নতুন কিছু মানেই সিপিডিএল

অ্যাপার্টমেন্ট, স্টুডিও অফিস, সেকেন্ড হোমের পর এবার স্যাটেলাইট সিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক »

ফ্ল্যাট শুধু একটি ঘর নয়, বসবাসের সব উপকরণের সংযুক্তি মানেই ফ্ল্যাট। রিয়েল এস্টেট শিল্পে এই ধারার সাথে নগরবাসীকে পরিচয় করিয়ে দেয়া ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানটির নাম সিপিডিএল।

নগরীর মেহেদীবাগে সিপিডিএল ‘ক্রিমসন  ক্লোভার’ নামের একটি কনডোনিয়াম প্রকল্পে প্রতিটি ফ্ল্যাটের সর্বনিম্ন আয়তন ছিল দুই হাজার বর্গফুটের উপরে এবং সেটিতে নাগরিক সুযোগ সুবিধা অনেকটা যুক্ত করায় অনেকের কাছে এখনো তা ঈর্ষণীয় প্রকল্প। আর এরই ধারাবাহিকতায় আরো বড় পরিসওে নগরের দেবপাহাড় এলাকায় পাহাড় ও সমতলের সংমিশ্রণে নেওয়া হয়েছে ‘সিপিডিএল সুলতানা গার্ডেনিয়া’ নামের একটি প্রকল্প। চার টাওয়ারের সেই প্রকল্পে রয়েছে ১৬ সাইজের ১৫৫টি ফ্ল্যাট।

আবাসন শিল্পে নতুন ধারার প্রকল্পের সাথে নগরবাসীকে পরিচয় করিয়ে দেয়া সিপিডিএল ২০০৪ সালে এই ব্যবসায় যুক্ত হওয়ার পর বদলে দিয়েছে পুরো জামালখান এলাকাকে। জামালখান এলাকায় সবচেয়ে বেশি প্রকল্প নেয়া এই প্রতিষ্ঠানটি এই এলাকার আউটলুক বদলে দিয়েছে। একইভাবে দেবপাহাড়ে সুলতানা গার্ডেনিয়া প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে সেই এলাকার আউটলুকে পরিবর্তন এনেছে প্রতিষ্ঠানটি। এর আগে দক্ষিণ খুলশি এক নম্বর রোডে  ‘বেলা দিস্তা’ প্রকল্পের জন্য পুরো একটি রোড নিজ খরচে করে দিয়েছে সিপিডিএল। অর্থাৎ শুধু ফ্ল্যাট তৈরি এবং তা হস্তান্তর নয় পুরো এলাকা পরিবর্তনে কাজ করে।

এ বিষয়ে সিপিডিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী ইফতেখার হোসেন বলেন, ‘আমরা শুধু একটি ফ্ল্যাট নয়। এই ফ্ল্যাটে বসবাসকারী প্রতিটি বয়স গ্রুপের নাগরিকদের বিষয়টি চিন্তা করে বিভিন্ন ফিচার যুক্ত করে থাকি। যেমন শিশুদের জন্য কিডস জোন, বয়স্কদের জন্য বই পড়া কিংবা গল্প করার স্থান, জিম সুবিধা, ইয়োগা, হাঁটার জন্য ওয়াকওয়ে সব ফ্যাসিলিটি যুক্ত করা হয়ে আমাদের প্রকল্পে। একইসাথে যে এলাকায় প্রকল্পটি নেয়া হয় সেই এলাকাটিকে দৃষ্টিনন্দন করতেও প্রকল্প নেয়া হয়। জামালখান, দেবপাহাড় ও খুলশিতে যেমনভাবে করা হয়েছে তেমনিভাবে অন্যান্য সব প্রকল্পে করা হচ্ছে।’

অফিস অ্যাপার্টমেন্টে সিপিডিএল

বিভিন্ন ডেভেলপার কোম্পানি যেখানে ফ্ল্যাট বা বাণিজ্যিক স্পেস বিক্রিতে ব্যস্ত সিপিডিএল সেখানে রেডি অফিস অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রি করছে। নগরীর জাকির হোসেন রোডে খুলশিতে রহিমস প্লাজায় স্টুডিও অফিস চালু করেছে সিপিডিএল। নতুন এই ধারণা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিপিডিএলের চিফ বিজনেস অফিসার জিয়াউল হক খান বলেন, বর্তমান সময়ে একটি অফিস কম্পাউন্ডের কনফারেন্স রুমসহ অন্যান্য অনেক রুম অপ্রয়োজনীয় অবস্থায় পড়ে থাকে। তাই আমরা একটি অফিস কনফারেন্স রুমকে কেন্দ্র করে একাধিক স্টুডিও অফিস করেছি। এতে শিডিউলের ভিত্তিতে কনফারেন্স রুম ব্যবহার করা যায়। আবার একটি ফ্রন্ট ডেস্ক রেখে একাধিক অফিস পরিচালনা করা সম্ভব। আর্থিকভাবেও তা সাশ্রয়ী।’

এদিকে জাকির হোসেন রোডে নতুন ধারার এই অফিস কনসেপ্ট নগরীর আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকা, জিইসি এলাকাসহ অন্যান্য এলাকায় বড় আকারে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে সিপিডিএল।

সিপিডিএলের সেকেন্ড হোম কনসেপ্ট

আবাসিক ফ্ল্যাটের পাশাপাশি সিপিডিএল সেকেন্ড হোম কনসেপ্টও চালু করেছে নগরীতে। নগরীর ফয়’স লেকে স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্টের আদলে চালু করেছে সেকেন্ড হোম। এতে বিনিয়োগকারীরা একটি স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্ট কিনে পাঁচ তারকা হোটেলের সুবিধা নিয়ে থাকতে পারবে। ব্যবসায়িক কাজে চট্টগ্রামে এলে এখানে থাকার সুবিধা পাবে। একইসাথে কেউ বিজনেস উদ্দেশ্যে কিনলে মাসিক ভাড়াও পাবে। মূলত মিরসরাই ইকোনমিক জোন, বে টার্মিনাল, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরসহ নানাবিধ উন্নয়ন প্রকল্প আগামীতে চালু হতে যাচ্ছে। এসব প্রকল্পে অনেক বিদেশি এবং কর্পোরেট বিজনেসের প্রতিনিধিরা চট্টগ্রামে আসবে। মূলত তাদেরকে হোমলি পরিবেশে আবাসন সুবিধা দিতে সিপিডিএল নতুন ধারার এই সেকেন্ড হোম স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্ট চালু করেছে।

স্যাটেলাইট সিটির সাথেও সিপিডিএল

চট্টগ্রামের ডেভেলপারগুলো দীর্ঘদিন ধরে স্যাটেলাইট সিটির কথা বলে আসছে। সরকারের পক্ষ থেকে লজিস্টিক সাপোর্ট ও পলিসিগত সীমাবদ্ধতার কারণে কেন্দ্রীয়ভাবে স্যাটেলাইট সিটি গড়ে উঠছে না। কিন্তু তাই বলে কি উন্নয়ন থমকে যাবে? সিপিডিএল আনোয়ারায় গড়ে তুলছে স্যাটেলাইট সিটি ‘অনিন্দ্য নগর’।

এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী ইফতেখার হোসেন বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলীর তলদেশে টানেলের মাধ্যমে সহজেই আনোয়ারার সাথে যুক্ত হবে চট্টগ্রাম নগর। নদীর ওপারের আনোয়ারায় ভূমির মূল্য সাশ্রয়ী হওয়ায় স্যাটেলাইট সিটি গড়ে তোলা  গেলে গ্রাহকরা সাশ্রয়ী মূল্যে ফ্ল্যাট পাবে।

স্যাটেলাইট সিটি হিসেবে আনোয়ারা উপযুক্ত স্থান উল্লেখ করে সিপিডিএলের চিফ বিজনেস অফিসার জিয়াউল হক খান বলেন, আনোয়ারায় রয়েছে পারকি সমুদ্র সৈকত। আমরা যদি সৈকত উন্নয়নের মাধ্যমে কক্সবাজার ফ্লেভার পারকিতে দিতে পারি এবং নাগরিক সুযোগ সুবিধা বাড়াতে পারি তাহলে স্যাটেলাইট সিটি হিসেবে অবশ্যই আনোয়ারার সম্ভাবনা উজ্জ¦ল। এছাড়া নদীর এপারে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং টানেলের মাধ্যমে আনোয়ারার সাথে সংযুক্তি থাকায় বিদেশি পর্যটককে আকৃষ্ট করা যাবে।

সর্বোপরি আবাসন শুধু আবাসন নয় তা সিপিডিএল দেখিয়ে দিচ্ছে। শুধু ফ্ল্যাট তৈরি নয়, মানুষের জীবন মান উন্নয়ন এবং একটি নগরীকে আপগ্রেডেশন করতে কাজ করছে। একইসাথে নতুন শহর গড়ে তুলতেও এগিয়ে আসছে সিপিডিএল।