সুপ্রভাত ডেস্ক»
১৩৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বেশ স্নায়ুক্ষয়ী অবস্থা সৃষ্টি করেছিলেন পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা। মূলতঃ নিউজিল্যান্ডের বোলারদের খুব নিয়ন্ত্রিত বোলিং পাকিস্তানকে রান করতেই দিচ্ছিল না। একই সঙ্গে নিয়মিত বিরতিতে উইকেটও পড়ছিল।
কিন্তু শেষ মুহূর্তে আসিফ আলির তিনটি ছক্কা খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেয়। একই সঙ্গে শোয়েব মালিকের দৃঢ়তা পাকিস্তানকে ৮ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেয়। নিউজিল্যান্ডকে ৫ উইকেটের ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়লো পাকিস্তান। ১৩৪ রানের পুঁজি নিয়েও দারুণ লড়াই করেছে নিউজিল্যান্ড। পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের বলই বের হতে দেয়নি কিউই ফিল্ডাররা। একটি বাউন্ডারির জন্য হাস-ফাঁস করতে দেখা গেছে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের। মোহাম্মদ হাফিজ মাঠে এসেই একটি ছক্কা উপহার দিয়েছিলেন। এরপর মিচেল সান্তনারের বলে আরও একটি ছক্কা মারতে গিয়ে সীমানার সামনে যেভাবে ডেভন কনওয়ের ক্যাচের শিকার হয়েছিলেন তা রীতিমত অবিশ্বাস্য। কনওয়ের এই ক্যাচটিই হয়তো টুর্নামেন্টের সেরা ক্যাচ, সেরা মোমেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি পেতে পারে। খবর জাগোনিউজ।
নিউজিল্যান্ড ফিল্ডারদের ফিল্ডিংয়ের একটা নমুনা এটা। এমন টাইট ফিল্ডিং গলে বাউন্ডারি বের করা ছিল কঠিন। আগের ম্যাচে অপরাজিত থাকা পাকিস্তানের দুই ওপেনার বাবর আজম আর মোহাম্মদ রিজওয়ান পারেননি। বাবর আজম ১১ বলে ৯ রান করে টিম সাউদির বলে বোল্ড হয়ে যান। মোহাম্মদ রিজওয়ানকে দেখা গেছে রানের জন্য আকুতি করতে। ৩৪টি বল খেলে একটিও ছক্কা বের করতে পারেননি। ৫টি বাউন্ডারি মেরেছিলেন। ৩৩ রান করে আউট হয়ে যান। ফাখর জামান একটি ছক্কা হাঁকিয়েই শেষ। ১৭ বল মোকাবেলা করে করলেন কেবল ১১ রান। হাফিজ ৬ বলে ফিরলেন ১১ রান করে। ইমাদ ওয়াসিম চালাকি করতে গিয়ে রিভার্স শট খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউর শিকার হন। ১২ বল খেলে করেন ১১ রান। এমন ক্লিনিক্যাল পজিশনে পাকিস্তানকে নিয়ে এসেছিল নিউজিল্যান্ড। টি-টোয়েন্টিতে বলের চেয়ে রান দরকার হয় বেশি। কিন্তু ব্যাটসম্যানরা সেটা পুষিয়ে নেন। অথচ, পাকিস্তানের বেলায় ঘটছিল উল্টোটা। বল আর রানের ব্যবধান যেন বাড়ছিলই। কিন্তু চিত্রটা পুরোপুরি পাল্টে দিলেন আসিফ আলি। এসেই বোল্টকে পাঠালেন বাউন্ডারির বাইরে। ১৭তম ওভারের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বলে টানা দুটি ছক্কা মারলেন। খেলার মোড় পুরোপুরি ঘুরে গেলো। যদিও ওই ওভারে আর কোনো রান নিতে পারেননি। কিন্তু আসিফের ছক্কা দেখে সাহস বাড়লো শোয়েব মালিকেরও। মিচেল সান্তনারকে একটি বাউন্ডারি, এরপর একটি ডাবলস এবং পরের বলেই ছক্কা মারলেন তিনিও। তিন বল থেকে উঠে গেলো ১২ রান। খেলা পুরোপুরি পাকিস্তানের হাতের মুঠোয়।
১৯তম ওভারে এসে ট্রেন্ট বোল্টের তৃতীয় বলটি সীমানার ওপারে পাঠিয়ে খেলা শেষ করে দেন আসিফ আলি। চতুর্থ বলে নিলেন ডাবলস। সঙ্গে সঙ্গে জয়ের উল্লাসে মেতে ওঠে পুরো গ্যালারি। কারণ শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের গ্যালারি যেন পুরোটাই দখলে ছিল পাকিস্তানি সমর্থকদের। ১২ বলে ২৭ রান করে অপরাজিত থাকলেন আসিফ আলি। ১ বাউন্ডারির সঙ্গে তিনি মারলেন ৩টি ছক্কা। ২০ বলে ২৬ রানে অপরাজিত থাকলেন শোয়েব মালিক। ২ বাউন্ডারির সঙ্গে ছক্কা মারলেন ১টি। নিউজিল্যান্ডের হয়ে ইশ সোধি নেন ২ উইকেট। ১টি করে নেন মিচেল সান্তনার, টিম সাউদি এবং ট্রেন্ট বোল্ট।