নিজস্ব প্রতিবেদক :
নির্বাচনে আবারও জেতার স্বপ্ন নিয়ে প্রার্থী হয়েছিলেন কাউন্সিলর পদে। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে আশাহত হলেও থেমে থাকেননি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হন তার প্রিয় আলকরণ ওয়ার্ডে। কিন্তু নির্বাচনের মাঠে অপ্রতিদ্বন্দ্বী হলেও হেরে গেলেন মরণব্যাধি ক্যানসারের কাছে।
গতকাল দুপুর ২টায় ঢাকার ডেল্টা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নির্বাচন না দেখেই না ফেরার দেশে চলে গেলেন ৩১ নম্বর আলকরণ ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর তারেক সোলেমান সেলিম।
তাঁর মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন চসিক এক্স কাউন্সিলর ফোরামের সাধারণ সম্পাদক এম জামাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘সোমবার দুপুর ২টার দিকে ঢাকার মিরপুরের ডেল্টা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যায়। মঙ্গলবার (আজ) দুপুর ২টায় চট্টগ্রাম পুরাতন রেল স্টেশন চত্বরে তাঁর নামাজে জানাাজা অনুষ্ঠিত হবে।’
জামাল হোসেন আরও বলেন, সেলিম ভাই ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ভারতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় কিছুদিন আগে দেশে ফিরে আসেন। সর্বশেষ ঢাকার ডেল্টা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অসুস্থ থাকার কারণে তিনি স্থগিত নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে পারেননি। তবে অসুস্থ হলেও তিনি নির্বাচন চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী ছিলেন। সর্বশেষ ক্যানসারের কাছে হেরে না ফেরার দেশে চলে গেলেন।
তারেক সোলেমান সেলিম ছিলেন আলকরণ ওয়ার্ডের প্রথম নির্বাচিত কাউন্সিলর। এবার আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে দাঁড়িয়েছিলেন স্বতন্ত্র কাউন্সিলর প্রার্থী হিসাবে। নির্বাচনের আগে অসুস্থ হলেও এলাকাবাসীর অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে প্রার্থী হন তিনি।
আলকরণ ওয়ার্ডের চারবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর তারেক সোলেমান সেলিমের রাজনৈতিক জীবন ছিল সংগ্রামের। সেলিমের বাবা আলকরণ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোহাম্মদ সালেহের হাত ধরেই তার রাজনীতির হাতেখড়ি। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার প্রতিবাদে পিতার সঙ্গে নেমে পড়েছিলেন রাজপথে। ছিলেন এরশাদবিরোধী আন্দোলনে সামনের সারিতে। ছাত্রজীবনে তিনি সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন। এছাড়া মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৯৪ সালে প্রথম চসিক নির্বাচনে কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হন। এরপর ২০০০ সাল, ২০০৫ সাল এবং সর্বশেষ ২০১৫ সালে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।
তারেক সোলেমান সেলিম এক ছেলে ও দুই কন্যাসন্তানের জনক। তিনি স্ত্রী, ভাই-বোন, আত্মীয় স্বজনসহ অসংখ্য সহকর্মী-শুভাকাক্সক্ষী রেখে গেছেন।