সুপ্রভাত ডেস্ক »
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘নির্বাচন নিয়ে যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে, তাতে বিএনপির নির্বাচন বর্জনের ডাক ঢাকা পড়ে গেছে। এখন নির্বাচন উৎসব আমেজ শুরু হয়ে গেছে।’
গতকাল সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিক্রি হচ্ছে। রোববার দেড় কিলোমিটার হেঁটে আমি মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে গেছি। আর ভিড়ের কারণে আমাদের সাধারণ সম্পাদক ঢুকতেই পারেননি।’
বিএনপি আহূত টানা হরতাল প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আপনারা জানেন বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা গত ৪৮ ঘণ্টায় ১৮টি যানবাহনে আগুন দিয়েছে। অবরোধ-হরতাল কেউ মানছে না, জনগণ এমন কি বিএনপির সমর্থকদেরও এর সাথে সম্পৃক্ততা নাই। রুহুল কবির রিজভী সাহেব অনলাইনে এসে যে কর্মসূচি ঘোষণা করছেন এগুলো আসলে গাড়ি পোড়ানো কিম্বা সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তিতে আগুন দেওয়ার কর্মসূচি ছাড়া অন্য কোনো কিছু নয়। একটি স্কুলে এবং বসে থাকা একটি ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়েছে, তিনটা বগি পুড়ে গেছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এগুলো কোনো রাজনৈতিক দলের কাজ তো নয়ই, এগুলো জঘন্য সন্ত্রাসী, দেশবিরোধী অপতৎপরতা। এরা দেশ এবং সমাজের শত্রুতে রূপান্তরিত হয়েছে। শুধু যারা গাড়ি-সম্পত্তি পোড়াচ্ছে তারাই নয়, যিনি কর্মসূচি ঘোষণা করছেন তিনি এবং এই নেতারা সবাই দুস্কৃতকারী। আমরা এই আগুনসন্ত্রাসীদের নির্মূল করতে বদ্ধপরিকর।
আমি আপনাদের অনুরোধ জানাবো, সাংবাদিকরা সমাজের বিবেক, অনেক ক্ষেত্রে সমাজের পথপদর্শক, এই আগুনসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আপনাদের লেখনী, রিপোর্টিং যদি অব্যাহত থাকে তাহলে মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।’
বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে আসবে কি না বা সংলাপ হবে কি না এ প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কাউকে ছাড়া নির্বাচন করতে চাই না, সবাইকে নিয়ে নির্বাচন করতে চাই। কেউ নির্বাচনে না আসলে তাদেরকে আনার দায়িত্ব সরকারের, কিম্বা আওয়ামী লীগের নয়। বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি করবে না সেটি তাদের একান্ত নিজস্ব ব্যাপার। কিন্তু নির্বাচন প্রতিহত করার কথা বলে জনজীবনে অশান্তি, রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা, গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানো এগুলো কোনো রাজনৈতিক দলের কাজ নয়, এগুলো দৃস্কৃতকারীদের কাজ। আর যারা এভাবে গাড়িতে আগুন দেয় এবং নেতাদের কাছে সেই ভিডিও পাঠায় আর নেতারা বলে আগুন দিলে প্রমোশন হবে, তাদের সাথে সংলাপ হতে পারে কি- সে নিয়ে আপনাদের বিবেক কি বলে?’
বিএনপি নির্বাচনে বাধা দিলে তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি প্রয়োগ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আমাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র। আমাদের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের অত্যন্ত চমৎকার বহুমাত্রিক সম্পর্ক। বিশেষ করে জঙ্গি-সন্ত্রাস দমন করার ক্ষেত্রেও আমাদের বহুমাত্রিক সহযোগিতা আছে। র্যাবকেও যুক্তরাষ্ট্র ট্রেনিং এবং ইকুপমেন্টও দিয়েছিলো। ভিসানীতি ঘোষণার সময় বলা হয়েছে যারা নির্বাচনে বাধা দেবে, তাদের বিরুদ্ধে এটি প্রয়োগ করা হতে পারে। এখন যারা নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিচ্ছে, আগুনসন্ত্রাস চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে এই নীতি প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র চিন্তাভাবনা করবে, ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, এটিই আমাদের প্রত্যাশা।