নিজস্ব প্রতিবেদক »
এখনো শীত জেঁকে বসেনি। তবে তাপমাত্রা কমছে। আবহাওয়া কর্মকর্তারা জানান, ২০ নভেম্বর থেকে তাপমাত্রা আরও কমতে থাকবে। হচ্ছে ঋতু পরিবর্তন। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শিশুদের রোগ বালাই। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) ৬৪ টি শয্যার ওয়ার্ডে শিশু ভর্তি রয়েছেন ২৮০ জন। যাদের অর্ধেকের বেশি শিশু নিউমোনিয়া ও ব্রংকাইটিস রোগে আক্রান্ত।
সরেজমিনে দেখা যায়, চমেকের ৯ নম্বার শিশু ওয়ার্ড রোগীতে পরিপূর্ণ। দুই শয্যার মাঝখানে এক স্ট্যান্ডে ৬ থেকে ৭ টা স্যালাইন দিয়ে শিশুদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ১৪ নভেম্বর শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের রোগী পরিসংখ্যান অনুযায়ী নতুন ১২৫ জনসহ মোট ভর্তি রয়েছেন ২৮০ জন। অথচ এই ওয়ার্ডে শয্যার সংখ্যা মাত্র ৬৪টি। রোগীর চাপ বাড়ায় শয্যা সংকট দেখা দিয়েছে। এক শয্যায় তিন থেকে চার শিশুকে রেখেও চিকিৎসা দিতে লক্ষ্য করা যায়। কোনো শিশুর ডায়রিয়া, কোনটার শ্বাস কষ্ট, জ্বর, ডেঙ্গু ও পেট ব্যাথাসহ আরও অন্যান্য অসুখে শিশুদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ফটিকছড়ি থেকে ফারজানা এবং শরীফ দম্পতি তাদের ৬ মাসের কন্যা সন্তান ফায়জার চিকিৎসা সেবার জন্য এসেছেন চমেকে। গত ৬ দিন ধরে তারা সেখানে রয়েছেন। ফারজানা জানান, আমার সন্তানের শ্বাসকষ্ট হয়েছে। প্রথমে স্থানীয় ক্লিনিকে ভর্তি করায়। পরে এখানে আনা হয়। ডাক্তার বলেছেন নিউমোনিয়া হয়েছে। বর্তমানে খানিকটা ভালো আছে’।
দায়িত্বরত নার্সরা জানান, নিউমোনিয়া আর ব্রংকাইটিস শিশু রোগীর ভিড় বেড়েছে। শয্যা সংখ্যা আছে মাত্র ৬৪টি। সেই অনুপাতে রোগী ভর্তি থাকে ৩০০ কাছাকাছি। গতকাল তাও কম ছিলো। গতকাল এখানে কোনো রোগী ভর্তি হয়নি। মাঝে মধ্যে চিকিৎসা সরঞ্জামের সংকট দেখা দেয়।
চমেক হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. রেজাউল করিম বলেন, ‘ওয়ার্ডে নিউমোনিয়া ও ব্রংকাইটিস শিশু রোগী বেশি। প্রতিদিন ৯০ থেকে ১০০ শিশু ভর্তি হয়। যাদের মধ্যে ৬০-৭০ জন নিউমোনিয়া কিংবা ব্রংকাইটিস রোগে আক্রান্ত।
এই দুই রোগ প্রতিরোধে করণীয় হিসেবে তিনি বলেন, ‘৬ মাস পর্যন্ত শিশুদের মায়ের দুধ পর্যাপ্ত পরিমাণে খাওয়াতে হবে। তাহলে এমন রোগ কম হওয়ার সম্ভাবনা আছে। শিশুদের যথা সময়ে টিকা দিতে হবে। পর্যাপ্ত আলো বাতাসে শিশুদের ঘুমানোর জায়গা নির্ধারণ করতে হবে। স্যাঁসস্যাতে জায়গায় রাখা যাবে না। ঠাণ্ডা থেকে শিশুদের দূরে রাখতে হবে। আর জ্বর, সর্দি, কাশি হলেই সাথে সাথেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। দেরি বা অবহেলা করা যাবে না।
ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের সংকট রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এখানে শয্যা সংখ্যা ৬৪ জনের। ওষুধ ও সরঞ্জাম সেই অনুপাতে অনেক সময় থাকে না। তবে সব সময় বাড়িয়ে আনার চেষ্টা করি। এ কারণে মাঝে মাঝে একটু সংকট দেখা দেয়।’