নিজস্ব প্রতিবেদক »
টানা বর্ষণে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে বিভিন্ন সড়কে জমে থাকা বৃষ্টির পানির কারণে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাসাবাড়ির পাশাপাশি যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
শনিবার সকাল থেকে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হলেও রোববার সকাল থেকে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়। যা সোমবার পর্যন্ত চলমান ছিলো। এদিন দুপুর থেকে বিভিন্ন এলাকায় পানি জমতে শুরু করে। কোথাও কোথাও হাঁটু পানি, কোথাও কোমরসমান পানিতে তলিয়ে যায় রাস্তাঘাট ও অলিগলি।
সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর নিচু এলাকা চকবাজারের কাঁচাবাজার, মুহাম্মদ শাহ আলী লেন, হাসমত মুন্সেফ লেন, কাপাসগোলা, বাকলিয়ার ডিসি সড়ক এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে পথচারীদের পাশাপাশি স্থানীয়রা পড়েছেন বিপাকে।
কাপাসগোলা এলাকার বাসিন্দা আবদুস ছোবহান সওদাগর বলেন, রোববার সকালের বৃষ্টিতে পানি ছিল যা দুপুর পর্যন্ত ছিল। এরপর সোমবার সকালে আবার পানি দেখা যায়। বৃষ্টি হলে নালাগুলো আটকে থাকায় পানি নেমে যাওয়ার সুযোগ থাকে না, যার ফলে পানি জমছে।
অন্যদিকে নগরীর আগ্রাবাদ সিডিএ, হালিশহর, হালিশহর বড়পুল, ছোটপুল, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, চাক্তাই,
আসাদগঞ্জ, পাঁচলাইশ, কালুরঘাট বিসিক শিল্প এলাকা, কাতালগঞ্জ, শুলকবহরসহ নিম্মাঞ্চলে হাঁটু পরিমাণ পানি জমেছিলো।
তাছাড়া টানা বর্ষণে স্থবির হয়ে পড়েছে দেশের অন্যতম ভোগ্যপণ্যের আড়ত খাতুনগঞ্জ। গত দুইদিন ধরে জোয়ারের পানিতে মধ্যম চাক্তাই, নতুন চাক্তাই, চর চাক্তাই, পুরাতন চাক্তাই, মকবুল সওদাগর রোড ও আসাদগঞ্জের প্রতিটি সড়ক ডুবে যায়। পাশাপাশি চান্দমিয়া গলি, ইলিয়াছ মার্কেট, বাদশা মার্কেট, সোনা মিয়া মার্কেট, নবী মার্কেট, মাল্লা মার্কেট, চাক্তাই মসজিদ গলি, ড্রামপট্টি, চালপট্টি ও এজাজ মার্কেটসহ বেশির ভাগ মার্কেটেই পানি ঢুকে পড়ে। তবে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ পর্যন্ত পানিতে তেমন ক্ষতির মুখে পড়েননি ব্যবসায়ীরা।
চাক্তাই এর চালপট্টির আড়তদার মো. রেজাউল বলেন, পানি প্রতিবছরই উঠে। যার কারণে অনেক ব্যবসায়ী আগাম প্রস্তুতি নিয়ে থাকে। এ কারণে মালামাল ক্ষতি থেকে রক্ষা পায়। তবে কয়েকটি আড়তে পানি ঢুকেছে। এতে ক্ষতির পরিমাণ আপাতত বলা যাচ্ছে না।
খাতুনগঞ্জের হামিদউল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিছ বলেন, গত দুদিন ধরে খাতুনগঞ্জের নিচু এলাকায় পানি উঠেছে। রাস্তায় জলাবদ্ধতার কারণে পথচারী ও ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগ বেড়েছে।
এদিকে ইপিজেড বন্দর-পতেঙ্গা থানাধীন বন্দরটিলা, সিমেন্ট ক্রসিং, নারিকেলতলা, রুবি সিমেন্ট গেইট, নুরগনিপাড়া, স্টিল মিল-(মহাজন) হিন্দুপাড়া, খালপাড়, বন্দরটিলার নয়াহাট, নিউমুরিং, সিমেন্ট ক্রসিং-আকমল আলী রোড এলাকাজুড়ে সড়কে পানি জমেছে হাঁটু পর্যন্ত।
সিমেন্ট ক্রসিং এলাকার বাসিন্দা মো. মাসুদুল আলম বলেন, একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়। এই দুইদিনের সামান্য বৃষ্টিতে মানুষ ভোগান্তিতে পড়ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ মেঘনাথ তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, সোমবার বিকাল তিনটা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৬৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। আরও কয়েকদিন বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সঙ্গে দমকা হাওয়াসহ ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৩ ও নদীবন্দরকে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।