এমপি তারানা হালিম ও আলোচিত নারী এমপি জান্নাত আরা হেনরির গাড়ির বিপরীতে দর উঠেছে মাত্র ৫ লাখ টাকা।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সহকারি কমিশনার সাকিব হোসেন বলেন, ‘২ থেকে আড়াই কোটি টাকার মধ্যে আরো ৮ থেকে ১০টা গাড়ি রয়েছে। যা আমরা অ্যাসেসমেন্ট করার পর বলতে পারব, সেগুলোর জন্য কোনো বিড পড়ে নাই।’

বিডারদের অভিযোগ, কাস্টমস নির্ধারিত ৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকার ভিত্তিমূল্যে সাবেক এমপিদের গাড়ি কেনার মতো ক্রেতা বর্তমান বাজারে নেই। এক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ দর দিতে হলেও ন্যূনতম ৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা দর দিতে হবে। ২৫ শতাংশ শুল্কসহ দর পড়বে ৭ কোটি টাকার বেশি। তাই দ্বিতীয় নিলামের অপেক্ষায় রয়েছেন তারা।

আইন অনুযায়ী, প্রথম নিলামে ৬০ শতাংশ দর না ওঠায় সাবেক ২৪ এমপি-মন্ত্রীর কোনো গাড়ি বিক্রির জন্য অনুমোদন দেয়া হবে না বলে জানান নিলাম শাখার এই কর্মকর্তা। তাই এই ২৪টি গাড়ি আবার নিলামে তোলা হবে।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সহকারি কমিশনার সাকিব হোসেন বলেন, ‘যে গাড়িতে ৩ কোটি ১০ লাখ টাকার বিড পড়েছে। এবার তা ৬০ শতাংশ না হবার কারণে আইন অনুযায়ী তাকে দিতে পারব না। পরবর্তী নিলামে এটা যদি ৩ কোটি ১০ লাখ টাকার বেশি কেউ বিড করে অর্থাৎ এর মধ্যে সর্বোচ্চ বিডারকে আমরা গাড়িটা দেব।’

তবে বাকি ২০টি বাণিজ্যিক গাড়ির মধ্যে দু’টি রিকন্ডিশন্ড টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজারসহ ৫টি ড্রাম ট্রাকের ভালো দর উঠেছে। আগামী সপ্তাহেই সাবেক এমপিদের ৩০টি গাড়িসহ আরো ৭০ থেকে ৮০টি গাড়ি নিলামে তুলবে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস।