রোকসানা বন্যা »
‘আমার পাড় ভাঙা এক নদী আমি নৌকা হতাম যদি ভাসতে ভাসতে যেতাম তোমার কাছে।
আমার পথের পাশে ধূলো আমার ঠিক নেই চাল-চুলো তুমি ফুল হয়ে যাও আমার দুঃখ গাছে।’
ঠিক এমনই হতাম যদি পারতাম নিঝুমদ্বীপের দুঃখগাছে ফুল হয়ে থাকতে! কিন্তু সেটা সম্ভব নয়। আমরা যারা শহুরে জীবনযাপন করে অভ্যস্ত তাদের জন্য বড্ড কঠিন এই যাপন। বলছিলাম বাংলাদেশের মূল ভূ-খণ্ড থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন একটি উপকূলীয় দ্বীপ হাতিয়া ও নিঝুমদ্বীপের কথা। চারদিকে অথৈ জলের রাশি আর উত্তাল তরঙ্গের মাঝে ভাসমান এ দ্বীপ।
অনেকদিনের ইচ্ছে কোনো একটা দ্বীপে ঘুরতে যাওয়ার। শেষে ঠিক হলো হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপে যাওয়ার। আমরা নয়জন বন্ধু দ্বীপ ভ্রমণের জন্য বের হলাম একদিন সকালে।
চেয়ারম্যান ঘাট। নোয়াখালির মূল ভূখণ্ডের প্রান্তসীমা। উত্তর থেকে দক্ষিণে ক্রমেই প্রশস্ত ও প্রমত্তা হয়ে আসা মেঘনা নোয়াখালিতে এসেই আছড়ে পড়ে বঙ্গোপসাগরে। এরপর দৃষ্টির শেষ সীমায় নদী আর সাগর একাকার হয়ে যায়। নোয়াখালি শহর থেকে চেয়ারম্যানঘাট আসতে প্রায় ঘণ্টা খানেকের পথ। কিছু সময় আমরা চা, সিঙ্গারা খেয়ে রওনা দিয়ে চেয়ারম্যান ঘাটে পৌঁছালাম। চেয়ারম্যানঘাট আসলে হাতিয়ারই অংশ। মাঝখানে প্রমত্ত মেঘনা নদী। তারই মাঝে হাতিয়া দ্বীপ বা মূল হাতিয়া উপজেলা। ঘাটে ভেড়ানোই ছিল স্পিড বোট। মালপত্র উঠিয়ে নিয়ে সবাই বসলাম। এতো বড় নদী পাড় হতে গিয়ে ভয়ে ভয়ে ছিলাম। মেঘনার মোহনায় শুধু কিছু সুন্দর মুহূর্ত কাটানোই নয়, ফেনিল সাগরের মাঝে কোনো দ্বীপে ভ্রমণ করা শরীর ও মন দুটোর জন্যই স্বাস্থ্যকর বটে। দ্বীপের সৈকতে এসে ঢেউয়ের শব্দ যে কোনো মনের অস্থিরতাকে শান্ত করতে সক্ষম।
হাতিয়ায় পৌঁছে আমাদের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন প্রশাসনের লোকজন। তাঁরা সকলেই সাদরে অর্ভ্যথনা জানালেন। তারপর গাড়ি করে হাতিয়ার ডাকবাংলোয় নির্ধারিত রুমে উঠলাম। ফ্রেস হয়ে দুপুরের রাজকীয় খাবার খেলাম তৃপ্তি নিয়ে। একটু বিশ্রামের পর গেলাম কমলাদীঘির ঘাটে। চমৎকার জায়গা। হাতিয়ার মানুষজনও খুব আপন করে নিলো আমাদের। তাদের আতিথেয়তা ভুলবার নয়। প্রচুর মানুষজনের সাথে গল্পে মেতে উঠলাম। তারপর গেলাম হাতিয়া শিল্পকলা একাডেমিতে। ওখানে আমাদের জন্য চমক অপেক্ষা করছিলো। শিশুশিল্পদের নাচে,গানে সত্যি মুগ্ধ আমরা। হাতিয়ার মতো একটা দ্বীপে এখনও সাংস্কৃতিক সংগঠন অনুষ্ঠান করছে , যা দেখে আমাদের সকলেই মুগ্ধ।
কথা প্রসঙ্গে ও তথ্যে জানা গেলো, আবহমানকাল থেকে এখানে মুসলমান এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের বসবাস। সংখ্যালঘু হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আলাদা কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এ দ্বীপে গড়ে উঠেনি। তবে সংখ্যাগুরু মুসলিম অধিবাসীদের ধর্মীয় শিক্ষার প্রয়োজনে এই দ্বীপে গড়ে উঠেছে বহু মাদরাসা-মক্তব।
এই দ্বীপে স্কুল ভিত্তিক আধুনিক শিক্ষা ও মাদরাসা ভিত্তিক ইসলামী শিক্ষার গোড়াপত্তন ঘটে ১৯১২ খৃস্টাব্দে। দ্বীপের প্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো হাতিয়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় এবং হরণী ইসলামিয়া জুনিয়ার মাদরাসা। হাতিয়ার মানুষ অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল হলেও শিক্ষার প্রতি অনুরাগী।
হাতিয়ায় ১টি সরকারি কলেজ, ৩টি বেসরকারি কলেজ, ১টি কামিল মাদরাসা, ১৬টি আলিম-ফাজিল মাদরাসা, ২৯টি উচ্চ বিদ্যালয়, ২১১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৬৫টি মাদরাসা। ৮৯টি মক্তব, ৪০টি নূরানী মাদরাসা আছে।
১৯১২ খ্রিস্টাব্দে এই দ্বীপে শিক্ষার যে ক্ষীণ প্রাতিষ্ঠানিক ধারার সূচনা হয়েছিল, তা আজ দ্বীপের সর্বত্র বিস্তৃতি লাভ করেছে। দ্বীপের হিন্দু-মুসলমান জনগোষ্ঠীর চলমান জীবন ধারার সাথে অবিচ্ছেদ্যভাবে সম্পৃক্ত। শিক্ষার ধারাটি বয়ে চলবে কাল থেকে কালান্তরে।
প্রমত্তা মেঘনা আর বঙ্গোপসাগরের বিশাল জলরাশির প্রচণ্ড দাপটের মুখে হাতিয়ায় প্রকৃতির ভাঙা-গড়ার কারণে এক থেকে দেড়শ’ বছরের পুরনো কোনো নিদর্শন অবশিষ্ট নেই।
এ কারণেই হয়ত কোনো গীতিকবি লিখেছিলেন, ‘মেঘনার কুলে ঘর বাঁধিলাম বড় আশা করে, সে ঘর আমার ভাইঙ্গা গেলো সর্বনাশা ঝড়ে’।
দীর্ঘদিন ধরে দেশি-বিদেশি অনেক গবেষক হাতিয়ার ওপর গবেষণা করেছেন। তাদের মধ্যে সুরেশ চন্দ্র দত্ত কিছু যুক্তি দিয়ে হাতিয়ার বয়স অনুসন্ধানের চেষ্টা করেছেন। দক্ষিণবঙ্গের ভূ-ভাগ সৃষ্টির রহস্য নিয়ে তাঁর গবেষণায় তিনি উল্লেখ করেছেন, প্রতি ১৩৬ থেকে ১৪০ বছর সময়ের মধ্যে এক মাইল স্থলভাগ সৃষ্টি হয় হাতিয়ায়। তার এ তথ্য আমলে নিয়ে হাতিয়ার বর্তমান আয়তনের সঙ্গে মিলিয়ে দেখলে হাতিয়ার বয়স সাড়ে ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার বছর বলে ধারণা করা হয়। বর্তমানে নোয়াখালী জেলার অন্তর্গত হাতিয়ার চৌহদ্দি নিরূপণ করলে দেখা যায়, হাতিয়ার উত্তরে সুধারাম, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে সন্দ্বীপ এবং পশ্চিমে মনপুরা ও তজুমদ্দিন উপজেলা। এক সময় সন্দ্বীপের সঙ্গে হাতিয়ার দূরত্ব ছিল খুবই কম। কিন্তু ধীরে ধীরে সেই দূরত্ব এখন ৬০ মাইল ছাড়িয়েছে। ক্রমাগত ভাঙনই এ দূরত্ব সৃষ্টি করেছে। হাতিয়ার ভাঙা-গড়ার খেলা চতুর্মুখী দোলায় দোদুল্যমান। উত্তর, পূর্ব ও পশ্চিম দিক দিয়ে ভাঙছে। আবার দক্ষিণে গড়ছে, পাশাপাশি আবার মূল ভূখণ্ডকে কেন্দ্র করে আশপাশে ছোট-বড় নানান ধরনের চর জেগে উঠছে। ওয়েব স্টার নামের একটি সংস্থার রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৮৯০ সাল থেকে হাতিয়ার আদি ভূখণ্ডের উত্তর ভাগের ভাঙন শুরু হয়। বিরাট আয়তনের জমি, নদী ও সাগরের ভাঙনে বিলুপ্ত হলেও একই সময় দ্বীপের উত্তর দিকে হাতিয়ার আয়তন ভাঙনের প্রায় ২ থেকে ৫ গুণ হারে বাড়তে শুরু করে। ১২০ বছরের ব্যবধানে হিসাব-নিকাশে ঢের পরিবর্তন এসেছে। অনেক চর মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, কিছু কিছু আবার ভাঙনের কবলে পড়ে হারিয়ে গেছে। প্রকৃতির অপরুপ সমাহার হাতিয়া উপজেলা। দেশের মূল্যবান সম্পদ স্বর্ণদ্বীপ, নিঝুমদ্বীপ ও ভাসানচর দেশের সীমানা পেরিয়ে আন্তর্জাতিকভাবেও পরিচিতি লাভ করেছে। এ তিনটি দ্বীপ-ই হাতিয়া উপজেলায় অবস্থিত।
দেশের প্রধান প্রধান নদীগুলোর পানি হাতিয়া চ্যানেল দিয়ে বঙ্গোপসাগরে যায়। হিমালয় থেকে উৎপত্তি নদীগুলোর পলিমাটি হাতিয়া চ্যানেলে এসে জমা হওয়ার কারণে প্রতি বছর প্রচুর ডুবো চরের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে হাতিয়া উপজেলার আয়তনও ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা দেশের জন্য সু-খবর বটে। হাতিয়া উপজেলার জনসংখ্যা সাত লক্ষাধিক। শিক্ষার হার ৭৮%। খাদ্যশস্য ও মৎস সম্পদে স্বনির্ভর হাতিয়াবাসী।
হাতিয়া দ্বীপের প্রাচীন স্বর্ণালী ইতিহাস বর্তমানে অনেকটাই ম্লান, নিভু নিভু। নদীর ভাঙন, ঘূর্ণিঝড়- জলোচ্ছ্বাস ইত্যাদি প্রকৃতির বৈরীসুলভ আচরণে আজ ক্ষত-বিক্ষত হাতিয়ার জনজীবন।বর্তমানে ‘হাতিয়ার দুঃখ’ নদীর ভাঙন।
বর্ষাকালে হাতিয়ার নদী থাকে অশান্ত আর উত্তাল ঢেউ। একটু বাতাস হলে পাহাড়সম ঢেউ আছড়ে পড়ে। তখন যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সঙ্গত কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় অভাব প্রকট হয়ে ওঠে। কালোবাজারি ও একশ্রেণির সুবিধাবাদী ব্যবসায়ী তখন দ্রব্যসামগ্রীর দাম দ্বিগুণ করে ফেলে। জানা যায় যাতায়াত সমস্যার কারণে বিনা চিকিৎসায় মারা যায় জটিল রোগী ও প্রসূতি মায়েরা। জানা যায় ষাটের দশকে হাতিয়াতে হেলিকপ্টার সার্ভিস ছিল। বেসরকারি পর্যায়ে আবার হেলিকপ্টার সার্ভিস চালু করলে তা অবশ্যই ভাল হবে। জরুরি ও জটিল রোগীদের জন্য তা আশীর্বাদ বয়ে আনবে।
পরের দিন হাতিয়া থেকে আমরা নিঝুম দ্বীপের জন্য বোটে চড়ে রওনা হলাম। ঘাটে নেমে বাহনে করে পথে যেতে যেতে এই দ্বীপের সৌন্দর্য উপভোগ করছিলাম। প্রচুর পাখি। একঝাক বক আমাদের অপেক্ষায় ছিলো যেন সম্ভাষণ জানানোর জন্য। গাড়ি ঐ পথে যেতে একসাথে সব উড়ে গিয়ে ডালে বসলো। মনে হলো ন্যাড়া ডালে সাদা রঙের প্রচুর ফুল ফুটেছে।
হাতিয়ার অভ্যন্তরীণ রাস্তাঘাটের উন্নতি হলেও নৌ-পথে নিঝুম দ্বীপের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই খারাপ। হাতিয়ার আর্থিকভাব স্বচ্ছল পরিবারগুলো এক সময়ের এই ‘স্বপ্নের দ্বীপ’ ছেড়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাড়ি জমিয়েছেন। ভাঙনই তার একমাত্র কারণ, অন্য কিছু নয়।
১৫০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের নিঝুমদ্বীপের দুই-তৃতীয়াংশ জুড়ে রয়েছে বন বিভাগের বাগান। সুন্দরী, কেওড়া, গেওয়া, গোলপাতা, কেশড়ী ইত্যাদি নানাবিধ বৃক্ষ ও গুল্মে সবুজ নিঝুমদ্বীপ। এই দ্বীপকে দেখে মনে হলো সুন্দরবনে আছি আমরা। সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এই নিঝুমদ্বীপেও আছে।
বন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সহযোগিতায় বৃক্ষ নিধন বন্ধ করা গেলে ও দ্বীপের আশপাশে জেগে ওঠা চরে বনায়ন করে এখানে অনায়াসে গড়ে তোলা যায় সুন্দরবনের মতো আরেক সবুজ প্রান্তর।
অপরূপ নৈসর্গিক শোভামণ্ডিত দ্বীপ হলো নিঝুম দ্বীপ। এ দ্বীপের মানুষ মৎস্যজীবি। কৃষিকাজ খুব কম।লবনাক্ত পানি ঢোকে বলে চাষাবাদের সুবিধা কম। এই দ্বীপে একটা গন্ধ আছে। যেখানেই যাই না কেন গন্ধটা পিছু ছাড়ছে না। মাছ যত্রতত্র শুকাতে দেয় বলে এমন উদ্ভট গন্ধ দ্বীপজুড়ে। এই দ্বীপে চোর,ডাকাত, ভিক্ষুক কিছুই নাই জানালেন দ্বীপের চেয়ারম্যান, প্রশাসন, আর দ্বীপবাসী। আমরাও তার প্রমাণ পেলাম। খেজুরের গাছ সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে। প্রচুর হাঁস, মাছ আর খেজুরের রসের জন্য বিখ্যাত নিঝুমদ্বীপ।
শুনেছিলাম নিঝুম দ্বীপ বাংলাদেশের একমাত্র দ্বীপ যে দ্বীপে মানুষের চেয়েও হরিণ বেশি। চোখ ফেরালেই দেখা মেলে এখানের মায়াবী হরিণের। তবে আমরা নিঝুমদ্বীপের জাতীয় উদ্যানে গিয়েও হরিণের দেখা পাইনি। বর্ষামৌসুমে হরিণ লোকালয়ে আসে। একটা হরিণ বেশ নাদুস-নুদুস তার দেখা পেলাম বাজারে। লোকালয়ে প্রতিদিন আসে সে। সবাই খাবার দেয়। ভাতও খায় সে। আবার চলে যায় জঙ্গলে। জানা গেলো ছোট থাকতে খুব অসুস্হ থাকাতে তার সেবা করে সুস্হ করেছিল এলাকাবাসী। সে মায়ায় এখনও তাদের দেখতে আসে।
দ্বীপের বনে, ফসলের মাঠে, রাস্তা-ঘাটের পাশাপাশি লোকালয়েও নাকি ঝাঁক বেঁধে ঘুরে বেড়াতো হরিণের পাল। সেসময়ে হরিণ রফতানি করা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছিল। কারণ হরিণের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে গিয়ে দ্বীপের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছিল। কী জানি সে কারণেই হয়তো হরিণ দেখতে পাইনি।
অন্যদিকে বিপুল পরিমাণ বৃক্ষ নিধন হওয়ার কারণে হরিণের খাদ্য চরম আকার ধারণ করেছে। লবণাক্ত পানির কারণে হরিণগুলোর দেখা দিয়েছে বিভিন্ন রোগব্যাধি। দ্বীপের মিঠা পানির একটা পুকুরের ব্যবস্থা থাকলেও সেখানে পানি না থাকায়, পানির সন্ধানে বনের হরিণগুলো প্রায়ই লোকালয়ে চলে আসতো।
এই দ্বীপে কোন হাসপাতাল নেই, নেই কোন চিকিৎসক। এই দ্বীপে আছে শুধু দুটো প্রাইমারী স্কুল। শিক্ষার হার একেবারেই কম। জানতে চাইলাম অসুস্হ হলে কি করেন তখন। একটা ডিসপেনসারি আছে ওখান থেকে ওষুধ নিয়ে আসেন তারা। বয়স্ক ও জটিল রোগী ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে যায়। নিঝুমদ্বীপে বিনোদনের কিছুই নাই। শীতে নানান রকম পরিযায়ী পাখি এই দ্বীপে বেড়াতে আসে। দ্বীপে পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থাও আছে। ছোট্ট বাজার, সেখানেই জটলা বেঁধে সুখদুখমাখা কথা হয় সকলের। বউঝিয়ের দেখা পাওয়া যায়নি দ্বীপের। অন্দরেই কাজেই তারা থাকে বেশি।
এতো অভাব অনটনেও দ্বীপবাসীর মুখে হাসি দেখে ভাবছি, যত কম দেখাশোনা, জানা থাকে ততই মানুষের চাহিদা কম থাকে। তাতেই সুখ।
একবছর হলো বিদ্যুতের সুবিধা পেয়েছে। প্রযুক্তির আছে তবে ব্যবহার কম। ভাঙাগড়ার খেলায় চলে তাদের যাপিতজীবন।
বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তির সুবিধা পেলে হাতিয়ার মানুষ, সর্বোপরি শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সামাজিক উন্নয়নে এ দ্বীপ অনেকদূর এগিয়ে যাবে। তখনই হয়তো এই গান থেমে যাবে।
‘বুকের ভেতর নোনা ব্যথা, চোখে আমার ঝরে কথা, এপার ওপার কোন পার একা’।