নিজস্ব প্রতিবেদক »
দলীয় নেতাকর্মীদের কোনো ধরনের প্রতিরোধ ছাড়াই বিএনপি-জামায়াতের ডাকা দিনব্যাপী হরতাল নিরুত্তাপভাবে পালিত হয়েছে।
গতকাল হরতালের সময়ে বিএনপি কার্যালয় থেকে শুরু করে নগরের বিভিন্ন জায়গায় সংগঠনের নেতাকর্মীদের তেমন উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। শুধুমাত্র নগরের দুই একটি জায়গায় খণ্ড খণ্ড মিছিল হয়েছে।
সড়কে ব্যক্তিগত যানবাহন (প্রাইভেট কার), সিএনজি অটোারিকশা, পাবলিক বাসের সংখ্যা ছিল নেহায়েতই কম। দূরপাল্লার কোনো গাড়ি চলাচল না করায় অলংকার ও একে খান মোড়ে অন্য জেলায় যাওয়া যাত্রীদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়।
গতকাল সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নগরের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে কেবল টেম্পো, লেগুনা ও রিকশা চলাচল করতে দেখা যায়। নগরের রাস্তায় পর্যাপ্ত বাস চলাচল না থাকায় কর্মজীবীদের ভিড় দেখা যায় নগরের বিভিন্ন মোড়ে।
অন্যদিকে পাহাড়তলী, নয়া বাজার বিশ্বরোড, প্রবর্তক মোড়, গোলপাহাড় মোড়, লালদীঘি মোড় ও শাহ আমানত সেতু (নতুন ব্রিজ) এলাকায় খণ্ড মিছিল করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। মিছিলগুলোতে ১৫ থেকে ২০ জন করে নেতাকর্মীর উপস্থিতি দেখা যায়। পুরানো রেলস্টেশন এলাকায় দুটি ককটেল বিস্ফোরণের কথা জানান স্থানীয় দোকানিরা। এছাড়া বিএনপির মহানগর কার্যালয় থেকে শুরু করে অন্য কোথাও দলটির নেতাকর্মীদের উপস্থিতি চোখে পড়েনি।
হরতাল নিয়ে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি নেতা ইদ্রিস আলী বলেন, ‘হরতালের জন্য আমাদের মিছিল বা পিকেটিং করতে হয়নি। মানুষ নিজে থেকে এ হরতালকে সমর্থন জানিয়েছে। সকলের এ সমর্থন সরকার পতনের এ এক দফা আন্দোলনকে আরো গতিশীল করেছে।’
অন্যদিকে দুপুরে অলংকার মোড় থেকে সাব্বির নামের এক যাত্রী বলেন, ‘খাতুনগঞ্জ থেকে যেখানে ২০-৩০ টাকায় অলংকার আসা যায়, সেখানে আমার চারশ’ টাকা লেগেছে। যেতে হবে সীতাকুণ্ডে। এখানেই আধঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি। একটা গাড়ি যেতে দেখেছি, কিন্তু যাত্রী এতো বেশি যে ঝুলে যাওয়ারও সুযোগ ছিলো না। আর কোনো গাড়ি চোখে পড়ছে না। এসব হরতাল যারা দেয়, তারা তো সাধারণ মানুষের কথা ভাবে না।’
গাড়ি চলাচল কম থাকার প্রসঙ্গে ডিটি রোডে সাইফুল নামে একজন চালক বলেন, ‘কালকে (শনিবার) ঢাকায় যে মারামারি হয়েছে, এখন কোন সাহসে গাড়ি নিয়ে বের হবে। কোম্পানিও (গাড়ির মালিক) গাড়ি বের করতে চায় না। একটা কিছু হলে তো হাজারের নিচে কোনো খরচ নাই। তাই এক হাজার টাকা ইনকামের জন্য কেউ গাড়ি ছাড়তে চাচ্ছে না।’
শ্যামলী পরিবহনের টিকেট বিক্রেতা উদয়ন আচার্য বলেন, ‘ঢাকার ঘটনার কারণে মানুষের মধ্য একটা আতঙ্ক রয়েছে। এ কারণে মানুষ দূরে কোথাও যাচ্ছে না। এরপরও কিছু মানুষ আসছে, যাদের ঢাকা বা অন্য জেলায় যাওয়াটা খুব দরকার। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে কোনো কোম্পানি গাড়ি বের করেনি।’
চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাজাহান বলেন, ‘নিউমার্কেট থেকে হাটহাজারীর গাড়িগুলো চলছে। অভ্যন্তরীণ রুটের গাড়িও চলছে, তবে কম।