নির্বাচনী জঞ্জাল দ্রুত পরিষ্কার করা হোক

সাত জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হলো দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন। একজন প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে একটি আসনে নির্বাচন না হওয়ায় ২৯৯ টি আসনে নির্বাচন হয়েছে এবার। চট্টগ্রামে ১৬টি আসনের মধ্যে চারটি পড়েছে নগরে।

নির্বাচনী প্রচার কীভাবে হবে তার একটি নির্দেশনা দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। তারমধ্যে অন্যতম ছিল, ‘সিটি করপোরেশন এবং পৌর এলাকায় অবস্থিত দালান, দেয়াল, গাছ, বেড়া, বিদ্যুৎ ও টেলিফোনের খুঁটি বা অন্য কোনো দণ্ডায়মান বস্তুতে, সরকারি বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের স্থাপনায়, বাস, ট্রাক, ট্রেন, স্টিমার, লঞ্চ, রিকশা কিংবা অন্য কোনো প্রকার যানবাহনে কোনো প্রকার পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল সাটাতে পারবেন না। তবে শর্ত থাকে যে, দেশের যে কোনো স্থানে পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল ঝুলাতে বা টাঙাতে পারবেন। এ ছাড়া কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পোস্টার, লিফলেট, হ্যান্ডবিল ইত্যাদির ওপর অন্য কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পোস্টার, লিফলেট, হ্যান্ডবিল ইত্যাদি লাগানো যাবে না এবং ওই পোস্টার, লিফলেট ও হ্যান্ডবিল ইত্যাদির কোনো প্রকার ক্ষতিসাধন তথা বিকৃতি বা বিনষ্ট করা যাবে না। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারে পোস্টার সাদা-কালো রঙের হতে হবে এবং তার আয়তন ২৩/১৮ ইঞ্চির অধিক হতে পারবে না এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পোস্টারে তার প্রতীক ও নিজের ছবি ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তির ছবি বা প্রতীক ছাপাইতে পারবেন না। তবে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মনোনীত হলে সেক্ষেত্রে তিনি কেবল তার বর্তমান দলীয়প্রধানের ছবি পোস্টারে ছাপাইতে পারবেন।
কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা তার মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি কোনো ট্রাক, বাস, মোটরসাইকেল, নৌযান, ট্রেন কিংবা অন্য কোনো যান্ত্রিক যানবাহন সহকারে মিছিল কিংবা মশাল মিছিল বের করতে পারবে না কিংবা কোনোরূপ শোডাউন করতে পারবে না। কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা তার মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি দেয়ালে লিখে কোনো ধরনের নির্বাচনী প্রচার চালাইতে পারবেন না। কালি বা রং দিয়ে বা অন্য কোনোভাবে দেয়াল ছাড়াও কোনো দালান, থাম, বাড়ি বা ঘরের ছাদ, সেতু, সড়ক দ্বীপ, রোড ডিভাইডার, যানবাহন বা অন্য কোনো স্থাপনায় প্রচারমূলক কোনো লিখন বা অঙ্কন করতে পারবেন না।
কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা তার মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি নির্বাচনী প্রচারে কোনো গেট বা তোরণ নির্মাণ করতে পারবেন না কিংবা চলাচলের পথে কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারবেন না। নির্বাচনী প্রচারের জন্য ৪০০ বর্গফুটের অধিক স্থান নিয়ে কোনো প্যান্ডেল তৈরি করতে পারবেন না। নির্বাচনী প্রচারের অংশ হিসেবে বিদ্যুতের সাহায্যে কোনো প্রকার আলোকসজ্জা করতে পারবেন না।
এরপরও অনেক স্থানে নিয়মের ব্যত্যয় হতে দেখা গেছে। সড়কে নির্বাচনী ক্যাম্প স্থাপন, দেয়াল ও বিদ্যুতের খাম্বায় পোস্টার, লিফলেট সাটানোর মতো কাজ চোখে পড়েছে। কিছু কিছু অনিয়মের জন্য নির্বাচন কমিশন জরিমানাও করেছে। গত সাত তারিখ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই নির্বাচন উপলক্ষে সারা শহরে লাখ লাখ পোস্টার ঝোলানো হয়েছে। ব্যানার-ফেস্টুনের সংখ্যাও কম নয়। এসব লাগানোর সময় কেউ নিয়মনীতির তোয়াক্কা করেনি। সারা নগরের অলিগলি পর্যন্ত পোস্টার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে। কোনো কোনো এলাকায় দোকানপাট, বাসাবাড়ি পর্যন্ত আড়াল হয়ে পড়েছে পোস্টারের কারণে। এটি নগরকে বিসদৃশ করে রেখেছে। এসব কখন কারা অপসারণ করবে তা নীতিমালায় লেখা না থাকলেও আমরা ধরে নিতে পারি এই আবর্জনা পরিষ্কারের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের ওপরই বর্তায়। তাই আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে অনুরোধ করবো পরিচ্ছন্নতার কাজটি যেন দ্রুত শুরু করা হয়। কারণ এসব শুধু দৃষ্টিকটু হয়ে উঠেছে শুধু তাই নয়, পরিবেশেরও ক্ষতিসাধন করছে।